এএফসি কাপে বাংলাদেশ ক্লাবের বাধা মিসরীয় পিরামিড!

* বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামীকাল এএফসি কাপের প্রাথমিক রাউন্ডে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশের সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। খেলাটি শুরু হবে বেলা তিনটায়। 

* গত বছর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত শেখ কামাল গোল্ডকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল টিসি স্পোর্টস।

আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছে সাইফ স্পোর্টিং ও টিসি স্পোর্টস ক্লাব।
আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছে সাইফ স্পোর্টিং ও টিসি স্পোর্টস ক্লাব।

একই হোটেলে থাকায় ডাইনিং ও লবিতে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে দেখা হয়েছে বেশ কয়েকবার। চোখাচোখি বলতে যা বোঝায় আর কি। মালদ্বীপের ক্লাব টিসি স্পোর্টসকে দেখে সাইফ স্পোর্টিংয়ের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটু স্বস্তি। প্রতিপক্ষ দলে আলি আশফাক বা আসাদুল্লাহর মতো এমন কোনো বড় মুখ নেই, যাকে ঠেকানোর ভয়ে কুঁকড়ে যেতে হবে। কিন্তু তপু বর্মণ, রহমত মিয়াদের মনে আপাতত ঠেকানোর ভয় না ধরলেও নিজেদের জয়ের পথে বড় বাধা মানছেন একজনকে। গোল করতে হলে যাঁকে ডিঙাতে হবে আগে। তিনি মিসরীয় ডিফেন্ডার ইলসায়েদ ইসা। গত বছর যাঁর চওড়া কাঁধের ওপর ভর করেই চট্টগ্রাম থেকে শেখ কামাল গোল্ডকাপের শিরোপা নিয়ে ফিরেছিল ক্লাবটি।

গত বছর মার্চের পর মালদ্বীপের শীর্ষ দিভেহি লিগের রানার্সআপ দলটি বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো পা রেখেছে। আগামীকাল এএফসি কাপের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রাথমিক রাউন্ডের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের নবাগত সাইফ স্পোর্টিংয়ের মুখোমুখি হবে তারা। টিসি স্পোর্টসের নাম এলেই বারবার ঘুরে ফিরে আসে শেখ কামাল গোল্ডকাপের নাম। চট্টগ্রামের টুর্নামেন্টে খেলে যাওয়া ১৩ জন সদস্য নিয়ে এসেছেন কোচ নিজাম মোহামেদ।
আজ তাদের অনুশীলন দেখে একটি বিষয় স্পষ্ট। আগামীকাল একাদশে স্ট্রাইকার ইব্রাহিম মাদুহিসহ স্থানীয় ফুটবলার যাঁরা খেলতে পারেন, সবাই গত বছরের দলেরই সদস্য। আর সেই দলটির বর্তমানে বিদেশি আছেন একজনই, শুরুতেই যার কথা বলা হয়েছে ডিফেন্ডার ইলসায়েদ ইসা। মিসরীয় এই ডিফেন্ডার যেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সামনে পিরামিড, ‘ওদের দলটা দেখলাম। কাউকে তেমনভাবে চিনলাম না। তবে একটা সেন্টারব্যাক (ইলসায়েদ ইসা) আছে। শেখ কামাল গোল্ডকাপে দুর্দান্ত খেলেছিল। খুবই ভালো ডিফেন্ডার।’ বলেন সাইফের ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। প্রায় সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার মিসরীয় এই ডিফেন্ডারকে শেখ কামাল গোল্ডকাপের পরেই দলে টানতে চেয়েছিল বাংলাদেশের দুই আবাহনী।

শেষ মৌসুমে মালদ্বীপ ফুটবলে বেশ দাপট দেখিয়েছে টিসি। লিগসহ আরও তিনটি টুর্নামেন্টের রানার্সআপ তারা। তবে মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় পুরো দলটি নিয়ে আসা যায়নি। যেমন এএফসি কাপের জন্য গোলরক্ষক হিসেবে নতুন নেওয়া হয়েছে বেলারুশের আসনিন দিমিত্রিকে ও এশিয়ান কোটায় নেওয়া হয়েছে কিরগিজস্তান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও মিডফিল্ডার ভ্লাসিভ আনাতোল্লিকে। অর্থাৎ সাইফের চার বিদেশির বিপরীতে টিসির তিন বিদেশি হলো একজন গোলরক্ষক, ডিফেন্ডার ও মিডফিল্ডার।

ঘরের মাঠে শেখ কামাল গোল্ডকাপের চ্যাম্পিয়ন দলকে টপকানোর জন্য কোনো কিছুই বাদ রাখছে না বাংলাদেশ প্রতিনিধিরা। চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে আট ফুটবলারের সঙ্গে মোহামেডান থেকে দলে ভিড়িয়েছেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার এনকোচা কিংসলেকে। আজকের অনুশীলন দেখে মনে হয়েছে ৪-৪-২ ফরমেশন পছন্দ সাইফ কোচের। চার বিদেশি কোটায় দুজন শেরিংহাম ও কিংসলে খেলবে স্ট্রাইকিং জুটি হয়ে। এশিয়ান কোটায় উজবেকিস্তানের উমারজনভ আকরভ খেলবে লেফট উইংয়ে ও কলম্বিয়ার মিডফিল্ডার ডেনারকে খেলানো হবে সেন্টারব্যাক হিসেবে। কিন্তু ১১ জনের বিপক্ষে ১১ জন খেললে, ঘরের সুবিধা কি আর পাওয়া যায়! তাই দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে দর্শকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ক্লাবটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ। সবকিছুর পেছনে একটাই উদ্দেশ্য, জয় নিয়েই ফিরতি পর্বের জন্য মালদ্বীপে পা রাখতে চায় তারা।