আরেক বিতর্ক উসকে গেলেন বার্তোমেউ

বার্সেলোনা সভাপতির পদ ছাড়ার আগে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে বিতর্ক তুলেছেন বার্তোমেউছবি: টুইটার

ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ ফুটবল লিগ ইংল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, জার্মানি ও স্পেনের ১২টিরও বেশি ক্লাব এক জোট হয়ে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নামে নতুন এক প্রতিযোগিতা প্রচলনের পরিকল্পনা করেছে বলে শোনা গিয়েছিল। এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না আসলেও, পরিকল্পনা চলছে পুরোদমে।

কোন কোন দল যোগ দেবে এই টুর্নামেন্টে, চলছে আলোচনা। এর মধ্যে সদ্য বিদায়ী বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ জানিয়ে গিয়েছেন, সুপার লিগে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছেন তিনি।

বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে বার্তোমেউ জানিয়েছেন, ‘আমি আজ একটা সুসংবাদ দিতে চাই, যা আমাদের অর্থনৈতিক গতিপথকে বদলে দেবে। ইউরোপিয়ান সুপার লিগে যোগ দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছি আমরা। এই সিদ্ধান্তটা আগামী সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হবে। নতুন ক্লাব বিশ্বকাপের ফরম্যাটও অনুমোদন করেছি আমরা।’

ইউরোপিয়ান সুপার লিগের ফরম্যাট কী হবে, কে কে খেলবে—এখনো নিশ্চিত হয়নি। শোনা যাচ্ছে, চ্যাম্পিয়নস লিগের জায়গায় খেলা হবে এই টুর্নামেন্ট। ২০২২ সাল থেকে এর সম্ভাব্য শুরুর সময় ধরা হয়েছে। ১৬ বা ১৮ দল এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারে। গোটা মৌসুমজুড়ে ন্যূনতম ৩০ ম্যাচ খেলবে প্রতি ক্লাব।

তবে অনেকেই এই টুর্নামেন্ট সৃষ্টির পক্ষে নন, কেননা এর ফলে ধনী ক্লাব আরও বেশি ধনী হওয়ার সুযোগ পাবে। ওদিকে অর্থাভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে অনেক ক্লাব। এর মধ্যে স্কাই স্পোর্টস জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান সুপার লিগ তাড়াতাড়ি আয়োজন করতে ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংক জেপি মরগান এর মধ্যেই ছয় বিলিয়ন ডলার বা পাঁচ লাখ দশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার চিন্তাভাবনা করছে।

বার্তোমেউয়ের এই সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি লা লিগার সভাপতি হাভিয়ের তেবাস। জানিয়েছেন নিজের বিরক্তির কথা, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বার্তোমেউয়ের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, ফুটবল ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে তাঁর কোনো ধারণাই নেই। সভাপতি হিসেবে তাঁর সমাপ্তিটা তাই দুঃখজনক হলো, যে এর আগে অনেক সাফল্য ও সম্প্রতি অনেক ব্যর্থতার সাক্ষী হয়েছে।’

অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়ার আগেই সরে গেলেন বার্তোমেউ। তাঁকে উৎখাত করতে বার্সেলোনার সমর্থকদের কয়েকটি গ্রুপ মিলে ‘মেস কো উনা মোসিও’ নামে এক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। সেটিতে প্রাথমিক সাফল্যও এসেছে। বার্সেলোনার সমর্থকদের মধ্যে থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটে ঠিক হয়েছে, বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হবে। সে ভোটে বার্সার নিবন্ধিত প্রায় দেড় লাখ সমর্থকের দুই-তৃতীয়াংশের ভোট তাঁর বিপক্ষে গেলে সরে যেতে হতো বার্তোমেউকে।

কিন্তু বার্তোমেউ সে ‘ভাগ্য পরীক্ষায়’ আর যাননি। বার্সা সভাপতি হিসেবে তাঁর ছয় বছরের বিতর্কিত অধ্যায়ের সমাপ্তি টেনে দিলেন। আর সমাপ্তি টানার আগে আরেকটা বোমা ফাটিয়ে গেলেন।