আগুয়েরোরা এখন ফুটবলকেই ভয় পাচ্ছেন

ম্যানচেস্টার সিটির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো। ফাইল ছবি
ম্যানচেস্টার সিটির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো। ফাইল ছবি
>সার্জিও আগুয়েরো জানালেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বেশিরভাগ লিগ ফেরার খবরে 'ভয়' পাচ্ছেন

আগামী ৮ জুনকে পাখির চোখ করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ। করোনায় গত মার্চে স্থগিত হয়ে যাওয়া লিগকে ওই দিনই মাঠে ফেরাতে চাচ্ছেন তাঁরা। এ নিয়ে আজ শুক্রবার বিকেল বৈঠকে বসার কথা ক্লাবগুলোর। সেই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়ে কে জানে! লিগ যদি ৮ জুন শুরু করতে হয়ে তবে খেলোয়াড়দের পূর্ণ অনুশীলনে ফিরতে হবে ১৮ মের মধ্যেই।

তবে ম্যানচেস্টার সিটির স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই নাকি এত তাড়াতাড়ি মাঠে ফিরতে চান না। করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কই যে কাটিয়ে উঠতে পারছেন না ফুটবলাররা।

৩১ বছর বয়সী তারকা কথা বলেছেন আর্জেন্টিনার এল চিরিনগুইতো টেলিভিশনের সঙ্গে। সেখানেই আর্জেন্টাইন তারকা জানিয়ে দিলেন কতটা আতঙ্কে আছেন খেলোয়াড়েরা, 'বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই ভয় পাচ্ছেন কারণ সবারই তো বাচ্চা ও পরিবার আছে। আমিও আতঙ্কিত। তবে আমি এখন আমার বান্ধবীর সঙ্গে আছি। আমি অন্য মানুষের সঙ্গে মিশছি না। আমি ঘরে বন্দী। আমি এখন যদি কাউকে (করোনা) সংক্রমিত করি তা শুধু বান্ধবীকেই করতে পারি।'

অনেকের শরীরে যে কোনো উপসর্গ ছাড়াই নীরবেই বসে আছে করোনাভাইরাস সেটিই ভাবাচ্ছে আগুয়েরোকে, 'বলা হচ্ছে আক্রান্ত অনেকের শরীরেই কোনো উপসর্গ নেই, তবে তাঁরা অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে। এ কারণেই আমি বাসায়। এমনও তো হতে পারে আমার রোগটা আছে কিন্তু আমি জানি না।'

১৩ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে এ মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। লিগের ম্যাচ বাকি আরও ৯২টি। ওই ম্যাচগুলো দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে আয়োজনের চিন্তাভাবনা লিগ কর্তৃপক্ষের। তবু নির্ভার হতে পারছেন না আগুয়েরো, 'যখন কোনো একজন অসুস্থ হবে তখন আমরা সবাই ভাবব 'কী হচ্ছে, কী হবে।'''

তবে অন্য সবার মতো আগুয়েরোও ভাবছেন খুব তাড়াতাড়িই হয়তো প্রতিষেধক আবিস্কার হয়ে যাবে করোনার, 'আশা করছি খুব শীগগিরই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। আর তখনই এই দুঃসময়ের অবসান হবে।'

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে লকডাউন পুরোপুরি উঠে যাওয়ার আগে অনুশীলন শুরু হলে প্রতি সপ্তাহে দুবার খেলোয়াড়দের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হবে। এ ছাড়া প্রতিদিনই উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করা হবে। আর সব পরীক্ষাই করবেন প্রশিক্ষিত ও পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রত্যেক ক্লাবেই সব ধরণের পরীক্ষার সুযোগও থাকবে।

খেলোয়াড়দের অনুশীলনে আসতে হবে অনুশীলনের পোশাক পরে। সবসময় মাস্ক পরেও থাকতে হবে তাঁদের। অনুশীলন মাঠে খেতেও পারবেন না ফুটবলাররা। ক্লাব খেলোয়াড়দের গাড়িতে খাবার পৌঁছে দেবে। খুব জরুরী কিছু না হলে মাঠে চিকিৎসা দেওয়া হবে না, আর যদি দরকার হয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই পরতে হবে।

তবে সবসময় মাস্ক পরার নির্দেশনাকে হাস্যকর বলেছেন ব্রাইটনের স্ট্রাইকার গ্লেন মারে, 'ফেস মাস্ক অস্বস্তিকর, এটা তো স্বাভাবিক নয়। ম্যাচের সময় মানুষ এটাকে খুলে ফেলবে। ছিড়েও যেতে পারবে। এটা সত্যিই হাস্যকর। আমি বুঝি কেন সবাই ফুটবলের জন্য পাগল হয়ে গেছে। ঠিক সময়ে যৌক্তিক উপায়ে এটাকে ফেরানো যায়। তবে সেটি করতে হবে সবাইকে নিরাপদে রেখে তবেই।'

মারে চিন্তিত এই সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ওপর না বেশি চাপ দিয়ে ফেলে ফুটবল, 'অনুশীলনেও ম্যাচের সময়ে মাঠে তো অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। এখন কী স্বাস্থ্য বিভাগের কাছ থেকে ওগুলো নেওয়া ঠিক হবে? এটা তো শুধু দুটি দলের ব্যাপার নয়, আরও কত মানুষ এর সঙ্গে জড়িয়ে। কত মানুষ ঝুঁকিতে পড়বে।'

আর্সেনাল, ব্রাইটন ও ওয়েস্ট হাম এরইমধ্যে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত অনুশীলনের জন্য ট্রেনিং গ্রাউন্ড খুলে দিয়েছে।