কোটানের 'স্মৃতি-জাগানিয়া' সন্ধ্যা

জর্জ কোটানের জন্য কালকের সন্ধ্যাটা একটু অন্য রকমই ছিল। তেরো বছর আগে এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তাঁকে কাঁধে তুলে আনন্দে নেচেছিলেন একদল ফুটবলার। সেবার বাংলাদেশ জাতীয় দলকে সাফের ট্রফি উপহার দিয়েছিলেন অস্ট্রিয়ান কোচ। কাল ম্যাচ শেষে যেন ফিরে এল সেই দৃশ্যই!
এবার দৃশ্যপটে দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী। ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর লি টাক-সানডে-জুয়েল রানারা প্রিয় কোচকে কাঁধে তুলে নাচতে শুরু করে দিলেন।
প্রায় পাঁচ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল আবাহনী। খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, সমর্থকদের মেতে উঠতে দেখা গেল আনন্দ-উচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙা জোয়ারে। পুরস্কার মঞ্চে, মাঠের মাঝে, আবাহনী গ্যালারির সামনে গিয়ে ট্রফি নিয়ে চলল সেলফি তোলার হিড়িক।
এমন আনন্দের দিনে কোটান ফিরে গেলেন ১৩ বছর পেছনের স্মৃতিতে, ‘আজ আমার কী যে আনন্দ হচ্ছে, তা বলে বোঝাতে পারব না। ছেলেরা যখন আমাকে চ্যাংদোলা করে কাঁধের ওপর তুলে নাচতে লাগল, মনে হচ্ছিল সেই ট্রফিটাই বুঝি জিতেছি।’
গত মৌসুমেও আবাহনীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন কোটান। কিন্তু লিগের শেষ দিকে চলে যান ইউরোপে। এবার মৌসুম শুরুতে ক্রোয়াট কোচ দ্রাগো মামিচকে নিয়ে আসে আবাহনী। কিন্তু স্বাধীনতা কাপের ফাইনালের আগেই চলে যান তিনি। এরপর কোটান এসেই বদলে দিলেন আবাহনীকে। লিগ শুরুর আগে আবাহনীর শো-কেসে শিরোপা এনে দিয়ে খুশি কোটান, ‘আবাহনী আমার হাত ধরে শিরোপা জিতেছে, এটা দারুণ খুশির খবর। কিন্তু ছেলেদের খেলায় অত খুশি হওয়ার কিছু নেই। আজ আরও বেশি গোল পাওয়া উচিত ছিল। একটা গোল কখনোই ট্রফি জয়ের নিশ্চয়তা দেয় না।’
যিনি এই মহামূল্যবান গোল এনে দিয়েছেন, সেই লি টাক তো উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে চাইলেন, ‘গত স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে হেরেছিলাম। ওই কষ্টের কথা ভুলতে পারিনি। তাই এবার লক্ষ্যই ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আমার গোলে দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলে একটু বেশিই খুশি লাগছে।’
জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড জুয়েল রানা ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রফি জিতে ভীষণ আনন্দিত, ‘স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরে অনেক কেঁদেছিলাম। এবার স্বপ্নই ছিল আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করা। শেষ পর্যন্ত আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হতে পারায় খুব খুশি।’
হেরেও অখুশি নন আরামবাগ কোচ সাইফুল বারী, ‘এই দল নিয়ে যে ফাইনাল পর্যন্ত এসেছি, তাতেই আমি খুশি। ছেলেরা পুরো টুর্নামেন্টেই ভালো খেলেছে। এই ফল লিগে আরও ভালো খেলতে সাহায্য করবে ওদের।’