এর আগে যে দুবার বার্সা ছাড়তে চেয়েছিলেন মেসি

আগেও দুবার বার্সা ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।ছবি: রয়টার্স

হরিহর আত্মা বলতে যা বোঝায়, ক্লাব ফুটবলে মেসি-বার্সেলোনা যেন তাই-ই ছিল এত দিন। সে সুর কেটে গেছে। এখন 'স্বৈরাচারী' সভাপতির অধীনে কাতালান জার্সি গায়ে না চড়াতে পারলেই যেন বাঁচেন মেসি। এর আগে কখনো এত জোর দিয়ে বার্সেলোনা ছাড়তে চাননি এই আর্জেন্টাইন তারকা। তবে একেবারেই যে ছাড়তে চাননি, তা নয়। এর আগে অন্তত দুবার এমন হয়েছে, যখন মেসি ভেবেছিলেন, বার্সেলোনার সঙ্গে পথ আলাদা করে ফেলাটাই শ্রেয়তর।

২০১৪ সাল তখন। বার্সেলোনাকে সফল ২০১২-১৩ মৌসুম উপহার দেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে যান কোচ টিটো ভিয়ানোভা। হুট করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন পেপ গার্দিওলার সাবেক এই সহকারী। মেসিদের নতুন গুরু হিসেবে আসেন আর্জেন্টাইন ম্যানেজার টাটা মার্টিনো। কিন্তু দুঃস্বপ্নের মতো এক মৌসুম কাটান মেসিরা। একের পর এক চোট, ফর্মহীনতা, কোপা দেল দের রে'এর ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হার, চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায়, সেই অ্যাটলেটিকোর কাছেই লিগ হেরে যাওয়া - সবকিছু মিলিয়ে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন মেসি।

ওই সময়েই অসুস্থ ভিয়ানোভা সাবেক শিষ্যকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে বার্সেলোনায় থাকার জন্য রাজি করে ফেলেন। এ কথা গত বছর জানিয়েছেন মেসিদের আরেক সাবেক কোচ ও ভিয়ানোভার সহকারী জর্ডি রৌরা। রেডিও কানাল বার্সেলোনাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রৌরা বলেছিলেন, ‘মেসি ওই সময় বার্সেলোনায় থাকতেই চাচ্ছিল না। ও অন্য ক্লাবে যেতে চেয়েছিল। সে সময়টায় শারীরিক দিক থেকে টিটো খুব দুর্বল অবস্থায় ছিল। তারা এক সঙ্গে বসেছিল। যদিও আমি সেখানে ছিলাম না, কিন্তু আমি জানি তাদের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা কথা হয়েছিল।’

বার্সার সঙ্গে পথচলাটা সব সময় মসৃণ ছিল না আর্জেন্টাইন তারকার।
ছবি: এএফপি

ভিয়ানোভার সঙ্গে ওই আলোচনার পর মেসি বার্সেলোনায় থাকতে রাজি হন জানিয়ে রৌরা আরও বলেছিলেন, ‘ওই আলোচনার পর মেসি বার্সেলোনায় থাকতে রাজি হয়। আর আমরা আশা করেছিলাম সে আরও কয়েক বছর এই ক্লাবে থেকে যাবে।’ সেটাই হয়েছিল পরবর্তীতে।

দু'বছর পর আবারও ক্লাব ছাড়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেন মেসি। এবার ট্যাক্স ফাঁকির বেড়াজালে পড়ে। এই সংক্রান্ত মামলায় ২১ মাসের জন্য কারাবাসের শাস্তি পেয়েছিলেন মেসি। পরে যদিও চড়া জরিমানা দিয়ে শাস্তি এড়ান এই তারকা। আরএসিওয়ান কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লিওনেল মেসি স্বীকারও করেছিলেন এর কথা। কর সংক্রান্ত জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে স্পেনই ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।

তৃতীয়বারের মতো এবার ক্লাব ছাড়তে চাইছেন মেসি। বলা বাহুল্য, এবারই তাঁর ক্লাব ছাড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। হয়তো এবার সত্যি সত্যিই স্পেন ছাড়তে যাচ্ছেন আর্জেন্টাইন তারকা।