আবাহনীকে মাটিতে নামাল চট্টগ্রাম আবাহনী

হারের পর মাঠ ছাড়ছে আবাহনী লিমিটেডছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম আবাহনীর চমক চলছেই। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে পিছিয়ে পড়েও আজ আবাহনী লিমিটেডকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে চট্টগ্রামের ক্লাবটি।

আজকের আগে প্রিমিয়ার লিগ, স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে মাত্র ১টিতে হেরেছিল আবাহনী। সেটাও ছিল টাইব্রেকারে, শেখ রাসেলের বিপক্ষে। উড়তে থাকা আবাহনীকে মাটিতে নামিয়ে এনেছে মারুফুল হকের দল। তা–ও আবাহনীর হোম ভেন্যুতেই।

১ গোলে এগিয়ে গিয়ে ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে আবাহনী। শেষের দিকে বাইসাইকেল কিকে দুর্দান্ত গোল করে স্কোরলাইন ৩-২ করে ভদ্রস্থ চেহারা এনেছেন রাফায়েল আগুস্তো। তবে হারটা আর এড়াতে পারেনি সর্বশেষ স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়নরা।

মারিও লেমোসের মতো মারুফুলের হাতে কোনো তারকা খেলোয়াড় নেই। প্রিমিয়ার লিগ শুরুর আগে বিকেএসপিতে ক্যাম্প করে বিনি সুতোর মালায় গেঁথেছেন দলটাকে। দলীয় শক্তিকে পুঁজি করেই খাতা–কলমের বড় দলগুলোকে থামিয়ে দিচ্ছেন মারুফুল। আজ তাঁর দ্রুতগতির প্রতি–আক্রমণ কৌশলের কোনো জবাব জানা ছিল না আবাহনীর রক্ষণভাগের। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী।

চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি আবাহনী লিমিটেড
ছবি: প্রথম আলো

১৬ মিনিটে দানিয়েল কলিনদ্রেসের গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী। প্রতি–আক্রমণে নিজেদের রক্ষণভাগ থেকে কলিনদ্রেসের উদ্দেশে বল বাড়িয়েছিলেন মিডফিল্ডার আবু সাঈদ। দ্রুতগতিতে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেছেন কলিনদ্রেস। অবশ্য এ গোলে দায় এড়াতে পারেন না চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলকিপার আজাদ হোসেন।

এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ টেকে মাত্র ৪ মিনিট। পিটার থ্যাঙ্কগডের গোলে ২০ মিনিটে সমতায় ফেরে চট্টগ্রাম আবাহনী। ওমিদ পোপালজাইয়ের ক্রসে হেডে গোলটি করেন পিটার থ্যাঙ্কগড। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা থ্যাঙ্কগডের এটি সপ্তম গোল।

সমতায় ফেরার পর চট্টগ্রামের ক্লাবটির এগিয়ে যাওয়ার পালা। ৩৭ মিনিটে ১-২ করেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর দক্ষিণ আফ্রিকার ফরোয়ার্ড উইলিয়াম তাওয়ালা। প্রতি–আক্রমণে আফগান মিডফিল্ডার পোপালজাইয়ের পাস থেকে বক্সে ঢুকেন তাওয়ালা। এরপর ডান পায়ের জোরালো শটে গোলটি করেন তিনি।

চট্টগ্রাম আবাহনীর রক্ষণে আবাহনীর খেলোয়াড়দের আক্রমণ
ছবি: প্রথম আলো

৬১ মিনিটে ম্যাচে ফেরার সুযোগ আসে আবাহনীর সামনেও। রাফায়েল আগুস্তোর রক্ষণচেরা পাস থেকে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন জুয়েল রানা। আবাহনীর এই উইঙ্গার বলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগেই পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এসে বিপদমুক্ত করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলকিপার আজাদ।

উল্টো প্রতি–আক্রমণ থেকে ৬৪ মিনিটে চট্টগ্রামের ক্লাবের দারুণ এক গোল। দারুণ দলীয় বোঝাপড়ার রসায়ন যাকে বলে। আবাহনীর খেলোয়াড়ের মিস পাস থেকে নিজেদের রক্ষণভাগে জাহিদ হোসেন বল ঠেলে পাস দেন পোপালজাইকে।

আফগান এই মিডফিল্ডার সোহেল রানাকে বল দিয়ে দ্রুতগতিতে প্রতিপক্ষের বক্সের দিকে দৌড় শুরু করেন। প্রতিপক্ষ দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে তাঁর সামনে বল ঠেলেন সোহেল। বক্সে ঢুকে দেখেশুনে সেটিকে দারুণ গোলে পরিণত করেছেন পোপালজাই। লিগে এটি তাঁর দ্বিতীয় গোল।

মাঝমাঠে আবাহনীকে ছাড় দেয়নি চট্টগ্রাম আবাহনী
ছবি: প্রথম আলো

১ গোলে এগিয়ে গিয়ে ৩-১ গোলে হারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল আবাহনী। ৮৯ মিনিটে বাইসাইকেল কিকে আগুস্তোর গোল। জুয়েল রানার আলতো চিপে আসা বল বুকে নামিয়ে নিয়ে দারুণভাবে গোলটি করেন তিনি (২-৩)। শেষ কয়েক মিনিট বেশ চাপ সৃষ্টি করেও আর সমতায় ফেরা হয়নি আবাহনীর।

আজকের রোমাঞ্চকর জয়ে ৬ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে চট্টগ্রাম আবাহনী। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আবাহনী। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রয়েছে বসুন্ধরা কিংস।