একদিন আবার ফিরে আসব

চোখে অশ্রু নিয়ে বিদায় নিলেন রামোস।ছবি: টুইটার

৬৭১ ম্যাচ, ২২টি শিরোপা।

এমন এক অধ্যায় আজ শেষ হয়ে গেল। কাগজে-কলমে ৩০ জুন পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় সের্হিও রামোস। কিন্তু কিংবদন্তিকে আজই বিদায় বলে দিল রিয়াল। যার সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে ক্লাব ছাড়লেন, সেই ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের সঙ্গে দাঁড়িয়েই বিদায় বললেন রামোস। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের আগে ক্লাবের কাছ থেকে ছোট্ট করে একটি বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানেও একটু করে কথা বললেন রামোস।

বিদায়বেলায় আরও একবার রিয়াল মাদ্রিদের প্রতি নিজের ভালোবাসা জানিয়েছেন অধিনায়ক। বলেছেন, আবারও ফিরবেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে, অন্য কোনো পরিচয়ে।

পেরেজের কাছ থেকে বিদায়ী উপহার নিয়েছেন রামোস।
ছবি: টুইটার

আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন একটু পর। তাই সাংবাদিকদের প্রশ্ন রাখার সুযোগ ছিল না। প্রাথমিকভাবে তাই শুধু ধন্যবাদই দিলেন রামোস। প্রথমেই বললেন, এটা তাঁর জীবনের ‘সবচেয়ে কঠিন দিন’। এটুকু বলেই থামতে হলো। উপস্থিত সবার করতালিটা গ্রহণ করেই রামোস একে একে ধন্যবাদ দিলেন ক্লাবকে। তাঁর কোচদের। রিয়ালের মাঠ ও মাঠের বাইরের সব কর্মীকে। তাঁর জীবনে অবদান রাখার জন্য এবং ‘তাঁকে সহ্য করার’ জন্য পরিবার, সমর্থক ও রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতিও ধন্যবাদ পেলেন।

১৬ বছরের সম্পর্কে ইতি টানছেন। চুক্তি নবায়ন ও চুক্তির মেয়াদ নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে একমত হতে না পারাকেই কারণ বলছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলো। সেসব ভুলে বিদায়বেলায় সুখস্মৃতি নিয়েই কথা বলেছেন রামোস।

রামোস যখন কথা বলছেন, রামোসের পরিবারের এক সদস্য তখন টিস্যু দিয়ে নাক মুছছিলেন। তাঁর স্ত্রী পিলার রুবিও বহু চেষ্টা করে অশ্রু আটকেছেন। তবে ব্যর্থ হয়েছেন রামোস। ভেজা চোখে বলছিলেন, ‘এটা আমার জীবনের অনেক সুন্দর একটা সময়ের সমাপ্তি। এটাকে চূড়ান্ত বিদায় বলব না, বরং এটি সাময়িক বিদায়। কারণ, আগে হোক বা পরে, আমি ফিরব। আমি রিয়াল মাদ্রিদকে ধন্যবাদ দিতে চাই। সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। বরাবর আমাকে তাঁদের চোখের মণি করে রেখেছেন তাঁরা। বার্নাব্যুতে দাঁড়িয়ে বিদায় বলতে পারলে ভালো লাগত। রিয়াল সব সময় আমার হৃদয়ে থাকবে।’

রামোসের বিদায়ের পর মার্সেলোই হবে রিয়ালের অধিনায়ক।
ছবি: এএফপি

দুজনের সম্পর্কটা বরাবরই অম্ল-মধুর ছিল। পেরেজ তাঁর প্রথম মেয়াদে তারকাপুঞ্জ গড়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। তারকা মেলায় কোনো স্প্যানিশকে পছন্দ হচ্ছিল না তাঁর। প্রথম কোনো স্প্যানিয়ার্ড হিসেবে পেরেজের নজর কেড়েছিলেন রামোস। ১৯ বছর বয়সী এক ডিফেন্ডারকে পেতে প্রায় ৩ কোটি ইউরো খরচ করেছিলেন পেরেজ। এতটা ভালো বিনিয়োগ পেরেজ তাঁর ব্যবসায়ী জীবনেও কখনো করেননি।

দুজনের মধ্যে সম্পর্ক এরপর কখনো সেরা বন্ধুর মতো ছিল, কখনো আবার দলে নাক গলানো কিংবা চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে চরম দ্বৈরথ দেখা গেছে দুজনের মধ্যে। ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বই ১৬ বছরের সম্পর্কে চিড় ধরাল। তবে বিদায়বেলায় রামোসের জন্য শুধু স্তুতি বাক্য ছিল ক্লাব সভাপতির মুখে, ‘যা অর্জন করেছেন, তার জন্য আমি গর্বিত। রিয়াল মাদ্রিদের একজন কিংবদন্তি আপনি। সবার শ্রদ্ধা ও প্রশংসা আদায় করেছেন। আমাদের সবার স্মৃতিতে থাকবেন। এ ক্লাবকে যা দিয়েছেন, এ জার্সির হয়ে লড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’