কোপায় ব্রাজিলের গ্রুপ কেমন হলো?

কুতিনহো ও জেসুস থাকলেও, এবার নেই নেইমার। ছবি : টুইটার
কুতিনহো ও জেসুস থাকলেও, এবার নেই নেইমার। ছবি : টুইটার
>

কাল ভোর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসর কোপা আমেরিকা। এবারের শিরোপা কার হাতে উঠবে? স্বভাবতই ফেবারিটের তালিকায় রয়েছে ব্রাজিলের নাম। এই পরাশক্তির গ্রুপ প্রতিপক্ষ কে কে? গ্রুপটা শক্তিশালী না দুর্বল?

কোপা আমেরিকার ৪ তম আসর মাঠে গড়াতে যাচ্ছে কাল থেকে। ফুটবলের প্রাচীনতম মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা জয় করার জন্য লড়বেন মেসি, সুয়ারেজ, কুতিনহো, সানচেজরা। নেইমার না থাকায় ব্রাজিল দল একটু হলেও রং হারিয়েছে। নেইমার না থাকলেও, রিচার্লিসন, নেরেস, ফিরমিনো, জেসুস ও আর্থারের মতো খেলোয়াড়েরা আশা জোগাচ্ছেন ব্রাজিলকে। নেইমারহীন ব্রাজিল এই প্রতিযোগিতায় কেমন করতে পারবে, তার একটা নমুনা দেখা যাবে গ্রুপপর্বে। প্রথম রাউন্ডে কেমন গ্রুপ পেল ব্রাজিল?

আলোচনা শুরু করা যাক স্বাগতিক ব্রাজিল দিয়ে। তিন গ্রুপের মধ্যে ব্রাজিলের ঠাঁই হয়েছে গ্রুপ ‘এ’ তে। ব্রাজিলের গ্রুপসঙ্গী হয়েছে ভেনেজুয়েলা, পেরু ও বলিভিয়া। কাগজে-কলমে সহজ গ্রুপ বলে মনে হলেও নিজেদের দিনে তিন দলেরই সামর্থ্য আছে কিছু করে দেখানোর।

কিছুদিন আগে আর্জেন্টিনাকে প্রীতি ম্যাচে ৩-১ গোলে হারিয়ে ভেনেজুয়েলা জানিয়ে দিয়েছে, তাদের হালকাভাবে নেওয়ার দিন শেষ। টুর্নামেন্টে নিছক দলসংখ্যা পূর্ণ করার জন্য আসছে না তারা। দলে আছেন এসপানিওলে খেলা অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রবার্তো রোজালেস। মাঝমাঠের দায়িত্ব সামলানোর জন্য আছেন দলের অধিনায়ক টমাস রিঙ্কন, যিনি ইতালিয়ান লিগের অন্যতম পরিচিত মুখ, বেশ কিছুদিন খেলেছেন চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসের হয়েও। আক্রমণভাগে রয়েছেন নিউক্যাসল ইউনাইটেডের হয়ে খেলা তারকা সলোমোন রনডন। এঁদের নিয়েই স্বপ্ন দেখছে ভেনেজুয়েলা, নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোপার ফাইনাল খেলার। ২০১১ সালে সেমি পর্যন্ত গিয়েছিল দলটা, প্যারাগুয়ের কাছে পেনাল্টিতে হেরে ফাইনালে যাওয়ার সাধ মিটে যায় সেবার। এখন পর্যন্ত সেটাই কোপাতে ভেনেজুয়েলার সর্বোচ্চ সাফল্য। রিঙ্কন-রনডনদের পিঠে চড়ে ভেনেজুয়েলা ব্রাজিলকে গ্রুপপর্বে চমকে দিতে পারে কি না, দেখা যাক।

সেই ১৯৬৩ সালে একবার কোপা জিতেছিল বলিভিয়া। কোপায় এটাই এখনো তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য হয়ে আছে। এরপর ১৯৯৭ সালে একবার ফাইনালে উঠলেও রোনালদো-দুঙ্গা-কাফুদের সামনে টিকতে পারেনি তারা। ২০১৬ সালের কোপা বাদ দিলে তারপর থেকে প্রতিবার প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ গেছে বলিভিয়া। দলের সবচেয়ে বড় তারকা মার্সেলো মার্টিনস মধ্যো কয়েক বছর শাখতার, উইগান অ্যাথলেটিক, ওয়ের্ডার ব্রেমেনের মতো দলে খেলে এখন পাড়ি জমিয়েছেন চীনে। খোলা চোখে বলিভিয়াকে হারাতে ব্রাজিলের একদমই সমস্যা হওয়ার কথা না।

তুলনামূলকভাবে পেরুর শক্তিই বলিভিয়া-ভেনেজুয়েলার চেয়ে বেশি। গ্রুপে ব্রাজিলকে টক্কর দেওয়ার মতো কেউ থেকে থাকলে সেটা পেরুই। গত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ যাওয়া পেরুর কোপা আমেরিকায় রেকর্ড খারাপ না। দুইবারের কোপাজয়ী পেরু সেই ১৯৯৭ সাল থেকে নিয়মিত কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। ২০১১ সালে তৃতীয়ও হয়েছিল। কোপায় ব্রাজিলকে তিনবার হারানোর অভিজ্ঞতাও আছে তাদের। দলে আন্দ্রে ক্যারিয়ো ও জেফারসন ফারফানের মতো অভিজ্ঞ উইঙ্গার আছেন, আছেন পাওলো গেরেরোর মতো পোড় খাওয়া স্ট্রাইকার আর লুইস অ্যাডভিঙ্কুলার মতো কার্যকরী রাইটব্যাক। সব মিলিয়ে মাঝারি শক্তির একটা দল বলা যেতে পারে পেরুকে। গ্রুপে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হলে পেরুর রানার্সআপ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।