‘কাভানি’ টাইমে ইতিহাস ইউনাইটেডের

বদলি নেমেই দল জেতালেন কাভানি।ছবি: এএফপি

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসেরই অংশ হয়ে গেছে ফার্গি টাইম। ওল্ড ট্রাফোর্ডে যোগ করা সময়ে নিজেদের পক্ষে ফল আনার জন্য বিখ্যাত ছিলেন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন। আজ সাউদাম্পটনের মাঠ থেকে জয়টা যোগ করা সময়েই নিশ্চিত হয়েছে ইউনাইটেডের। তবে যেভাবে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে, আজকের জন্য অন্তত শব্দ যুগলটা ‘কাভানি টাইম’ হতেই পারে। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া দলকে ৩-২ ব্যবধানে জিতিয়ে এনেছেন এডিনসন কাভানি।

এ মৌসুমেই দলে যোগ দিয়েছেন কাভানি। পিএসজির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েও পর্যাপ্ত সম্মান পাননি। তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাড়াতে রাজি হয়নি প্যারিসের ক্লাব। মুফতেই ইউনাইটেডে এসেছেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। চ্যাম্পিয়নস লিগে এ সপ্তাহেই পিএসজির মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড। তার আগেই নিজের জাত দেখিয়ে দিলেন। ইউনাইটেড কোচ উলে গুনার সুলশারকে অনুচ্চারে জানিয়ে দিলেন, পরের ম্যাচে যেন তাঁকে একাদশেই রাখা হয়।

দল জেতানো গোল করছেন কাভানি।
ছবি: এএফপি

ঘরের মাঠে সাউদাম্পটন প্রথম আধা ঘণ্টাতেই দুই গোলে এগিয়ে গিয়েছিল। ২৩ মিনিটে ইয়ান বেডন্যারেককে দিয়ে গোল করিয়েছেন জেমস ওয়ার্ড-প্রাউজে। ৩৩ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকেই নিজেই গোল করেছেন প্রাউজে। প্রথমার্ধ শেষে তাই দুটি বদল আনতে হয়েছে সুলশারকে। গোলবারে ডেভিড ডে হেয়াকে সরিয়ে ডিন হেন্ডারসনকে নামানো হয়েছিল। অন্য পরিবর্তনটা মাঠের অন্য প্রান্তে। দলের সবচেয়ে তরুণ খেলোয়াড় ম্যাসন গ্রিনউডকে তুলে নিয়ে নামানো হলো অভিজ্ঞ কাভানিকে।

সেটাই ট্রাম্প কার্ড হয়ে গেল। ৫৯ মিনিটে প্রথম কাভানি–ঝলক। পুরোদস্তুর স্ট্রাইকার হলেও নিজের অন্যদিকটা দেখালেন কাভানি। ব্রুনো ফার্নান্দেজকে দিয়ে গোল করিয়েছেন। ১৫ মিনিট পরেই নিজের মূল কাজটাও সারলেন। প্রতিপক্ষের ভুলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন বক্সে। সেখান থেকে গোল না করার কোনো কারণ খুঁজে পাননি এই স্ট্রাইকার। তবে ম্যাচের আসল মজা বাকি ছিল তখনো। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে মাঝমাঠে একটা ফ্রি কিক পেয়েছিল ইউনাইটেড।

দলকে জিতিয়ে ছুটছেন কাভানি।
ছবি: এএফপি

ওই মুহূর্তে পাওয়া ফ্রি কিক থেকে সরাসরি ডি-বক্সে বল পাঠানোই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু ইউনাইটেড স্বাভাবিক কাজটি করেনি আর এতেই পেয়েছে সাফল্য। সাউদাম্পটন রক্ষণ ডি-বক্সে বল আসবে, এটা ধরে নিয়েই প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু বলটা গেল ডি-বক্সের বাইরে বাঁ প্রান্তে থাকা মার্কাস রাশফোর্ডের কাছে। দারুণ এক ক্রস করলেন ইউনাইটেড নাম্বার টেন। সেখান থেকে ডাইভিং হেড আর তাতেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোল।

এ গোলেই দুটি রেকর্ড হলো। প্রতিপক্ষের মাঠের এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত জয় পেয়েছে ইউনাইটেড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এভাবে চার ম্যাচে ভাগ্য বদলানোর কোনো রেকর্ড নেই। পরের রেকর্ডটি অবশ্য ইউনাইটেডের নিজস্ব। আজকের এ জয় প্রতিপক্ষের মাঠে টানা অষ্টম জয় তাদের। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে প্রতিপক্ষের মাঠে এর আগে কখনো টান আট ম্যাচ জেতেনি ইউনাইটেড।