কিতাবের ফুটবল মাঠে থাকলেই হয়!

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>

নতুন বছরের শুরুতে গতকালই বাফুফের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ফুটবলসূচি। আশার কথা, কাগজে-কলমে আন্তর্জাতিক আর ঘরোয়া মিলিয়ে ক্যালেন্ডারজুড়ে ফুটবল আর ফুটবল।

শিরোনামেই সন্দেহের আভাস দেখে ভড়কে গেলে চলবে না। বাংলাদেশের ফুটবলের অতীত রেকর্ড জানা থাকলে এটা সন্দেহ নয়, বাস্তবতার নিরিখে নিজেদের আটকে রাখা। বার্ষিক সূচি প্রকাশ করতে জুড়ি নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। কিন্তু কেতাবে লেখা বাস্তবে মানা হয় কম। নিকট অতীতে মাঠে বল গড়ানোর চেয়ে ফেডারেশনের কথার খেলাই দেখা গেছে বেশি।

নতুন বছরের শুরুতে গতকালই বাফুফে দিয়ে দিয়েছে একটি ফুটবলসূচি। আশার কথা, কাগজে-কলমে বছরজুড়ে শুধু ফুটবল আর ফুটবল। ফিফা বা এএফসির নির্ধারিত সূচি তো আছেই, বোর্ডের নিজস্ব অনেক পরিকল্পনাও আছে ফুটবল নিয়ে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা দুটির সূচিতে গরমিল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, বিপত্তিটা বাধে বাফুফের নিজেদের আয়োজনে। তবে নতুন বছরের নতুন আশা; ২০১৯ সালে নতুন মোড়কে নিজেদের মেলে ধরবে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।

বিশ্ব ফুটবল র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৯২ স্থানে থেকে ২০১৮ সাল শেষ করেছে বাংলাদেশ। টানা চতুর্থবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপপর্ব থেকে নিয়েছে বিদায়। কিন্তু ২০১৮ সালকে ফুটবল ইতিহাসের সেরা বলে আখ্যায়িত করেছেন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এশিয়ান গেমসে কাতারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় পর্বে খেলতে পারার সুবাদেই বাফুফে সভাপতির এমন দাবি। নতুন বছরে গত বছরের ধারাটাই ধরে রাখতে চান তিনি, ‘২০১৮ সালটা সেরা ছিল। সে ধারাটাই ধরে রাখতে চাই। জানুয়ারিতেই শুরু হয়ে যাবে প্রিমিয়ার লিগ। এরপর ধারাবাহিকভাবে সেকেন্ড ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন ও থার্ড ডিভিশন শুরু হবে, যাতে খেলোয়াড়েরা ধারাবাহিকভাবে খেলে যেতে পারেন।’

বাফুফের ঘোষণা অনুযায়ী নতুন বছরে কমপক্ষে ১০টি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বছরের শেষ দিকে কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ তো আছেই। প্রাক-বাছাই না বাছাইপর্ব খেলতে হবে, সেটা এখনো চূড়ান্ত নয়। তবে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামার চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়েছেন সভাপতি, ‘জাতীয় দল আমার কাছে অগ্রাধিকার পাবে। খেলার আগে আমি খেলোয়াড়দের দুই সপ্তাহের জন্য চাই ক্লাবের কাছ থেকে। যখন ইচ্ছা দল পাঠাতে তিনটি দেশ—জাপান, কোরিয়া ও কাতার সম্মতি দিয়ে রেখেছে।’

কয়েক বছর থেকেই বছরব্যাপী ব্যস্ত থাকে মেয়েদের ফুটবল। বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র জাতীয় দল মিলিয়ে নতুন বছরেও থাকবে সেই ব্যস্ততা। সেই সঙ্গে যোগ হতে পারে মেয়েদের লিগ, ‘এই মাসের শেষে ক্লাবগুলোকে ও কিছু করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে মেয়েদের লিগ খেলার ব্যাপারে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তাদের জবাবের ওপর নির্ভর করবে মেয়েদের লিগ।’ ২০১৪ সালে শেষ আয়োজিত হয়েছিল মেয়েদের ঘরোয়া লিগ। এরপর গত বছর আয়োজন করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছে বাফুফে।

২০১৯ সালের ফুটবল সূচি নিম্নে দেওয়া হলো। এর সঙ্গে কিছু সংযোজন হওয়ার কথা রয়েছে।

জাতীয় বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র দল

ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ (১৮-২৬ মার্চ, ৩-১১ জুন)
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ (সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর)
এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্ব (বাহরাইনে ১৮-২৬ মার্চ)
সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ (আগস্ট)
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাই (১৪-২২ সেপ্টেম্বর)
সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ (সেপ্টেম্বর)
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাই (১-৬ অক্টোবর)

ঘরোয়া
প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্ব (১৮ জানুয়ারি-৩০ এপ্রিল)
চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ (৪ ফেব্রুয়ারি-১৭ এপ্রিল)
পাইওনিয়ার লিগ (মার্চ-এপ্রিল)
দ্বিতীয় বিভাগ (জানুয়ারি থেকে মার্চ)
প্রথম বিভাগ (এপ্রিল থেকে জুন)
তৃতীয় বিভাগ (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর)
প্রিমিয়ারের অনূর্ধ্ব-১৮ লিগ (১০ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর)।

নারী ফুটবল
১২-২২ মার্চ নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ মিয়ানমারে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ
১-১৯ এপ্রিল বাংলাদেশে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৮/১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ

আগস্টে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫
৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৮ ঘরোয়া ফুটবল