আবারও জুভেন্টাসের সম্মান বাঁচালেন রোনালদো

আবারও রোনালদো হলেন জুভেন্টাসের ত্রাণকর্তা।ছবি: এএফপি

টানা দশবার লিগ জয়ের কীর্তি যে গড়া যাবে না, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। পোর্তোর কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্নও ধুলার সঙ্গে মিশেছে। লিগ শিরোপা ধরে রাখতে জুভেন্টাস এখন অলৌকিক কিছুই চাইছে, যাতে পয়েন্ট তালিকায় আস্তে আস্তে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়া ইন্টার মিলানের সঙ্গে ব্যবধানটা কমতে থাকে ধীরে ধীরে। সে লক্ষ্যেও হোঁচট খেয়েছে দলটা। গত রাতে তুরিন ডার্বিতে ২-২ গোলে ড্র করে কোনো রকমে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে জুভেন্টাস।

অবশ্য ওই এক পয়েন্ট পাওয়ার জন্যও তুরিনের বুড়িরা চাইলে রোনালদোকে একটা ধন্যবাদ দিতেই পারে। ৭৮ মিনিটে এই পর্তুগিজ স্ট্রাইকারের পা থেকে মহামূল্যবান একটা গোল না এলে ওই এক পয়েন্টও পাওয়া হয় না জুভেন্টাসের। তবে ওই এক পয়েন্ট পেয়েও লাভ হয়নি। দিনের পরের ম্যাচে শীর্ষে থাকা ইন্টার মিলান ঠিকই জয় তুলে নিয়েছে বোলোনিয়ার বিপক্ষে। ১-০ গোলে পাওয়া সে জয়ে ইন্টারকে পূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দিয়েছেন বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য এগিয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাসই। ১৩ মিনিটে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন দলতার ইতালিয়ান উইঙ্গার ফেদেরিকো কিয়েসা। মাঝমাঠের বাঁ প্রান্ত থেকে স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতার সঙ্গে ওয়ান-টু করতে করতে বিপজ্জনকভাবে তুরিনোর ডি-বক্সে ঢুকে গিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে দলকে এগিয়ে দেন ফিওরেন্তিনা থেকে এই মৌসুমের জুভেন্টাসে যোগ দেওয়া এই উইঙ্গার। মৌসুমে এই নিয়ে ১৩ গোল হয়ে গেল তাঁর।

রোনালদোকে বড় একটা ধন্যবাদ দিতেই পারে জুভেন্টাস।
ছবি: এএফপি

গোল খেয়েই জেগে ওঠে তুরিনো। নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী তাদের মাঠে এসে জয় নিয়ে ফেরত যাবে, ব্যাপারটা বোধ হয় ভালো লাগেনি তাদের। বিশেষ করে তুরিনোর প্যারাগুইয়ান স্ট্রাইকার আন্তোনিও সানাব্রিয়ার। ২৭ মিনিটে এই সানাব্রিয়ার কল্যাণে ম্যাচে সমতা আসে। জুভেন্টাস থেকে তুরিনোতে ধারে খেলা ইতালিয়ান সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার রোলান্দো মানদ্রাগোরার দূরপাল্লার শট আটকাতে গিয়ে হাত ফসকে যায় গোলকিপার ভয়চেক সেজনির। সামনে ওত পেতে থাকা স্ট্রাইকার সানাব্রিয়া বলটা জালে জড়িয়ে দেন। স্কোরলাইন ১-১ রেখে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই আবারও গোল খেয়ে বসে জুভেন্টাস। এবার সম্পূর্ণ নিজেদের ভুলেই পিছিয়ে পড়ে সাদা-কালোরা। সুইডিশ উইঙ্গার দেয়ান কুলুসেভস্কির ভুল পাস ধরে জুভেন্টাসের রক্ষণভাগে বিপজ্জনকভাবে ঢুকে যান সানাব্রিয়া। বাঁ পায়ের জোরালো শট প্রায় আটকেই ফেলেছিলেন সেজনি, কিন্তু তাঁর হাতে লেগে দিক পরিবর্তন করে বল ঢুকে যায় জালে।

৫৩ মিনিটে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত প্রায় করেই ফেলেছিলেন কুলুসেভস্কি। বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সে থাকা রোনালদোর উদ্দেশ্যে নিখুঁত একটা ক্রস পাঠান এই উইঙ্গার। তবে রোনালদোর জোরালো হেড সেভ করেন তুরিনোর বর্ষীয়ান গোলকিপার সালভাতোরে সিরিগু। ৬৭ মিনিটে লেফটব্যাক আলেক্স সান্দ্রোর ক্রসে ঠিকঠাক মাথা ছোঁয়াতে পারেননি রোনালদো, বোঝা যাচ্ছিল, দলকে অন্তত একটা পয়েন্ট এনে দেওয়ার জন্য কতটা বদ্ধপরিকর তিনি।

৭১ মিনিটে কুলুসেভস্কির জায়গায় মাঠে নামান হয় ইতালিয়ান উইঙ্গার ফেদেরিকো বের্নার্দেসকিকে। এই বের্নার্দেসকির মাপা পাস থেকে ডিফেন্ডার জর্জো কিয়েল্লিনি হয়ে বল চলে আসে রোনালদোর কাছে। এবার গোল করতে ভুল হয়নি এই সুপারস্টারের। প্রথমে অফসাইডের কারণে গোলটা বাতিল বলা হলেও পরে ভিএআরের সাহায্যে সে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

নিজেরা দুই পয়েন্ট খুইয়ে মাঠ ছাড়লেও দিনটা রোনালদোদের জন্য ভালো কাটত, যদি পরের ম্যাচে ইন্টার পয়েন্ট হারাত। সেটা হয়নি। উল্টো লুকাকুর গোলে ১-০ গোলের জয় পেয়েছে ইন্টার। ফলে চতুর্থ স্থানে থাকা জুভেন্টাসের সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান ১২-তে ঠেকল।