কীভাবে জবাব দিতে হয় দেখালেন নেইমার

জোড়া গোল পেয়েছেন নেইমার।ছবি : রয়টার্স

গত কয়েক সপ্তাহে বেশ ঝড়-ঝঞ্ঝা সহ্য করতে হয়েছে নেইমারকে। গোল পাচ্ছিলেন না, জড়িয়ে পড়েছিলেন বর্ণবাদ-বিতর্কে। সে বিতর্ক মিটে গেছে গতকাল, নিশ্চিত হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার শাস্তিটা পাচ্ছেন না পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। চিন্তামুক্ত হয়ে খেলতে নেমেই নেইমার দেখিয়েছেন নিজের ঝলক।

নেইমারের জোড়া গোলে ফরাসি লিগের ম্যাচে অজেঁ কে ৬-১ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। বাকি গোলগুলো ইতালিয়ান রাইটব্যাক আলেসসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি, ফরাসি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে, আইভোরিয়ান মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গানা গেয়ে ও জার্মান মিডফিল্ডার ইউলিয়ান ড্রাক্সলারের।

নেইমারকে আটকানোর সাধ্য ছিল না অজেঁর।
ছবি : রয়টার্স

প্রথম দুই ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর এই নিয়ে টানা চার ম্যাচে জিতল পিএসজি। পয়েন্ট তালিকায় সেটির প্রতিফলন। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে পিএসজি, এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে রেনেঁ। তাঁরা অবশ্য নেইমারদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেছে।

ম্যাচে আক্রমণভাগের পুরো শক্তি নিয়েই নেমেছিল পিএসজি। ৪-২-৩-১ ছকে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার মাউরো ইকার্দির পেছনে নেমেছিলেন নেইমার, বাঁ দিকে এমবাপ্পে, ডানদিকে ড্রাক্সলার। পেছনে দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে ইতালির মার্কো ভেরাত্তি ও আর্জেন্টিনার লিয়ান্দ্রো পারেদেস। মার্কিনিওস ও প্রেসনেল কিমপেম্বে রক্ষণভাগে জুটি বেঁধেছিলেন দুপাশে ফুলব্যাক হিসেবে খেলা ফ্লোরেঞ্জি আর মিচেল বাকারকে নিয়ে। পেছনে যথারীতি কেইলর নাভাস।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মকভাবে খেলা শুরু করে পিএসজি। চার মিনিটে এমবাপ্পের ডান পায়ের এক শট আটকে দেন অজেঁর গোলরক্ষক পল বের্নার্দোনি। ম্যাচের সাত মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। রোমা থেকে এক মৌসুমের ধারে পিএসজিতে আসা আলেসসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি ডান পায়ের দুর্দান্ত এক লব শটে দলকে এগিয়ে দেন। জটলার মধ্য থেকে হুট করে মারা বাঁকানো শটটা আটকানোর সাধ্য ছিল না বের্নার্দোনির। পিএসজির জার্সি গায়ে এটাই এই ইতালিয়ান রাইটব্যাকের প্রথম গোল।

এগারো মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে উড়ে আসা এক ক্রসে মাথা ঠিকঠাক লাগাতে পারলেও হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় অজেঁর ক্যামেরুনিয়ান স্ট্রাইকার স্তেফাঁ বাহোকেনের। ২৮ মিনিটে বাহোকেন পিএসজির গোলরক্ষক নাভাসকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি।

ম্যাচের ৩৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ছুটে আসা এমবাপ্পের পাস থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সের মাঝে দাঁড়িয়ে গোল বরাবর শট করেন নেইমার, পিএসজি এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। ৪১ মিনিটে ফাঁকা দাঁড়িয়ে থাকা ফ্লোরেঞ্জির হেড দুর্দান্ত দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন বের্নার্দোনি।

দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে আবারও নেইমার ঝলক। ডান প্রান্ত থেকে উঠে আসা ফ্লোরেঞ্জির পাস ধরে গোল করে স্কোরলাইন ৩-০ করে দেন এই তারকা।

পাঁচ মিনিট পর এক গোল শোধ করে অজেঁ। ডান প্রান্ত থেকে ফরাসি মিডফিল্ডার পিয়েরিক কাপেলের ক্রস খুঁজে নেয় ডি-বক্সে থাকা আইভোরিয়ান ডিফেন্ডার ইসমায়েল ত্রায়োরেকে। হেড করে ব্যবধান কমান তিনি।

৫৭ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ডাচ লেফটব্যাক মিচেল বাকারের ক্রস ধরে ডান পায়ের শটে দলের চতুর্থ গোল করেন জার্মান মিডফিল্ডার ইউলিয়ান ড্রাক্সলার। ৭১ মিনিটে দূরপাল্লার এক শটে ব্যবধান আরও বাড়ান পিএসজির আইভোরিয়ান মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গেয়ে।

৮৪ মিনিটে এবার গোলের খাতায় নাম লেখান এমবাপ্পে। দলের চতুর্থ গোলটার সময়ে ড্রাক্সলারকে যেভাবে সাহায্য করেছিলেন বাকার, একইভাবে এবার এমবাপ্পেকে সাহায্য করেন স্প্যানিশ উইঙ্গার পাবলো সারাবিয়া।

গোল যেন বেশি খেতে না হয়, এ জন্য পাঁচজন ডিফেন্ডারকে নামিয়েছিলেন অজেঁর কোচ স্তেফাঁ মৌলিন। লাভ হলো কোথায়!