
ডান দিক থেকে স্বপনের ক্রসে দুর্দান্ত সাইড ভলিটা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট। গোল না হলেও সেই চেনা আসলামকে দেখে তুমুল করতালিতে ফেটে পড়লেন কমলাপুর স্টেডিয়ামে শতাধিক দর্শক। একই প্রান্ত থেকে নিপুর মাপা ক্রসে আসলাম এবার হয়ে উঠলেন নিখুঁত হেডার। গোলরক্ষক নিজাম মজুমদারকে পরাস্ত করে বল খুঁজে নিয়েছে গোলের ঠিকানা।
এমন অনেক খণ্ড দৃশ্য কাল বারবার দেখা গেল এই প্রীতি ম্যাচটায়। মহান বিজয় দিবসে বাফুফে একাদশ আর সোনালী অতীতের ব্যানারে একঝাঁক সাবেক ফুটবলার ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন অতীতে। ফুটবলারদের সেই ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখে অনেকের মনে পড়ল সত্তর-আশি বা নব্বইয়ের কথা। কী ছিল না তাতে! কর্নারের সময় কায়সার হামিদের বক্সে উঠে গিয়ে হেড করার দৃশ্যটা প্রাণভরে উপভোগ করল সবাই। আসলামের সঙ্গে কায়সারের সেই দুর্ধর্ষ লড়াইয়ের কিছু মুহূর্তও এল।
আসলাম যখন গোল করে বাফুফে একাদশকে এগিয়ে দিলেন, সোনালী অতীত মরিয়া গোল শোধের জন্য। কমলাপুরের নতুন টার্ফে ম্যাচটা জমে গেল দারুণভাবে। তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আলফাজের গোল ম্যাচে আনল প্রাণ। তাঁর ২ গোলের সঙ্গে সোনালী অতীতের নকীবও গোল পেলেন একটি। ৩-১ স্কোরলাইন করে ফেলা বাফুফে একাদশকে ম্যাচটা জিততে দেননি তো এই দুজনই (৩-৩)।
শেষ বাঁশি বাজতেই হাসিখুশি একঝাঁক ফুটবলারের অতীত স্মৃতিচারণায় উঠে এল অনেক কিছুই। সাইড ভলি থেকে গোলটা না হওয়ায় অতৃপ্ত দেখায় আসলামকে, ‘ইশ্, অল্পের জন্য হলো না। ফর্মে থাকলে গোল হয়ে যেত।’ কায়সার এমন আয়োজন প্রতিবছরই চালিয়ে নেওয়ার অনুরোধ রাখলেন বাফুফের কাছে। সোনালী অতীতের অধিনায়কের বাহুবন্ধবী পরা সাবেক এই নামী ডিফেন্ডার নস্টালজিয়ায় ভোগেন, ‘সেরা সময়ে আসলাম ভাইসহ কোনো স্ট্রাইকার তো এভাবে আমাকে কাটিয়ে সহজে ঢুকতে পারত না।’
বাফুফে একাদশে গাফফার, রুপু, কানন, মন্টু, নুরুল হক মানিকরা অবশ্য মজা করার চেয়ে বেশি মনোযোগী ছিলেন খেলার দিকেই। সোনালী অতীত শেষ গোলটা করে ৩-৩ করতেই সাইড লাইন থেকে সুলতান আহমেদের আনন্দ দেখে কে! রহমতগঞ্জে বেশির ভাগ সময় কাটানো এই স্ট্রাইকার বললেন, ‘মনে হচ্ছে অতীতের সোনালি সময়ের একটা দিন ফিরে পেলাম।’ একটুও বাড়িয়ে বলেননি। বিজয়ের আনন্দের সঙ্গে সময়টা সত্যিই হয়ে উঠেছিল উপভোগ্য।