আর্থিক সংগতি নীতির ফাঁদে নেইমারের স্বপ্ন

নেইমারকে পেতে চায় বার্সেলোনা, এমন খবরই কদিন আগে দিয়েছে কাতালুনিয়ান সংবাদমাধ্যম।ছবি: রয়টার্স

নেইমার বার্সেলোনা ছেড়েছেন পাঁচ বছর হলো। এর মধ্যে গত বছরই শুধু তাঁর দলবদল নিয়ে তেমন কোনো গুঞ্জন শোনা যায়নি। এক বছর বিরতি দিয়ে আবার দলবদলের বাজারে নেইমারকে নিয়ে গুঞ্জন। সেই একই কথা ভাসছে বাজারে—বার্সেলোনা নেইমারকে পেতে চায়, নেইমারও ফিরতে চান বার্সেলোনায়! কিন্তু পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই এক প্রতিবেদনে লিখেছে স্পেনের ক্রীড়া দৈনিক মার্কা।

নেইমার বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে নাম লেখান ২০১৭ সালে। প্যারিসের দলটিতে তিনি নাম লেখানোর পর থেকেই শুরু হয় তাঁর বার্সেলোনায় ফেরা নিয়ে গুঞ্জন। প্রথম দুই বছর তো খুব গুঞ্জন ছিল পিএসজিতে নাম লিখিয়ে মোটেই সুখে নেই নেইমার। তিনি আবার ফিরতে চান সাবেক ক্লাবে। পরের বছর, মানে ২০১৯ সালে নেইমার সেভাবে না চাইলেও বার্সেলোনা তাঁকে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। গুঞ্জনটা ছিল এ রকম—লিওনেল মেসি চাইছেন বার্সেলোনা যেন নেইমারকে ফিরিয়ে আনে।

নেইমার অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন প্যারিসে তিনি সুখেই আছেন।
ছবি: রয়টার্স

গত বছর দলবদলের বাজারে নেইমারকে নিয়ে কোনো গুঞ্জন ছিল না। দলবদল শুরু হওয়ার আগেই নেইমার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি পিএসজিতে সুখেই আছেন এবং ক্লাবটির হয়ে ভালো কিছু করতে চান। সেটি সবাই বিশ্বাসও করেছিল। অন্যদিকে পিএসজি গত বছর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ওঠায় সবাই ধরেই নিয়েছিল, নেইমার সুখেই আছেন প্যারিসে। কিন্তু কদিন আগে কাতালুনিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নেইমারকে ফেরাতে বার্সেলোনা পিএসজির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

অন্যদিকে পিএসজি কর্তৃপক্ষ বলে আসছিল, নেইমার প্যারিসেই থাকবেন। পিএসজির সঙ্গে নেইমারের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী বছরের জুনে। পিএসজি জানিয়েছে, তারা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের সঙ্গে নতুন চুক্তি করার জন্য আলোচনা শুরু করেছে। কিন্তু এখনো চুক্তি সই হয়নি বলে বার্সা শিবির আশায় ছিল শেষ মুহূর্তে নেইমারকে পেলেও পেতে পারে তারা। কিন্তু নেইমারের নতুন চুক্তি ছাড়াও তাঁকে পাওয়ার একটা বাধা আছে বার্সেলোনার। সেটা উয়েফার আর্থিক সংগতি নীতি।

আজ সিটির বিপক্ষে জিততে নেইমারের দিকে তাকিয়ে থাকবে পিএসজি।
ছবি: রয়টার্স

বার্সেলোনা বর্তমানে ঋণে ডুবে আছে। জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের অধীনে বার্সেলোনার আগের বোর্ডের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী ক্লাবের ঋণ বর্তমানে ১১৭ কোটি ৩০ লাখ ইউরোর। এর মধ্যে ৭৩ কোটি ইউরো স্বল্পমেয়াদি ঋণ। এমন অবস্থায় মেসির সঙ্গে নতুন চুক্তি আর নেইমারকে দলে ভেড়ালে উয়েফার আর্থিক সংগতি নীতি ভাঙতে হবে বার্সেলোনাকে।

এদিকে পিএসজির ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দো নিশ্চিত করেছেন যে নেইমার আর ক্লাবের মধ্যে নতুন চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হয়ে গেছে। সেটা যদি না–ও হয়ে থাকে, নেইমারকে পেতে হলে আগে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের সঙ্গে একটু আইনি ঝামেলা মেটাতে হবে বার্সাকে। কাতালান ক্লাবটির দাবি, ২০১৬ সালে তাদের সঙ্গে নেইমারের সর্বশেষ চুক্তি অনুযায়ী তাঁর কাছে ৪ কোটি ৪০ লাখ ইউরো পাবে তারা। কিন্তু নেইমার এই অর্থ কোনোভাবেই দিতে রাজি নন। এটা নিয়ে আইনি লড়াই চলছে।

এমনিতেই ইউরোপিয়ান সুপার লিগের বিতর্ক নিয়ে ঝামেলার মধ্যে আছে বার্সেলোনা। এ অবস্থায় নতুন করে আর বার্সেলোনা বিতর্কে জড়াবে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।