জোড়াতালি দেওয়া দল নিয়েই আতলেতিকোকে ছুঁয়ে ফেলছে রিয়াল

দ্বিতীয়ার্ধে এসেছে মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই গোল।ছবি: এএফপি

সের্হিও রামোস নেই। নেই করিম বেনজেমা। এডেন হ্যাজার্ড তো বহুদিন ধরেই মাঠের বাইরে। নেই দানি কারভাহালও। মূল একাদশে কাকে নামান যায়, সেই খোঁজে জিদান চোখ রেখেছিলেন নিজেদের একাডেমিতে। স্কোয়াডে ডেকেছিলেন একগাদা তরুণ। দুদিন পর আতালান্তার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট রাউন্ডের ম্যাচ। সে ব্যাপারটাও মাথায় ছিল জিদানের। সব মিলিয়ে জিদানের জোড়াতালি দেওয়া দল হতাশ করেনি রিয়াল–সমর্থকদের। রিয়াল ভায়াদোলিদকে ১-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে এনেছে ‘লস ব্লাঙ্কোস’রা। গোল করেছেন ব্রাজিলের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরো।

অবশ্য ব্যবধান কমানোর পেছনে আতলেতিকোরও ‘অবদান’ আছে বৈকি! হোর্হে দে ফ্রুতোসের গোল আর স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মারিও হার্মোসোর আত্মঘাতী গোল মিলিয়ে লেভান্তের কাছে ২-০ গোলে হুট করে হেরে বসেছে আতলেতিকো। ফলে ভায়াদোলিদকে হারিয়ে আতলেতিকোর ৩ পয়েন্ট দূরত্বে চলে এসেছে রিয়াল; যদিও এক ম্যাচ বেশি খেলেছেন রামোস-বেনজেমারা। কিছুদিন পরেই আতলেতিকোর বিপক্ষে লিগে ডার্বি খেলতে নামবে রিয়াল। সে ম্যাচে যদি কোনোভাবে জিতে যায় তারা, এ ব্যবধানও ঘুচে যাবে।

দল সাজানোর মতো খেলোয়াড়ই পাচ্ছেন না জিদান।
ছবি: এএফপি

তবে শুধু কাসেমিরোই নন, রিয়ালকে এই জয় এনে দেওয়ার ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছেন দলের বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াও। ভায়াদোলিদের মাঠ এস্তাদিও হোসে জোরিলায় বেশ কিছু দুর্দান্ত সেভ করেছেন, গোলবঞ্চিত করেছেন ফাবিয়ান ওরেয়ানা ও সাইদি ইয়াঙ্কোকে। ইয়াঙ্কোর সেভটাকে তো অনায়াসে মৌসুমের অন্যতম সেরা সেভ বলে চালিয়ে দেওয়া যায়।

বেনজেমা ছিলেন না, তাঁর জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বিকল্প স্ট্রাইকার মারিয়ানো দিয়াজকে। বেঞ্চে ছিলেন একাডেমির স্ট্রাইকার হুগো দুরো। মারিয়ানো বাজে খেলেছেন, বলা যাবে না। গোল করার অন্তত দুটি দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিলেন এই তারকা। কিন্তু অফসাইডের খাঁড়ায় পড়ে বাতিল হয়ে যায় সে দুই গোল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে লেফটব্যাক ফারলাঁ মেন্দির ভুলে আরেকটু হলে গোল খেতে বসেছিল রিয়াল। থিবো কোর্তোয়ার দৃঢ়তায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় লস ব্লাঙ্কোসরা।

আরও একবার দলের ত্রাতার ভূমিকায় কাসেমিরো।
ছবি: এএফপি

গুনে গুনে তিনবার হেড করে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন কাসেমিরো। দুবার ব্যর্থ হলেও তৃতীয়বার আর লক্ষ্যভ্রষ্ট হননি। টনি ক্রুসের ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন কাসেমিরো। রামোস ছিলেন না, রামোসহীন রিয়ালের নেতৃত্ব নিয়েছেন আরেক সেন্টারব্যাক রাফায়েল ভারান। কিন্তু তা সত্ত্বেও খেলা দেখে মনে হয়েছে, মাঠের নেতা ভারান নয়, কাসেমিরো। হুগো দুরো, সান্তিয়াগো আরিবাসের মতো তরুণদের আগলে রেখে দলের জন্য পূর্ণ ৩ পয়েন্টই নিয়ে এসেছেন এই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার।

এ জয়ের মাধ্যমে ২৪ ম্যাচে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা আতলেতিকোর ঠিক পেছনেই আছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ওদিকে ২৩ ম্যাচে ডিয়েগো সিমিওনের দল জোগাড় করেছে ৫৫ পয়েন্ট। ২২ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে রিয়ালের ঠিক পিছেই আছে বার্সেলোনা। আজ নিজেদের মাঠে কাদিজের বিপক্ষে খেলতে নামবে বার্সা।