এরিকসেনের হৃদ্‌যন্ত্রে ‘কিক স্টার্টার’ বসানো হবে

মাঠে পড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে এরিকসেন।ফাইল ছবি: এএফপি

ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন আপাতত বিপদমুক্ত। ইউরোর দ্বিতীয় দিনে সবাইকে থমকে দিয়েছিল এরিকসেনের ঘটনা। ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমার্ধের ৪১ মিনিটে মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছিলেন এরিকসেন। জরুরি চিকিৎসক দল সিপিআর দিয়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন ডেনিশ মিডফিল্ডারকে। পারকেন স্টেডিয়ামের পাশেই ডেনমার্কের সবচেয়ে বিখ্যাত হৃদ্‌রোগের হাসপাতাল থাকার মতো কাকতালও ইন্টার মিলান মিডফিল্ডারের পক্ষে এসেছে।

একবার হার্ট অ্যাটাকের শিকার হওয়া এরিকসেনের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না। তাঁর হৃৎস্পন্দন নিয়মিত রাখার জন্য ডিফিব্রিলেটর (আইসিডি) হার্ট স্টার্টার বসানো হচ্ছে।

গত শনিবার এরিকসেনের সে ঘটনার পর দুই দিন সবাই খুব উৎকণ্ঠায় কাটিয়েছেন। সোমবার ডেনমার্কের গোলকিপার কাসপার স্মাইকেল সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন, এরিকসেন হাসছেন এবং কথা বলছেন। এরিকসেন নিজেও তাঁকে সহমর্মিতা দেখানোয় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ডেনিশ ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এরিকসেনের বুকে হৃৎস্পন্দন পর্যবেক্ষণ করার জন্য এবং জরুরি অবস্থায় হৃৎস্পন্দন ঠিক রাখার জন্য ইমপ্ল্যান্টেবল কার্ডিওভের্টার ডিফিব্রিলেটর (আইসিডি) বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

এরিকসেন মাটিতে। তাঁকে ঘিরে আছেন উদ্বিগ্ন সতীর্থরা।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

এ প্রসঙ্গে ডেনিশ ফুটবলের টুইটারে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় দলের চিকিৎসক মর্টেন বোসেন জাতীয় হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ ও এরিকসেনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। হৃদ্‌যন্ত্রের বেশ কিছু পরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে তাঁকে আইসিডি দেওয়া উচিত। হৃৎস্পন্দনে সমস্যার কারণে হার্ট অ্যাটাক হলে এ যন্ত্র দরকার হয়। এরিকসেন এ সমাধান মেনে নিয়েছেন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা এর পক্ষে মত দিয়েছেন। ক্রিস্টিয়ান ও তাঁর পরিবারকে শান্তিতে থাকতে দেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করব।’

এরিকসেন বললেন, ভালো আছি
ছবি: টুইটার

এদিকে ক্রীড়া হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জর শর্মা বলেছেন, এরিকসেন আবার মাঠে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে কথা বলার সময় নয় এখন। বরং এরিকসেন যেন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারেন, সেদিকেই নজর দেওয়া উচিত সবার। ২৯ বছর বয়সী মিডফিল্ডারকে বাঁচিয়ে রাখাই গুরুত্ব পাওয়া উচিত বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ, ‘মূল লক্ষ্য হবে, এটা (হার্ট অ্যাটাক) যেন কখনো না হয়। সেটা করতে হলে তাঁরা আইসিডি বসানোর চিন্তা করবেন। যেটা ছোট একটা যন্ত্র, যা হৃদ্‌যন্ত্রের কাছে বসানো হয়। এটা দিন ও রাতের হৃৎস্পন্দন পর্যবেক্ষণ করে এবং যদি হৃৎস্পন্দনে কোনো সমস্যা দেখা দিলে, এটা বুঝে ফেলে এবং একটা ইলেকট্রিক শক দিয়ে স্পন্দন স্বাভাবিক করে। এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য হবে। সে যেন আরও ৫০ বা ৬০ বছর বাঁচে, সেটা নিশ্চিত করতে চাইবেন তাঁরা। খেলতে পারবেন কি না, এ নিয়ে নির্ঘাত আলোচনা হবে। কিন্তু তাঁরা কী খুঁজে পাবেন, সেটার ওপর নির্ভর করবে সে সিদ্ধান্ত।’