কুতিনহোকে আর চায় না লিভারপুল

বার্সায় এখন আর মন টিকছে না কুতিনহোর। ছবি : এএফপি
বার্সায় এখন আর মন টিকছে না কুতিনহোর। ছবি : এএফপি
>অনেক আশা করে লিভারপুল ছেড়ে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন ব্রাজিল তারকা ফিলিপ কুতিনহো। দেড় বছর পর এখন সেই কুতিনহোই বার্সার মূল একাদশে জায়গা পান না। কুতিনহোকে বিক্রি করে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বার্সেলোনা। কুতিনহোর পরবর্তী ক্লাব হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে লিভারপুলের নামও। কিন্তু লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কুতিনহোকে আর দরকার নেই

ফিলিপ কুতিনহো যেভাবে লিভারপুল ছেড়ে গিয়েছিলেন, সেটি বিবেচনায় রেখে ইংলিশ ক্লাবটি ও তাদের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ ব্রাজিলিয়ানকে ফিরে পেতে চান কি না, সেটি একটি বড় প্রশ্ন বটে। এ প্রশ্নের উত্তরটা বেশ ভালোভাবেই পাওয়া গেল কাল ইএসপিএনকে দেওয়া ক্লপের এক সাক্ষাৎকারে। কুতিনহোকে চায় না লিভারপুল—স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন ক্লপ।

কুতিনহোর অনেক স্বপ্ন ছিল বার্সেলোনায় খেলার। লিভারপুলের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি নবায়ন করার বছর না পেরোতেই তাই কোচের আহ্বান, সমর্থকদের অনুরোধ উপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলেন কুতিনহো। নেইমারকে হারানোর চার মাস হয়ে গেলেও বার্সেলোনা তখনো নড়বড়ে, সেই অভাব পূরণ করতে চেয়েছে তারা কুতিনহোকে দিয়ে। আর কুতিনহো বার্সার ডাকে সাড়া দিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন পাগলের মতো। কিন্তু কাতালান ক্লাবটিতে পুড়েছে তাঁর স্বপ্ন।

লিভারপুলের ঝলক বার্সায় দেখাতে না পারার কুতিনহো এখন কাতালান দলে প্রায় ব্রাত্য। কুতিনহো যেসব পজিশনে খেলেন, সেখানে ওসমানে ডেম্বেলে, আর্থার মেলো, রাফিনহা আলকান্ত্রা—এসব খেলোয়াড়দেরই পছন্দ কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দের। তাঁর ওপর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে সম্প্রতি নিয়ে আসা হয়েছে আঁতোয়ান গ্রিজমানকেও। ফলে বেঞ্চই হয়ে গেছে কুতিনহোর ঠিকানা।

নেইমারকে ফেরাতে ব্যাকুল বার্সা কুতিনহোকে যে আর চায় না, তা সম্ভবত এখন পরিষ্কারই। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে তেমনই গুঞ্জন। কুতিনহো যে বার্সায় থাকছেন না, তার একটা বড় ‘ইঙ্গিত’ নিয়ে হাজির হয়েছে স্প্যানিশ দৈনিক এএস। বার্সেলোনায় যে স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান প্লে-মেকার, সেখান থেকে নাকি ভর্তি বাতিল করে নিয়েছেন! তা কোথায় যাচ্ছেন? নেইমারের বার্সায় ফেরার চুক্তির অংশ হিসেবে হয়তো পিএসজিতে যেতে পারেন, তবে তাতে পিএসজি ও কুতিনহো দুই পক্ষই রাজি কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

গত কয়েক দিনে স্প্যানিশ ও ইংলিশ সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন, লিভারপুলের কানেই আবার কুতিনহোর নামটা দিচ্ছেন ২৭ বছর বয়সী প্লে-মেকারের এজেন্ট কিয়া জোরাবকিয়ান। নেইমারকে ফেরানোর চুক্তিতেই পিএসজির কাছে যে কজন খেলোয়াড়কে ‘গছিয়ে দিতে’ চাইছে কাতালান ক্লাবটি, তাঁদের একজন কুতিনহো। কিন্তু পিএসজি তাতে রাজি না হলে? কুতিনহোর বার্সা ছাড়া তো প্রায় নিশ্চিতই, তাঁর লিভারপুলে ফেরার গুঞ্জন কদিন ধরে বাজার পাচ্ছে!

কিন্তু বেরসিকের মতো সকল গুঞ্জনে পানি ঢেলে দিলেন ক্লপ নিজেই। কুতিনহোকে আনার জন্য খরচ করতে চাইছে না লিভারপুল, বলেছেন ক্লপই, ‘কুতিনহোর মতো ফুটবলার যে ক্লাবে যাবে তাঁর মান বাড়িয়ে দেবে। আমি ফিলকে পছন্দ করি। অনেক ভালো একজন ফুটবলার সে। কিন্তু বিষয় সেটি নয়। ব্যাপার হলো আমরা যদি কুতিনহোকে দলে আনতে চাই তাহলে অনেক অনেক অনেক বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। আর এ মৌসুমে আমরা খামোখা বেশি অর্থ খরচ করে খেলোয়াড় আনতে চাচ্ছি না।’

কুতিনহো যে বার্সায় আদতেই কষ্টে আছেন, এ কথাটা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না ক্লপের। কারণ হিসেবে জানিয়েছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার বাড়িয়ে-চাড়িয়ে বলার প্রবণতাকে, ‘আশা করব বার্সেলোনায় সে যেন নিজের অবস্থান ফিরে পায়। কিংবা কে জানে, সে হয়তো বার্সেলোনায় সুখেই আছে। আমাদের মধ্যে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হয়। কিন্তু অতটাও নিয়মিত হয় না যে, আমি বলতে পারব সে সেখানে কেমন আছে, কীভাবে আছে। পত্রপত্রিকার খবরাখবর পড়েই জানতে হয় অনেক কিছু। পত্রপত্রিকাগুলো যা লেখে তা যদি সত্যি হতো, তাহলে তো হতোই। আমাকে নিয়ে পত্রপত্রিকাগুলো যা লেখে, সেরকম যদি তারা কুতিনহোর ক্ষেত্রেও করে থাকে, তাহলে বলতে হবে সে বার্সায় অনেক সুখে আছে, কিংবা কে জানে, হয়তো বার্সার সঙ্গে নতুন ছয় বছরের চুক্তিও করতে যাচ্ছে!’