আবার মুখোমুখি, আবার রোমাঞ্চ?

আরও একবার মুখোমুখি হচ্ছেন রোনালদো-ইব্রা। ছবিতে দুজনের মুখেই হাসি থাকলেও প্যারিসের ম্যাচে আজ শেষ হাসিটা থাকবে কার মুখে, এখন সেটা দেখার অপেক্ষাতেই সবাই l ফাইল ছবি
আরও একবার মুখোমুখি হচ্ছেন রোনালদো-ইব্রা। ছবিতে দুজনের মুখেই হাসি থাকলেও প্যারিসের ম্যাচে আজ শেষ হাসিটা থাকবে কার মুখে, এখন সেটা দেখার অপেক্ষাতেই সবাই l ফাইল ছবি

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো হয়তো কোনো দিন ভুলবেন না। ইব্রাহিমোভিচের পক্ষেও কি ভোলা সম্ভব?
১৯ নভেম্বর ২০১৩। সোলনার ফ্রেন্ডস অ্যারেনা। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ইউরোপীয় অঞ্চলের প্লে অফের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি পর্তুগাল-সুইডেন। কিন্তু দলগত খেলা ছাপিয়ে সেদিন ম্যাচটা যেন হয়ে উঠেছিল দুই মহাতারকার লড়াই। রোনালদো বনাম ইব্রা!
লিসবনে আগের লেগটা পর্তুগাল জিতেছিল রোনালদোর একমাত্র গোলে। বিশ্বকাপের টিকিট পেতে হলে ফিরতি লেগে সুইডেনকে জিততেই হতো। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন রোনালদো। বেশ জমে উঠল রোনালদো-ইব্রার লড়াই। এদিকে পর্তুগিজ অধিনায়ক গোল করেন, ওদিকে পাল্টা গোল করে সেটার জবাব দেন সুইডিশ অধিনায়ক। গোল-পাল্টা গোলের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত হার ইব্রারই। ৩-২ গোলের জয় নিয়ে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিল পর্তুগাল। পাঁচটি গোলই করেছিলেন রোনালদো আর ইব্রা।
দুই প্রবল প্রতিপক্ষ আরও একবার মুখোমুখি। এবার দেশ নয়, ক্লাবের জার্সি গায়ে। ‘জীবন-মরণ’ ব্যাপারও ঠিক নেই। চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। তবু প্যারিসের পার দে প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে আজ রিয়াল-পিএসজির লড়াইটা ক্লাব ছাপিয়ে যেন হয়ে উঠেছে সমকালীন দুই মহাতারকার লড়াই।
সেই লড়াই এবার বাড়তি মাত্রা পেয়েছে সাম্প্রতিক কালে নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে রোনালদো ও ইব্রার অর্জনের মাহাত্ম্যে। রাউলকে পেরিয়ে কদিন আগে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন রোনালদো (৩১০ ম্যাচে ৩২৫ গোল)। ১৩৭ ম্যাচে ১১০ গোল নিয়ে ইব্রাও এখন পিএসজির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা। কোনো সন্দেহ নেই, আজ দারুণ কিছু করে সেই আনন্দটা আরও প্রলম্বিত করতে চাইবেন দুজনই।
এই দ্বৈরথের মাঝেই আবার থাকছে আবেগের ছোঁয়াও। আর সেটা আনছেন পিএসজির উইঙ্গার অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ঘুরে পিএসজি এলেও রিয়ালের সোনালি স্মৃতিগুলো ভোলেননি আর্জেন্টাইন উইঙ্গার। ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ম্যাচসেরা হওয়ার স্মৃতি তো সারা জীবনই অমলিন থেকে যাবে। সেই আবেগ থেকেই ডি মারিয়ার ঘোষণা, ‘যদি (রিয়ালের বিপক্ষে) গোল করিও, উদ্যাপন করব না। কারণ, রিয়ালে খেলার অভিজ্ঞতা আমি কখনোই ভুলব না।’
এমনিতে ঐতিহ্য আর ইউরোপে সাফল্যের বিচারে দুই দলের বিস্তর ব্যবধান। ১০টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা নিয়ে রিয়াল যেখানে ইউরোপের সবচেয়ে সফল দল, সেখানে পিএসজির কখনো ফাইনালই খেলা হয়নি। তবে প্যারিসে আজ লরাঁ ব্লাঁর দল মাঠে নামছে দুর্দান্ত ফর্মে থেকে। লিগ ওয়ান ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলিয়ে এ মৌসুমে ১২ ম্যাচে তারা অপরাজিত। ১০টি জয়, দুই ড্র। অপরাজিত যাত্রা চলছে রিয়ালেরও। লিগ ও ইউরোপ মিলিয়ে এ মৌসুমে ১০টি ম্যাচ খেলেছে রাফায়েল বেনিতেজের দল। সাতটি জয়, ড্র তিনটি। দুই দলই লিগে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
জমজমাট এই লড়াইয়ের আবহে রিয়ালের জন্য দুশ্চিন্তা হয়ে এসেছে চোট-সমস্যা। চোটের কারণে আগে থেকেই মাঠের বাইরে আছেন হামেস রদ্রিগেজ, করিম বেনজেমা, পেপে, দানি কারভাহাল ও লুকা মদ্রিচ। যোগ হয়েছে গ্যারেথ বেলের নামটাও। ওয়েলস ফরোয়ার্ডও মাঠে নামছেন না-এটা প্রায় নিশ্চিত।
কে জানে, চোটের সমস্যা আজ রিয়ালকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেয় কি না। আর সেই পরীক্ষায় ‘জিপিএ-৫’ এনে দিতে পারেন একজনই! এএফপি।