আসছেন হরলান্ডের ‘ভাই’!
তাহলে হরলান্ড পরিবারের রক্তেই কি অবিশ্বাস্য কিছু আছে? ফুটবলার হিসেবে একজনকে যা সফল করে তোলে?
আপাতদৃষ্টিতে সেটাই মনে হচ্ছে। আর্লিং ব্রট হরলান্ডকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। রেড বুল সালজবুর্গের হয়ে আলো ছড়ানোর পর গত মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে নাম লিখিয়েছেন জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে। গোলের সঙ্গে তাঁর সখ্য চোখে পড়ার মতো।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সালজবুর্গের জার্সি গায়ে ২৭ ম্যাচে ২৯ গোল, ডর্টমুন্ডে এসে ৪৫ ম্যাচে ৪৩—গোল করাকে যেন ছেলেখেলা বানিয়ে ফেলেছেন ২০ বছর বয়সী এই নরওয়েজিয়ান। রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবা চেলসির মতো ক্লাবগুলো তো আর এমনি এমনি তাঁর পিছু ছুটছে না!
এখন জানা গেল, শুধু হরলান্ডই নন, গোল করার নেশা আছে তাঁর পরিবারের আরও একজনের রক্তে। তিনি হরলান্ডের ভাই (কাজিন) আলবার্ট ব্রট খালান্ড। বয়সে হরলান্ডের চেয়ে বছর তিনেকের ছোট এই স্ট্রাইকারের গোলক্ষুধা ভাইয়ের চেয়ে কম নয় মোটেও। খেলছেন ভাইয়ের সাবেক ক্লাব মল্ডের হয়ে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি সতেরোতে পা দেওয়া খালান্ড মল্ডের যুবদলের হয়ে মাত্র ৩৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ৬৪ গোল। অর্থাৎ প্রতি ম্যাচে প্রায় ১.৭৩টি করে গোল করছেন এই স্ট্রাইকার। ভাবা যায়!
নতুন কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে আগের কোনো খেলোয়াড়ের মিল পাওয়া গেলে অনায়াসে নতুন খেলোয়াড়টিকে আগের খেলোয়াড়ের নতুন সংস্করণ বলে মানা হয়। যে কারণে বিশ্ব যুগ যুগ ধরে দেখে এসেছে নতুন মেসি, নতুন ম্যারাডোনা, নতুন পেলে, নতুন নেইমার, নতুন সুয়ারেজদের। এই খালান্ডের মাধ্যমে নরওয়েজিয়ান মিডিয়া যেন তাদের ‘নতুন হরলান্ড’কে পেয়েছে। ভাইয়ের মতোই চুলের ছাঁট, গায়ে-গতরে দেখতেও এক, সেই নিস্পৃহ চাহনি, খেলার ধরনও একই—সবকিছু মিলিয়ে নরওয়েজিয়ান মিডিয়া তাই সানন্দেই খালান্ডকে হরলান্ডের দ্বিতীয় সংস্করণ হিসেবে আখ্যা দিয়ে দিয়েছে।
মল্ডের হয়েই যে গোলের ফোয়ারা ছোটাচ্ছেন খালান্ড, তা কিন্তু নয়। হরলান্ড যেমন ডর্টমুন্ডের আগে সালজবুর্গের হয়ে গোলবন্যা ছুটিয়েছিলেন, একই কাজ নিজের সাবেক ক্লাব বির্নে এফকের হয়েও করেছেন খালান্ড। আগের ক্লাবের হয়ে ৪০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে খেলেছিলেন মাত্র ৩১ ম্যাচ।
হরলান্ড পরিবারের রক্তেই যে ফুটবলের নেশা, সেটার সবার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল আলফ-ইঙ্গ হরলান্ডের কারণে। আর্লিং হরলান্ডের বাবা দুই দশক আগেও নিয়মিত প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন। ছিলেন লিডস ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটির মতো ক্লাবগুলোর মিডফিল্ডার। শুধু হরলান্ড বা খালান্ডই নন, পরিবারের আরেক কাজিনও খেলছেন ফুটবল। তিনি আবার ওই দুজনের মতো স্ট্রাইকার নন, খেলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে। তাঁর নাম জোনাটান ব্রট ব্রুনস, খেলছেন নরওয়ের আরেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব লিলস্ট্রমে।
দেখা যাক, হরলান্ড পরিবারের ওপর ভর করে আসন্ন কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নরওয়ে কোনো চমক দেখাতে পারে কি না!