১৯ জানুয়ারি জাতীয় ফুটবল দলে নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন স্পেনের হাভিয়ের কাবরেরা।
গতকাল প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ৩৭ বছর বয়সী এই কোচ কথা বলেছেন তাঁর চ্যালেঞ্জ, পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নিয়ে—
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: প্রথমবারের মতো কোনো জাতীয় দলের কোচ হয়েছেন। কিন্তু নিজের ফেসবুক-টুইটার-লিংকডইনে সেটা প্রকাশ করলেন না কেন?
হাভিয়ের কাবরেরা: জাতীয় দলের কোচ হওয়া গর্বের ব্যাপার। তবে এখনই এটা প্রকাশ করার প্রয়োজন মনে করছি না। ভালো কাজ করতে পারাটাই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো কিছু করেই সবাইকে জানাতে চাই।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: সংবাদ সম্মেলনে আপনাকে ‘লো প্রোফাইল’ কোচের তকমা শুনতে হয়েছে। আপনার জন্য বিষয়টি কতটা বিব্রতকর?
কাবরেরা: সবার মতামতকেই সম্মান করি। তবে আমার যা যোগ্যতা, তা নিয়েই আমি গর্বিত। স্পেনের সেরা পাঁচটি একাডেমির একটির দায়িত্বে ছিলাম, পেশাদার ক্লাব পর্যায়েও কাজ করেছি। আত্মবিশ্বাস আছে, আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেব।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: আপনি কতটা আশাবাদী এ রকম একটা দলের কোচ হয়ে?
কাবরেরা: একটা কৌশলগত অবকাঠামো দাঁড় করাতে পারলে অবশ্যই ভালো কিছু করা সম্ভব। ভালো-মন্দের দায়টা আমি নিলেও কাজটা করতে হবে সহকারী কোচ, গোলকিপার কোচ, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর, পুষ্টিবিদ, ম্যাচ বিশ্লেষক—সবাই মিলে। আমাদের সেরা খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করতে হবে। এ জন্য সময় দিতে হবে আমাকে। মার্চে জাতীয় দলের পরবর্তী ক্যাম্পেই আপনারা নতুন কিছু দেখতে পাবেন।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: বাফুফে সভাপতি আপনাকে বলেছেন, ‘শেষের দিকে গোল খেয়ে দল যেন না হারে।’ এর সমাধান কী?
কাবরেরা: অনুশীলনে চাপের পরিস্থিতি তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। ম্যাচ চলাকালীন খুব ছোট ছোট তথ্যও ডেকে জানাতে হবে খেলোয়াড়দের। জানি কাজটা সহজ নয়।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: একটা ফুটবলীয় ‘পরিচয়’ তৈরি করতে চেয়েছেন বাংলাদেশ দলের। সেটা কীভাবে?
কাবরেরা: শুরুতেই আমি খেলোয়াড়দের জানিয়ে দেব, আমাদের দলের ধরন বা মানসিকতাটা কী হবে। অবশ্যই আমরা জিততে চাই। যত বড় দলের বিপক্ষেই খেলি না কেন, মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার মানসিকতা থাকতে হবে। আমার প্রথম কাজ হবে শারীরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী খেলোয়াড় খোঁজা। দল হিসেবে এটা তৈরি করার দায়িত্ব আমার।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: আপনাকে কিন্তু এমন খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করতে হবে, যাঁরা দুই ডোজ করোনা টিকা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ বাতিল হয়ে গেছে!
কাবরেরা: এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলতে চাই না। পেশাদার ফুটবলার বলতে কী বোঝায়, এ ব্যাপারে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমি কথা বলব। সব সমস্যারই সমাধান আছে।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন আপনার স্বদেশি অস্কার ব্রুজোন, ভারতের এফসি গোয়া ক্লাবে যাঁর সহকারী কোচ ছিলেন আপনি। তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে?
কাবরেরা: বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই অস্কারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি আমাকে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। সব মিলিয়ে তাঁর কাছ থেকে ইতিবাচক ধারণা পাওয়ায় এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়েছে।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: কোচ হিসেবে কাকে অনুসরণ করেন?
প্রশ্ন: কোচ হিসেবে কাকে অনুসরণ করেন?
কাবরেরা: লুইস এনরিকে (স্পেন জাতীয় দলের কোচ)। কারণ, তিনি শুধু স্প্যানিশ কৌশলে দলকে খেলান না, কিছুটা ইংলিশ ধাঁচও যোগ করেছেন। কখনো ছোট ছোট পাসে খেলে তাঁর দল, আবার কখনো দ্রুত লম্বা পাসে আক্রমণে ওঠে। যদি দুই পাস খেলে গোল করা যায়, তাহলে বেশি পাস খেলার কোনো প্রয়োজন দেখি না।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: বাংলাদেশ কেমন লাগছে?
কাবরেরা: এখানকার আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ। ব্যস্ত একটা শহর। সবাই সারাক্ষণ ছুটছেন। ভারতের সঙ্গে মিল পাই। সেখানকার মতো এখানেও রুটির সঙ্গে ডাল খাই আমি।