এবার পাঁচ গোল কম খেল বার্সেলোনা

রাতটা হতাশায় কেটেছে বার্সেলোনারছবি : রয়টার্স

না। এবার আর মুড়িমুড়কির মতো গোল হজম করতে হয়নি বার্সেলোনাকে। আগেরবারের দেখায় বায়ার্নের বিপক্ষে আট গোল হজম করা বার্সেলোনা এবার হজম করেছে মাত্র তিন গোল। তবে সেবার দুই গোল করতে পারলেও এবার গোলহীনই থাকতে হয়েছে কাতালানদের। বার্সার মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে এসে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। জোড়া গোল করেছেন পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি, একটি গোল টমাস মুলারের।

লিওনেল মেসির মতো কেউ একজন না থাকলে চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো বড় মঞ্চে যে ভালোই ভুগতে হয়, সেটা আজ মেসি যাওয়ার পর চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ভালোই বুঝতে পেরেছে বার্সা। ম্যাচজুড়ে বায়ার্নের গোলপোস্ট বরাবর একটা শটও মারতে পারেনি দলটা, গোল করা তো দূরে থাকুক। চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে কখনো হারেনি বার্সেলোনা, আজ সে রেকর্ডটাও আর রইল না।

চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে এই প্রথম হারল বার্সা
ছবি : রয়টার্স

তবে বায়ার্ন যেমন দুর্দান্ত খেলেছে, আজও যদি আট গোল হয়ে যেত, আশ্চর্যের কিছু থাকত না। ৩-৫-২ ছকে আজ বায়ার্নের বিপক্ষে নেমেছিল বার্সা। গোলবারে জার্মান গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের সামনে ছিলেন তিন সেন্টারব্যাক রোনালদ আরাউহো, জেরার্দ পিকে ও এরিক গার্সিয়া। এই টের স্টেগেনের কল্যাণে বেশ কয়েকটা গোল খাওয়ার হাত থেকে বেঁচেছে বার্সেলোনা। চার-চারটা সেভ করেছেন।

তিন সেন্টারব্যাকের দুপাশে দুই উইংব্যাক হিসেবে খেলেছেন সের্হি রবের্তো ও জর্দি আলবা। মাঝমাঠে সের্হিও বুসকেতস ও ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে পেছনে রেখে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেছে পেদ্রিকে। সামনে দুই স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন দুই ডাচ্‌ মেম্ফিস ডিপাই ও লুক ডি ইয়ং।

এই দুজন মিলেই করেছেন তিন গোল
ছবি : রয়টার্স

ওদিকে নতুন কোচ ইউলিয়ান নাগলসমানের অধীনে ৪-২-৩-১ ছকে নেমেছিল বায়ার্ন। গোলকিপার মানুয়েল নয়্যারের সামনে ছিলেন দুই সেন্টারব্যাক দায়োত উপামেকানো ও নিকলাস সুলে, রাইটব্যাকে বেঞ্জামিন পাভার ও লেফটব্যাকে আলফোনসো ডেভিস। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে ছিলেন দুই জার্মান ইয়োসুয়া কিমিখ ও লিওন গোরেৎস্কা। পিছে লিরয় সানে, টমাস মুলার ও জামাল মুসিয়ালাকে নিয়ে সামনে একক স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন রবার্ট লেভানডফস্কি।

প্রথম থেকেই দাপট দেখালেও প্রথম গোল পেতে বায়ার্নকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। সানের সহায়তায় দূরপাল্লার এক শটে গোলের খাতা খোলেন মুলার। যদিও সেন্টারব্যাক এরিক গার্সিয়ার গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন না হলে গোল হতো কি না, সন্দেহ আছে। বার্সার গোলকিপার টের স্টেগেন যে ঠিক দিকেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন!

এই নিয়ে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৬ ম্যাচে ৭ গোল করা হয়ে গেল মুলারের। চ্যাম্পিয়নস লিগে এর চেয়ে বেশি গোল অন্য কোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গে করা হয়নি এই আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারের। এই এক গোলের মাধ্যমে বায়ার্নের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় সাবেক কিংবদন্তি কার্ল-হেইঞ্জ রুমেনিগেকেও টপকেছেন মুলার।

৫৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান লেভানডফস্কি। ৮৫ মিনিটে আরেকটা গোল করে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। হার নিশ্চিত জেনেই কি না, শেষ দিকে মাঠে গাভি, ইউসুফ দেমির, আলেহান্দ্রো বালদের মতো আনকোরা খেলোয়াড়দের মাঠে নামান রোনাল্ড কোমান। তাতে ব্যবধান কমাতে পারেনি বার্সা। ম্যাচে বায়ার্নের দাপট যে কতটা ছিল, সেটা বোঝা যায় একটা তথ্যেই। সব মিলিয়ে ১৭টি শট মেরেছে বায়ার্ন। বার্সা মেরেছে পাঁচটা, যার একটাও গোলমুখ বরাবর ছিল না।

গ্রুপের আরেক ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছে দিনামো কিয়েভ আর বেনফিকা। ফলে প্রথম রাউন্ড শেষে সবার নিচেই পড়ে রইল কাতালানরা। পরের ম্যাচে বেনফিকার বিপক্ষে খেলতে যাবে বার্সেলোনা। দেখা যাক, সে ম্যাচে ভাগ্যবদল ঘটে কি না!