করোনায় শুধু ফুটবলেই লোকসান ৯৩ হাজার কোটি টাকা

সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার সদর দপ্তর।ছবি: এএফপি

ক্ষতি? হ্যাঁ, ঠিক তাই। প্রাণহানি, আর্থিক লোকসান, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় লেখাপড়ার ক্ষতি—এসবই করোনাভাইরাস মহামারির অবদান (!)। শুধু খেলাধুলাতেই ক্ষতির পরিমাণ অবিশ্বাস্য। কয়েক মাস প্রায় সব খেলাই বন্ধ ছিল। তাতে পেশাদার ক্রীড়াবিদদের টান পড়েছে পেটে, যেমন ফুটবলে। করোনাকালে ফুটবলে এ পর্যন্ত আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আজ জানাল ফিফা। বিশ্বে করোনাকালে ফুটবলে আনুমানিক ১১ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৩ হাজার ২১৮ কোটি টাকা) রাজস্ব হারানোর কথা জানিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক এ সংস্থা।

করোনাকালে পৃথিবীর প্রায় সব ফুটবল ফেডারেশন আর্থিকভাবে লোকসান গুনছে। টিকে থাকতে ফিফার ১.৫ বিলিয়ন (১৫০ কোটি) ডলারের জরুরি ত্রাণ তহবিলের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্বের প্রায় ১৫০টিরও বেশি দেশের ফেডারেশন। মৌসুমের সূচিতে অদলবদল, দর্শকহীন মাঠ, টিভি স্বত্ব হারানো এসব মিলিয়ে মোট আনুমানিক রাজস্ব হারানোর পরিমাণ হিসেব করেছেন ফিফার করোনা স্টিয়ারিং কমিটির ওলি রেন।

ব্যাংক অব ফিনল্যান্ডের গভর্নরের দায়িত্বে থাকা ফিনিশ এ রাজনীতিবিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অঙ্কটা বিশাল, ফুটবল অর্থনীতির সবকিছুই মিলিয়েই এ হিসেব করা হয়েছে, এমনকি বয়সভিত্তিক একাডেমিও আছে। আগামী বছরও এর (করোনা) প্রভাব থাকবে।’

প্রতিটি দেশের অ্যাসোসিয়েশন ফিফার কাছে ১০ লাখ ডলার তহবিল চাইতে পারে। আর মেয়েদের ফুটবলের জন্য চাইতে পারে ৫ লাখ ডলার।

ফিফা গভর্নেন্স কমিটির স্বাধীন এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, জরুরি ত্রাণ তহবিলের নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। পরে ফেডারেশনগুলোর টাকা ধার চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন রেন।

তাঁর হিসেব মতে, নিট খরচের কথা ধরলে ইউরোপিয়ান ফুটবল লোকসান গুনেছে সবচেয়ে বেশি, তবে ভোগান্তির কথা ভাবলে ইউরোপের বাইরের অ্যাসোসিয়েশনগুলো ভুগেছে বেশি। যেমন দক্ষিণ আমেরিকা। গত মাসে ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া আনিয়েল্লি জানান, সদস্য ক্লাবগুলো দুই বছর মেয়াদে প্রায় ৪০০ কোটি ইউরোর বেশি রাজস্ব হারিয়েছে।

গত মার্চ থেকেই বন্ধ বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম যেন বিরানভূমি।
ফাইল ছবি

প্রতিটি দেশের অ্যাসোসিয়েশন ফিফার কাছে ১০ লাখ ডলার তহবিল চাইতে পারে। আর মেয়েদের ফুটবলের জন্য চাইতে পারে ৫ লাখ ডলার। তবে কনফেডারেশনগুলো ২০ লাখ ডলার চাইতে পারে। সর্বোচ্চ ৫০ লাখ ডলার পর্যন্ত ফিফার কাছে ধার চাইতে পারে অ্যাসোসিয়েশনগুলো।

তবে এই তহবিল নিয়ে দুর্নীতি না করে তা সঠিক উপায়ে ব্যবহার করার কথা বলেন রেন, ‘ফুটবলে দুর্নীতির কোনো জায়গা নেই। কোভিড-১৯ ত্রাণ তহবিলের কেন্দ্রবিন্দু হলো সুশাসন। প্রতিটি সদস্য অ্যাসোসিয়েশন দেশকে আমরা এ কথা বলেছি।’