কাতারকে কীভাবে থামাবে বাংলাদেশ?

দোহায় অনুশীলনে জাতীয় ফুটবল দল।
ছবি: সংগৃহীত

৪ ডিসেম্বর বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইয়ে কাতারের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সময় আছে আর তিন দিন। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের মোকাবিলায় কী কৌশলে দল সাজাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ? এখন পর্যন্ত যা খবর, পুরোনো ফরমেশনে ফিরে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

কাতারের বিপক্ষে খেলার আগে সেখানকার সেনাবাহিনী ও দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব লুসাইলের বিপক্ষেই বাংলাদেশের ফাঁকফোকর বের হয়ে গেছে। প্রথম ম্যাচে সেনাবাহিনীর বিপক্ষে ৩-২ গোলে হারের পর শনিবার লুসাইলের কাছে ১-০ গোলে হার। সেনাবাহিনী বা লুসাইলের মতো দ্বিতীয় বিভাগের দলই যখন তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষদের ছোট ভুলের সুযোগে গোল করে যাচ্ছে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের সামনে সে ভুলগুলো পুনরায় হলে কী হবে, তা তো অনুমান করাই যায়!

আর যা–ই হোক, গত অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২-০ গোলের হারের ম্যাচটির সঙ্গে দোহায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফিরতি ম্যাচের তুলনা করা যাবে না। সেদিন কর্দমাক্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেননি হাসান আল হায়দোসরা। সে জন্য প্রাপ্ত সুযোগগুলো যেমন কাজে লাগাতে পারেননি হাসানরা, ঠিক তেমনি নাবিব নেওয়াজদের সামনেও এসেছিল বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ। কিন্তু এবার নিজেদের মখমলের মতো সবুজ মাঠে বাংলাদেশের ছোট ভুলগুলোই তাঁদের জন্য গোলের সুরভি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আর ভালো ফর্মে আছে দলটি। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ২-১ গোলে হেরেছে। কোস্টারিকার সঙ্গে করেছে ১-১ গোলের ড্র।

এরই মধ্যে পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ দল। প্রথমে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলার পরিকল্পনা নিয়ে নেপালের বিপক্ষে সিরিজে সেই কৌশলে মহড়া দিয়েছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, কাতারের মতো বড় দলের বিপক্ষে এই ফরমেশনে প্রথাগত দুই স্ট্রাইকার খেলানো বিলাসিতার মতো ব্যাপার। ব্যস, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগের ম্যাচগুলোর মতোই ৪-১-৪-১ ফরমেশনে ফিরতে যাচ্ছে দল। মাঝমাঠে সংখ্যা বাড়িয়ে প্রতিপক্ষকে মাঝমাঠে আটকে রাখার চেষ্টা আরকি!

এরই মধ্যে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে এই ফরমেশনেই খেলেছেন জামাল ভূঁইয়ারা। বিশ্বস্ত সূত্রমতে এখন পর্যন্ত তিনটি পজিশনে খেলোয়াড় চূড়ান্ত করা নিয়ে দোটানায় কোচিং স্টাফ। সেন্টারব্যাকে তপু বর্মণের সঙ্গে ইয়াসিন খান নাকি রিয়াদুল হাসান? হোল্ডিং মিডফিল্ডার জামালের চাপ কমানোর জন্য মাঝমাঠে তাঁর ওপরে মানিক হোসেনের সঙ্গে সোহেল রানা না বিপলু আহমেদ? একমাত্র স্ট্রাইকার হিসেবে নাবিব নেওয়াজ না মাহবুবুর রহমান?

দোহায় অনুশীলনে জামাল ভূঁইয়ারা।
ছবি: সংগৃহীত

এই তিন প্রশ্নকে ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন আবদুল্লাহ বিন খলিফা স্টেডিয়ামের ডাগ আউটে জেমি ডে নাকি স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস? দলে প্রধান কোচের অনুপস্থিতি খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষায় কেমন পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে, তা তো আর কারও অজানা নয়। খারাপ খবর হলো, করোনার সঙ্গে এখন পেটের পীড়ায় ভুগছেন জেমি। দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত যাওয়া হবে কি না, তা নিয়ে নিজেই সন্দিহান।

কাতার ম্যাচের শেষ প্রস্তুতির জন্য আজ নিয়ে আর চার দিন সময় পাবে বাংলাদেশ। শেষ সময়ের অনুশীলনে পুরো দল কীভাবে রক্ষণ সামলাতে পারে, সেদিকেই নজর বাংলাদেশের। দোহা থেকে সহকারী কোচ মাসুদ কায়সার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাকি অনুশীলনে আমরা টিম ডিফেন্ডিংয়ের ওপর বেশি জোর দেব। উইংগুলো কীভাবে ব্লক করা যায়, এই নিয়েও কাজ করা হবে। এ ছাড়া আমরা যেহেতু প্রতি–আক্রমণনির্ভর ফুটবল খেলব, সে বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করা হবে।’