কুতিনিওর জন্মের পর এমন কিছু দেখেনি বার্সেলোনা

আবারও লিগে হারল বার্সেলোনা।ছবি: রয়টার্স

বার্সেলোনাকে হারানোর স্বাদ দিয়েগো সিমিওনে আগেও পেয়েছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে দুবার হারিয়েছেন, হারিয়েছেন স্প্যানিশ সুপার কাপেও। কিন্তু লিগে যে বার্সেলোনাকে হারানো যায়, এটা জানাই ছিল না তাঁর। বার্সেলোনাকে না হারিয়েই লিগ শিরোপা জেতাও হয়ে গেছে তাঁর। গত ১০ বছরে কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু ২০ বারের চেষ্টাতেও বার্সাকে লিগে হারানো হয়নি তাঁর। সে অতৃপ্তি অবশেষে দূর হলো।

গতকাল ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোতে বার্সেলোনাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। বার্সার বিপক্ষে সিমিওনের প্রথম জয়টাও এসেছে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের হাস্যকর এক ভুলের সুবাদে। তবু জয় তো জয়ই। আর আতলেতিকোর ১-০ গোলের জয়ে প্রায় ভুলে যাওয়া এক স্বাদ পেয়েছে বার্সেলোনা। এমন এক স্বাদ যা সর্বশেষ তারা পেয়েছিল ১৯৯১-৯২ মৌসুমে। সময়টা কত আগে বোঝাতে একটি তথ্যই যথেষ্ট, তখনো জন্ম হয়নি দলটির সবচেয়ে দামি ফুটবলার ফিলিপে কুতিনিওর।

আন্তর্জাতিক বিরতির আগে দারুণ ছন্দ দেখিয়েছিল বার্সেলোনা। প্রথমবারের মতো একাদশে ছিলেন না মেসি। বদলি নেমেই দলকে এনে দিয়েছিলেন ৫-২ গোলের জয়। কিন্তু সে জয় লিগে বার্সেলোনার বাজে শুরুটা আড়াল করতে পারেনি। বিরতি শেষে ফিরতেই আবার ছন্নছাড়া বার্সেলোনা। লিগে গত পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি জয় বার্সার। মাদ্রিদের তিন ক্লাব—হেতাফে, রিয়াল মাদ্রিদ আর আতলেতিকোর কাছেই হেরেছে তারা। লিগে তারা এখন ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে আতলেতিকোর চেয়ে। এক ম্যাচ কম খেলে রিয়ালের চেয়ে ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে বার্সা।

১৯৯১-৯২ মৌসুমে অত বাজে শুরু করার পর রিয়ালকে এক পয়েন্টের ব্যবধানে হারিয়ে লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছিল বার্সেলোনাই।

৮ ম্যাচ শেষে ১১ পয়েন্ট কাতালানদের। এ পরিসংখ্যানই টেনে আনল ১৯৯১-৯২ মৌসুমের স্মৃতি। কারণ, মৌসুমের এ পর্যায়ে মাঝের এতগুলো বছরে কখনো এত কম পয়েন্ট পায়নি বার্সেলোনা। এবার ৮ ম্যাচে ৩ জয়ের সঙ্গে ২ ড্র ও ৩ হার। ১৯৯১ সালেই শুধু ৮ ম্যাচ শেষে এ অবস্থা ছিল। অর্থাৎ ৩ জয়, ৩ হার ও ২ ড্র। সেবার অবশ্য পয়েন্ট আরও কম ছিল। কারণ, তখন প্রতিটি জয়ের জন্য ২ পয়েন্ট পেত বিজয়ী দল।

বার্সেলোনা গোলরক্ষকের এমন ভুল নিয়মিত ভোগাচ্ছে দলকে।
ছবি: রয়টার্স

লা লিগায় এবার বেশ জমজমাট লড়াই চলছে। আতলেতিকো ছাড়া বাকি সব দলই প্রায় হোঁচট খাচ্ছে। ফলে বার্সেলোনা এখন আছে দশ নম্বরে। এক ম্যাচ হাতে আছে, ফলে একটি জয়ই আবার তাদের দুই ধাপ এগিয়ে আনতে পারবে। কিন্তু দলের পারফরম্যান্স যে আশানুরূপ নয়, সেটা স্বীকার করতে কষ্ট হয়নি কোচ রোনাল্ড কোমানের, ‘এটা খুবই দুশ্চিন্তার। বড় এক দলের এভাবে গোল খাওয়া ঠিক নয়। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে (প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে) বল আমাদের পায়ে ছিল এবং তারা গোল করল, ১-০। আমরা খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছি এবং আমরা জানতাম সুযোগ সৃষ্টি করা কঠিন হবে। আমাদের দুটো সুযোগ এসেছিল এবং তখন স্কোরলাইন ০-০ ছিল। (যদি সুযোগ নেওয়া যেত) খেলাটা পুরো বদলে যেত।’

দলের এ অবস্থার দায় নিজের কাঁধেই নিয়েছেন কোমান। আতলেতিকো থেকে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়লেও হাতে থাকা ৩০ ম্যাচ তাঁকে আশা দেখাচ্ছেন, ‘যেকোনো কোচের মতোই দলের ফলের জন্য দায়ী আমি। ব্যবধান (পয়েন্ট) অনেক বড়, কিন্তু লিগের অনেকটাই বাকি এবং অনেক খেলা বাকি।’

কোমানকে কিন্তু ১৯৯১-৯২ মৌসুমের সঙ্গে তুলনাটাই আশা জাগাবে। তখন বার্সেলোনার জার্সিটা তাঁর গায়েই ছিল। অত বাজে শুরু করার পর রিয়ালকে এক পয়েন্টের ব্যবধানে হারিয়ে লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছিল বার্সেলোনাই। এমনকি প্রথমবারের মতো ক্লাবটির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ও কিন্তু সে মৌসুমেই!