কিংসলির খেলা দেখে খুশি বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ

গোলের পর কিংসলির উদ্‌যাপনে সঙ্গী সতীর্থরা।ছবি: প্রথম আলো

প্রতি ম্যাচের আগে প্রেসবক্স থেকে খেলোয়াড় তালিকা সংগ্রহ করে খেলা দেখতে বসেন জাতীয় দলের কোচিং স্টাফরা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে রহমতগঞ্জের ম্যাচের আগেও তার ব্যতিক্রম হলো না।

প্রেসবক্সে ঢুকেই বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস গণমাধ্যমকর্মীদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিংসলি একাদশে আছেন?’ খেলোয়াড় তালিকা হাতে নিয়ে কিংসলির নাম একাদশে দেখে বেশ খুশি হতেই দেখা গেল তাঁকে। শুধু একাদশে নাম উঠিয়ে নয়, খেলেও ওয়াটকিসের মন জিতে নিয়েছেন কিংসলি।

প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে বসুন্ধরায় নাম লেখানো কিংসলি আজই প্রথম নতুন ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছেন। গত মার্চে বাংলাদেশি পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পরও এই প্রথম মাঠে নামা নাইজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া ৩১ বছর বয়সী স্ট্রাইকারের।

স্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে কিংসলি শুধু বসুন্ধরা নয়, বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশ ফুটবল দলের সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস

বসুন্ধরার স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন তাঁকে একাদশেই রেখেছিলেন। বাংলাদেশি হয়ে প্রথম ম্যাচটি গোল করেও স্মরণীয় করে রাখলেন কিংসলি।

রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডসের বিপক্ষে আজ বসুন্ধরার ২–১ গোলে জয়ের ম্যাচে ২৯ মিনিটে কিংসলির গোলেই এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। গোলটিও ছিল দুর্দান্ত। ডান প্রান্ত থেকে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জোনাথন ফার্নান্দেজের ক্রসে বক্সের মধ্যে লাফিয়ে উঠে হেডে বল জালে জড়ান কিংসলি।

গত বছর মার্চে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের জার্সিতে সর্বশেষবার মাঠে নেমেছিলেন কিংসলি। এর পর প্রায় দেড় বছর বাদে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে মাঠে নামলেন আজ। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে বসুন্ধরায় নাম লেখালেও জাতীয় পরিচয়পত্র বা বাংলাদেশের পাসপোর্ট না পাওয়ায় এত দিন মাঠে নামা হচ্ছিল না তাঁর। খাতা–কলমের সব প্রস্তুতি শেষ করে আজ ২০ নম্বর জার্সি পরিয়ে কিংসলিকে মাঠে নামিয়ে দেয় বসুন্ধরা।

জেমি ডে ও স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস (ডানে)।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

কিংসলি মূলত প্রথাগত স্ট্রাইকার। তবে বসুন্ধরার স্প্যানিশ কোচ ব্রুজোন আজ তাঁকে লেফট উইংয়ে খেলিয়েছেন। কখনো কখনো অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে জায়গা বদল করেও খেলেছেন তিনি।

শারীরিকভাবে পুরোপুরি ফিট মনে হয়নি তাঁকে, তবে বল তাঁর পায়ে গেলে সেটি সহজে কেড়ে নেওয়া যায়নি কিংসলির কাছ থেকে। তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ অ্যাটাকিং থার্ডে বল ধরে রাখতে পারা। এতে নিজের আক্রমণভাগের সতীর্থরাও সময় আর জায়গা তৈরি করার সুযোগ পান।

ব্রাজিলিয়ান রবসনকে বদলি নামিয়ে ৬০ মিনিটে তুলে নেওয়া হয় কিংসলিকে। এই সময়ের মধ্যেই কিংসলি জয় করে নিয়েছেন জাতীয় দলের সহকারী কোচ ওয়াটকিসের মন।

আজকের ম্যাচে বাঁ উইং ধরে খেলেছেন কিংসলি।
ছবি: প্রথম আলো

ইংলিশ এই কোচ কিংসলি সম্পর্কে বললেন, ‘আমি কিংসলির খেলায় খুবই খুশি। তাঁর উপস্থিতিতে বসুন্ধরা আরও শক্তিশালী হয়েছে। শারীরিকভাবে সে শক্তিশালী হওয়ায় বলের ওপর ভালো দখল আছে।’

বাংলাদেশি বনে যাওয়া কিংসলি যে জাতীয় দলেরও পরিকল্পনায় আছেন, তার ইঙ্গিতও থাকল ওয়াটকিসের কথায়, ‘স্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে কিংসলি শুধু বসুন্ধরা নয়, বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সামনে আমাদের এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব ছাড়াও আরও তিনটি ফিফা উইন্ডো আছে। ব্যক্তিগতভাবে কিংসলিকে নিয়ে আমি খুব আশাবাদী।’

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের ম্যাচ শেষ করে প্রধান কোচ জেমি ডের সঙ্গেই ঢাকায় ফিরেছিলেন ওয়াটকিস। জেমি বুধবার ইংল্যান্ডে ছুটিতে যাওয়ায় আজ মাঠে উপস্থিত ছিলেন না। ফিটনেস ট্রেনার ইভান রাজলোগকে নিয়ে মাঠে বসে খেলা দেখলেন ওয়াটকিস। আগামীকাল ছুটিতে যাবেন তিনিও।