এসে গেলেন ‘নতুন বোল্ট’

মার্কিন তরুণ স্প্রিন্ট তারকা এরিয়ন নাইটনছবি: টুইটার

ক্রীড়াজগতে প্রথাটা নতুন কিছু নয়। ‘নতুন ম্যারাডোনা’ কিংবা ‘নতুন পেলে’, এমনকি ‘নতুন মেসি’ তকমাগুলো এখনো মরেনি। সে রকম প্রতিভাবান কাউকে দেখলেই তকমাগুলো চালিয়ে দেওয়া হয়।

উসাইন বোল্টের ক্ষেত্রেও এমন হচ্ছে। জ্যামাইকান স্প্রিন্ট কিংবদন্তি ট্র্যাকে থাকতেই তাঁর মতো কাউকে দেখলে বলা হয়েছে ‘নতুন বোল্ট’।

ট্র্যাক ছাড়ার পর তাঁর মতো কাউকে খুঁজতে খুঁজতে এত দিনে পাওয়া গেল এরিয়ন নাইটনকে, সংবাদমাধ্যম (ফক্স স্পোর্টস) যাঁকে নিয়ে বলছে, এই নাইটন ছেলেটি রক্ত-মাংসের মানুষ হতেই পারেন না!

কেন? ১৭ বছর বয়সী এই মার্কিন স্প্রিন্টার বোল্টের সবচেয়ে পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছেন, আর এটা কেবল শুরু। হাইস্কুলপড়ুয়া এই দৌড়বিদ যে ভবিষ্যতে বড় কিছু হতে যাচ্ছেন, সেই নিদান অ্যাডিডাস বুঝতে পেরেই ছেলেটির বয়স ১৭ পেরোনোর আগেই তাঁর সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেছে।

তরুণ দৌড়বিদেরা ১৭ বছর পেরোনোর পর অনূর্ধ্ব-১৮ পর্যায়ের রেকর্ড নথিভুক্ত করতে পারেন। গত জানুয়ারিতে ১৭ বছরে পা রাখেন নাইটন। তার আগেই টাম্পা হিলসবরো হাইস্কুলের হয়ে পেশাদার দৌড়বিদদের কাতারে নাম লেখান তিনি।

১০০, ২০০ ও ৪x১০০ মিটার দৌড়ে বিশ্ব রেকর্ডধারী ও অলিম্পিকে আটটি স্বর্ণপদকজয়ী বোল্ট ২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ পর্যায়ে ২০০ মিটার দৌড়ে বিশ্ব রেকর্ড (২০.১৩ সেকেন্ড) গড়েছিলেন। প্যান আমেরিকান জুনিয়র অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে এই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

বোল্টের সেই রেকর্ড এই সপ্তাহে আমেরিকান ট্র্যাক লিগ মিটে নিজের করে নেন নাইটন (২০.১১ সেকেন্ড)। গত সোমবার ফ্লোরিডার জ্যাকনসনভিলে এ রেকর্ড গড়েন তিনি। বোল্টের সঙ্গে আরও একটি বিষয়ে তাঁর মিল দেখছেন অনেকে—উচ্চতায়। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার বোল্টের থেকে খুব বেশি পিছিয়ে নেই ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার নাইটন।

আমেরিকান ট্র্যাক লিগ মিটে নাইটনের কাছে হেরেছেন টোকিও অলিম্পিকে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণপদক জয়ে সম্ভাব্য ফেবারিট ট্রেভন ব্রোমেল (২০.২০ সেকেন্ড)। ২০ বছরের নিচে প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ‘১০ সেকেন্ড ব্যারিয়ার’ ভেঙেছিলেন ব্রোমেল।

সাত বছর আগে জ্যামাইকান হাইস্কুল স্প্রিন্টে রেকর্ড গড়া ঝারনেল হিউজ ও ২০১৬ অলিম্পিকে ২০০ মিটারে চতুর্থ স্থানীয় অ্যাডাম জেমিলিও হার মানেন নাইটনের কাছে।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ট্রায়াল শুরু হবে, যেখানে দৌড়ানোর যোগ্যতা অর্জন করেছেন নাইটন। ১৯৬৪ সালে জিম রায়ুনের পর ছেলেদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ মার্কিন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথলেট হিসেবে দৌড়ে অংশ নেবেন তিনি।

নাইটন এই প্রথম নজর কাড়েননি। গত আগস্টে নিজের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে (১৫-১৬ বছর) ২০০ মিটারে জাতীয় রেকর্ড ভাঙেন তিনি। অবশ্য শুধু ট্র্যাকেই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেননি নাইটন। আমেরিকান ফুটবলেও (রাগবি) বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি স্কলারশিপের প্রস্তাব পেয়েছেন।

কিন্তু গত আগস্টে সেই রেকর্ডের পর গতির ট্র্যাককেই জীবনের ভবিতব্য হিসেবে বেছে নেন নাইটন, ‘আমি ফুটবল ভালোবাসলেও এই দৌড়ের পর ট্র্যাকে নিজের ১১০ শতাংশ দিতে হবে। এটাই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে এবং এখানেই আমার ভবিষ্যৎ।’