অবশেষে গোলের খাতায় ব্রাজিল–আর্জেন্টিনার পাশে বাংলাদেশ

বারিধারার জালে গোলের পর বসুন্ধরার ইব্রাহিমছবি: প্রথম আলো

ফেডারেশন কাপে ৫ ম্যাচ খেলে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের মোট গোল ১০টি। আত্মঘাতী একটি গোল বাদ দিলে ৯টি গোলই করেছিলেন বিদেশি তিন খেলোয়াড়।

স্পষ্ট করে বললে আর্জেন্টিনার রাউল বেসেরা পাঁচটি ও দুটি করে গোল ব্রাজিলের রবসন রবিনহো ও জোনাথন ফার্নান্দেজের। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে যায়, করোনায় বসুন্ধরার স্থানীয় ফুটবলাররা কি গোল করতে ভুলে গিয়েছেন?

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ গোল করে সেই প্রশ্নের সমাধান দিয়েছেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম। বাংলাদেশি উইঙ্গারের গোল পাওয়ার ম্যাচে উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ২–০ গোলের জয়ে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছে বসুন্ধরা। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের অন্য গোলটি আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার রাউল বেসেরার।

ফেডারেশন কাপ ও লিগ মিলিয়ে এই মৌসুমে মোট ছয়টি ম্যাচ খেলেছে বসুন্ধরা। প্রতিটি ম্যাচেই একটি করে গোল করেছেন বেসেরা। তবে বসুন্ধরার জন্য স্বস্তির বিষয় হলো দেশি ফুটবলারদের গোলের রাস্তাটা চেনা।

এতে নতুন মৌসুমে গোলের খাতায় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলাদেশের নামটাও যে উঠল।

ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আজ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামে বসুন্ধরা। ফাইনালের একাদশ থেকে কেবল মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া ও উইঙ্গার মতিন মিয়াকে বিশ্রামে রেখেছিলেন কোচ অস্কার ব্রুজোন।

মাসুকের জায়গার আলমগীর কবির ও মতিনের জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়েছেন মাহবুবুর রহমান।

বসুন্ধরাকে ঠেকাতে পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে ৫–৩–২ ফরমেশনে দল সাজিয়েছিলেন বারিধারা কোচ শেখ জাহিদুর রহমান। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, গোলমুখে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা। পাঁচ ডিফেন্ডার জমাট থাকায় বসুন্ধরার জন্য গোলমুখ খোলাও কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল।

বসুন্ধরার হয়ে অন্য গোলটি আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার রাউল বেসেরার।
ছবি: প্রথম আলো

মাঠের মাঝের অংশে জটলা থাকায় উইং দিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করে বসুন্ধরা। কিন্তু বারিধারার তিন সেন্টারব্যাক মিসরের মাহমুদ মোহাম্মদ আবদেল রহিম, উজবেকিস্তানের সাইদোস্তন ফজিলভ ও স্থানীয় আমিনুল ইসলাম মিলন লম্বা হওয়ায় বাতাসেও ভুগেছেন বেসেরা–রবসনরা।

বসুন্ধরা ও বারিধারা দুটি ঢাকার অভিজাত এলাকার নাম হলেও মাঠের ফুটবলের লড়াইয়ে বসুন্ধরার ধারেকাছেও নেই বারিধারা। স্থানীয় ও বিদেশি খেলোয়াড়ে সমৃদ্ধ বসুন্ধরাকে ৩৪ মিনিট পর্যন্ত আটকে রাখা গিয়েছে এটিই বরং হতে পারে তাদের প্রাপ্তি।

৩৫ মিনিটে প্রথম গোল পায় বসুন্ধরা। যদিও গোলটিতে বারিধারার সেন্টারব্যাক ফজিলভের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। ডান প্রান্ত থেকে আসা বিশ্বনাথের ক্রস ফজিলভ হেডে ক্লিয়ার করতে গেলে গোলমুখে পড়ে। ফিরতি বলে হেড করে জালে জড়াতে কোনো ভুলই করেননি বেসেরা।

গোলের খাতাটা বেসেরা খুলতে পারতেন ১৭ মিনিটেই। বিশ্বনাথের ক্রসে বক্সের মধ্যে থেকে বেসেরা হেড করলে ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটে ইব্রাহিমকে দিয়ে করিয়েছেন দ্বিতীয় গোলটি। বক্সের মধ্যে ইব্রাহিমকে রক্ষণচেরা পাস দিয়েছিলেন বেসেরা। বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে আসার সময় গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে জালে জড়িয়েছেন ইব্রাহিম।

পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে দল সাজিয়েও বসুন্ধরার আক্রমণ ঠেকাতে পারেনি উত্তর বারিধারা
ছবি: প্রথম আলো

নতুন মৌসুমে এটিই বসুন্ধরার স্থানীয় খেলোয়াড়দের প্রথম গোল। ব্রুজোন পাঁচ বদলি খেলোয়াড় নামিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে আরও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু বারিধারা বেশি গোল হজম না করার নীতি চালিয়ে যাওয়ায় ব্যবধান বাড়ানো যায়নি।

গত মৌসুমে বাতিল হওয়া প্রিমিয়ার লিগে এই বারিধারাকেই ১–০ গোলে হারিয়েছিল বসুন্ধরা। এবার ব্যবধানটা বড় হলো। তাতেই বা কম কী!