অবসর প্রসঙ্গে রোনালদোর পাল্টা প্রশ্ন, ‘কেন?’

ইউনাইটেডে দারুণ ফর্মে আছেন রোনালদোফাইল ছবি: রয়টার্স

ফুটবলের সব রেকর্ড যেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর মেসি নিজেদের দখলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। যত অবিশ্বাস্য রেকর্ড আছে, তার প্রায় সব কটি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দুজন। এর মধ্যে রোনালদোর একটি রেকর্ড একটু আলাদা করছে তাঁকে। কোনো ফুটবলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ও সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড গড়েছেন রোনালদো।


আলী দাইয়িকে সরিয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড গড়েছেন। দেশের হয়েছে জিতেছেন দুটি শিরোপা। ২০১৬ ইউরোর পর ২০১৯ নেশনস লিগ জিতেছেন রোনালদো। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে তাঁর অতৃপ্তি থাকার কথা নয়।

পর্তুগালের অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
ছবি: রয়টার্স

৩৬ বছর পেরিয়ে গেছেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলের চাপ থেকে সরিয়ে নিলে ক্লাব ক্যারিয়ার আরও দীর্ঘ করা সম্ভব। রোনালদোকে তাই আন্তর্জাতিক ফুটবলে অবসর নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এমন প্রশ্নে উল্টো বিস্মিত হয়েছেন রোনালদো।


পর্তুগালের হয়ে ১৮২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলেছেন রোনালদো। এই ম্যাচগুলোতে তাঁর গোল ১১৫টি। ইরানের আলী দাইয়িকে (১০৯) পেছনে ফেলেছেন বছরের মাঝপথেই। রেকর্ডের সঙ্গে যাঁর নিত্যবসবাস, তাঁর জন্য এটা নতুন কিছু নয়। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে ৫৯১ ম্যাচে ৪৭৯ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা তো রোনালদোই। সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি তাঁর। ১৭৯ ম্যাচে ১৩৭ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতাও রোনালদোই।

রোনালদোর মাথায় অবসরের চিন্তা নেই
ছবি: রয়টার্স

আগামীকাল লিভারপুলের সঙ্গে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। এ ম্যাচের আগে স্কাই স্পোর্টসের কাছে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হচ্ছে আজ। সে সাক্ষাৎকারেই ক্লাব ক্যারিয়ার লম্বা করার প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের চিন্তা করছেন কি না, সেটা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল।

এ প্রশ্নের জবাবে রোনালদো বলেছেন, ‘কিন্তু কেন? আমার মনে হয় না আমার সময় এখনো এসেছে।’

রোনালদো করেছেন আরেকটি রেকর্ড
ছবি : রয়টার্স

অবসরের চিন্তা যে তাঁর মাথাতেই নেই, সেটা বোঝা গেছে পরের কথায়, ‘মানুষ কী চাইছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমি কী চাই সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমার মনে হবে আমি দৌড়াতে পারছি না, ড্রিবল করতে পারি না, শট নিতে পারব না, যদি এই শক্তি চলে যায়...কিন্তু আমার তো এখনো এ ক্ষমতাগুলো আছে। তাই আমি চালিয়ে যেতে চাই। আমি এখনো অনুপ্রাণিত।’


বয়স ৩৬ পেরিয়ে গেছে। অনেক ফুটবলারই, বিশেষ করে ফরোয়ার্ডরা এই বয়সে অবসরে চলে যান। যাঁরা টিকে থাকেন, তাঁরাও ক্যারিয়ার লম্বা করার জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে সরে যান। কিন্তু রোনালদোর মাথায় সে চিন্তা আসে না। কারণ, তাঁর খেলা এখনো মানুষকে আনন্দ দেয়।

আর এটাই তাঁকে আরও দীর্ঘদিন খেলতে আগ্রহী করে তোলে, ‘এটাই (অনুপ্রেরণা) মূল শব্দ, যা আমাকে শক্তি দেয়। আমার দক্ষতা দেখানোর জন্য, মানুষকে খুশি কররা জন্য, পরিবার, ভক্ত ও নিজেকে সুখী করার অনুপ্রেরণা। আমি নিজেকে আরও উঁচু মানে নিতে চাই। আপনি (সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী) শুধু পর্তুগাল নিয়ে বলছেন, কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগেও আমার সবচেয়ে বেশি গোল, সবচেয়ে বেশি জয়, গোল বানিয়ে দেওয়া—সবকিছু। কিন্তু আমি চালিয়ে যেতে চাই। আমি ফুটবল খেলতে চাই। মানুষকে খুশি করতে পারলে আমার ভালো লাগে।’