ইস্কো-জাদুতে বার্নাব্যু জয় রিয়ালের

ইস্কো-জাদুতে বার্নাব্যু-গেরো কাটল রিয়ালের। ছবি: রয়টার্স
ইস্কো-জাদুতে বার্নাব্যু-গেরো কাটল রিয়ালের। ছবি: রয়টার্স

লা লিগায় গোলের ‘ভাগ্য দেবতা’ বলে কি কেউ আছেন? থাকলে তিনি এবার যেন প্রতিজ্ঞা করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দিকে ফিরে তাকাবেন না। একের পর এক শট আর সুযোগ পেয়েও রোনালদোর গোল না পাওয়ার যে আর কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! তবে বার্নাব্যু মুখ ফিরে তাকিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের দিকে। এবার লা লিগায় নিজেদের মাঠে প্রথম জয় পেয়েছে তারা। ইস্কো-জাদুতে এস্পানিয়লকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল।

ম্যাচের দুটো গোলই করেছেন ইস্কো। তবে গোল নয়, যেভাবে খেলেছেন তাতেই এ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। মদরিচ-ক্রস কিংবা রোনালদোদের মতো খেলোয়াড়দের ভিড়েও ক্যামেরা তাঁকে বারবার খুঁজে নিয়েছে। কারণ, বলটা যে বারবার তিনি খুঁজে নিয়ে নিচ্ছিলেন নিজের কাছে। কে জানে বলও হয়তো ঞ্জে থেকেই চলে যাচ্ছিল এই ‘লিটল ম্যাজিশিয়ানের’ দিকে। যাঁর পায়ে এমন জাদু, বল তার দিকে যেতেই পারে!
ম্যাচের ২২ সেকেন্ডেই এগিয়ে যেতে পারত রিয়াল। রামোসের দুর্দান্ত এক লব থ্রো পেয়ে মার্কো এসেনসিও বল বাড়িয়ে দেন ইস্কোকে। কিন্তু স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের শট ঠেকিয়ে দেন এস্পানিয়ল গোলরক্ষক। দ্বিতীয় মিনিটে ইস্কোর আরেকটি শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন পাওলো লোপেজ। দশ মিনিটের মধ্যে আরও দুবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। একবার রোনালদো আরেকবার সুবাদে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তাঁদের দল।
গেরো খুলল ২৯ মিনিটে। বাঁ প্রান্তে একটু জায়গা পেতেই বল নিয়ে ছুটছিলেন রোনালদো। এমন পরিস্থিতিতে নিজেই সাধারণত শট নেন রোনালদো। সে কারণেই বোকা বনলেন এস্পানিয়লের ডিফেন্ডাররা। সবাইকে হতভম্ব করে ইস্কোর দিকে থ্রো পাস দিলেন রোনালদো। গোলকিপারকে একা পেয়ে এবার আর বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি ইস্কো।
পরের মিনিটেই কাউন্টার অ্যাটাকে ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারত রিয়াল। ডান প্রান্ত দিয়ে মার্কো এসেনসিওর দুর্দান্ত পাস নিয়ন্ত্রণে নিলেও রোনালদোর বাঁ পায়ের শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। দুই মিনিট পরেই আবারও রোনালদো দৃশ্যপটে। কাসেমিরোর পাস থেকে দারুণ এক বল পেয়েছিলেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। কিন্তু এবার রোনালদোর শট ঠেকিয়ে দিলেন লোপেজ।
প্রথমার্ধে আরও দুবার সুযোগ পেয়েছেন রোনালদো কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতা ফেরাতে পারত এস্পানিয়ল। কিংবা ৬৯ মিনিটেও। যখন সার্জিও রামোসের ভয়ংকর এক ভুলে ৬ গজের ছোট বক্সে বল পেয়ে গিয়েছিল প্রতিপক্ষ। গোলরক্ষক নাভাসও ‘রং ফুটেড’ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নাচোর ঠান্ডা মাথার ট্যাকলে বেঁচে যায় রিয়াল। এক মিনিট পরেই ইস্কো এস্পানিয়লের দুঃখ বাড়ালেন। মাঝমাঠে প্রতিপক্ষ থেকে বল কেড়ে নিলেন রোনালদো। সে বল অনেকটা টেনে নিয়ে বক্সের ঠিক বাইরে বাড়িয়ে দিলেন অ্যাসেনসিওর দিকে। অ্যাসেনসিওর পায়ে বল ও রোনালদোকে বক্সের ভেতরে ঢুকতে দিকে ডিফেন্ডাররা ছুটলেন সব রোনালদোর দিকে। সেই সুযোগে অ্যাসেনসিও খুঁজে নিলেন ফাঁকায় দাঁড়ানো ইস্কোকে। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল রিয়াল।
এরপরও আক্রমণের পর আক্রমণ করে গেছে রিয়াল। ইস্কো, রোনালদো ও অ্যাসেনসিও মিলে ত্রাস ছড়িয়েছেন। কিন্তু গোলটাই পাওয়া হচ্ছিল না তাঁদের। তবে তিন ম্যাচ পর লা লিগায় নিজেদের মাঠে জয় তো পেল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা!