আবারও পরকীয়ায় আসক্ত ইকার্দি?

ইকার্দির স্ত্রী ও এজেন্ট ওয়ান্দা নারাফাইল ছবি

মাউরো ইকার্দি নামটা চোখের সামনে এলে যতটা না কুশলী একজন ফুটবলারের চিত্র মাথায় ভেসে ওঠে, তার চেয়ে বেশি মনে পড়ে এমন একজন মানুষের কথা, যিনি বন্ধুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে বিয়ে করেছিলেন। কী? মনে পড়ছে না? ফ্ল্যাশব্যাকে চোখ রাখা যাক।


মেলোড্রামায় ভরপুর কোনো সিনেমার চেয়ে কম ছিল না সেই কাহিনি। যে সিনেমার নাম হতে পারে একটাই—‘বন্ধু যখন শত্রু!’ দুই বন্ধু, সাহিত্যের ভাষায় এমন বন্ধুদের হরিহর আত্মাই বলে সাধারণত, কিন্তু হঠাৎ সেই বন্ধুই হয়ে গেল জাতশত্রু! কারণটা ছিলেন একজন নারী।

ইকার্দি, লোপেজ, ওয়ান্দা নারা—যখন ভালো বন্ধু
ছবি: সংগৃহীত

সেই নারী আর কেউ–ই নন, মিডিয়া তারকা, মাউরো ইকার্দির বর্তমান স্ত্রী ও মুখপাত্র ওয়ান্দা নারা। এখন পিএসজিতে খেললেও এককালে ইকার্দি ছিলেন বার্সেলোনার যুব একাডেমির খেলোয়াড়। স্বদেশি লিওনেল মেসির পথ ধরে আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনার হাল ধরবেন তিনিও—এমনটাই আশা তখন ইকার্দিকে নিয়ে।

কিন্তু তেমন সুযোগ জুটল না কপালে। ফলে সেখান থেকে ইতালির ক্লাব সাম্পদোরিয়ায় খেলতে গিয়েছিলেন। গিয়েই পেয়ে যান স্বদেশি বন্ধু ও সতীর্থ ম্যাক্সি লোপেজকে। এই লোপেজেরই স্ত্রী ছিলেন নারা। ২০০৮ সালে বিয়ে হয়েছিল দুজনের। প্রথম দিকে ভালোই চলছিল সংসার। তিন সন্তানকে ঘিরে আবর্তিত সংসারে ঝড় তুললেন মাউরো ইকার্দি। লোপেজ ঘুণাক্ষরেও জানতেন না, বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে আসলে তাঁর জীবনে কত বড় ঝড় ডেকে এনেছেন। পরে লোপেজ আবিষ্কার করেন, ইকার্দি তাঁর পিঠে ছুরি মেরেছেন। গোপনে নারার সঙ্গে চলছে তাঁর গভীর প্রণয়।

ওয়ান্দা নারা
ছবি : ইনস্টাগ্রাম

সব জেনে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন লোপেজ। ইকার্দিও সাম্পদোরিয়া ছেড়ে ইন্টার মিলানে চলে আসেন। পরের বছর ইতালিয়ান লিগে সাম্পদোরিয়ার সঙ্গে খেলা পড়ে ইন্টারের। কিন্তু সেই ম্যাচে ইকার্দির সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানান লোপেজ। ইতালিয়ান মিডিয়ায় ম্যাচটির নামই হয়ে যায় ‘ওয়ান্দা ডার্বি’!

ওই ম্যাচের পরের মাসেই, ২০১৪ সালের মে-তে ইকার্দি ও নারা বিয়ে করেন। এখন ইতালিয়ান গণমাধ্যমের খবর, সেই ইকার্দি আবারও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন!

জাতীয় দলের হয়ে মেসি-ইকার্দি
ফাইল ছবি

গত রাত থেকেই চলছে এই নাটক। ইকার্দির স্ত্রী নারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বেশ কিছু সন্দেহজনক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা দেখলে যে কেউই ভাববেন, কিছু একটা চলছে ইকার্দি-নারার মধ্যে। আর সেটা অবশ্যই দুজনের সম্পর্কের জন্য ভালো কিছু নয়। নারা শুধু ইকার্দির স্ত্রী-ই নন, তাঁর মুখপাত্রও বটে।

সেই নারাই গত রাতে ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে কাউকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘একটা বাজে মেয়ের জন্য আরেকটা পরিবার নষ্ট করলি তুই!’ যদিও পরে ইনস্টাগ্রামের ওই স্টোরিও মুছে দিয়েছেন নারা। শুধু তা–ই নয়, ইনস্টাগ্রামে ইকার্দিকে ‘আনফলো’ও করেছেন নারা। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে দুজনের প্রেমময় সব ছবিও মুছে দিয়েছেন। ব্যাপারটা যে সুবিধার নয়, তা বলা চলে!

পরে ইনস্টাগ্রামের ওই স্টোরিও মুছে দিয়েছেন নারা
ছবি : ইনস্টাগ্রাম

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে নিজের ক্যারিয়ারের কম ক্ষতি করেননি ইকার্দি। ওয়ান্দার সঙ্গে এই কীর্তির জন্য জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য বলতে গেলে এক রকম বন্ধই হয়ে গেছে। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা তো সরাসরিই বলেছিলেন, যে বন্ধুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেয়, তাঁকে কখনো জাতীয় দলে ডাকা ঠিক না। আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হোক। ওদিকে লোপেজের সঙ্গে মেসিসহ জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ভালো সম্পর্ক থাকাতেই নাকি ক্লাব ফুটবলে বছরের পর বছর দুর্দান্ত খেলেও আর্জেন্টিনা দলে ডাক পাচ্ছিলেন না ইকার্দি। ওয়ান্দাকে বিয়ের আগে আর্জেন্টিনার পক্ষে একটি ম্যাচ খেলা পরের তিন বছরে গোলবন্যা বইয়েও দলে ঢুকতে পারেননি এখন পিএসজিতে খেলা এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।


সেই ইকার্দিই আবারও একই সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে!