ক্রুসের এখন ঘুম হারাম হওয়া উচিত

রিয়াল মাদ্রিদ তারকা টনি ক্রুস। কাল ভালো খেলতে পারেননি।ছবি: এএফপি

আগুনটা টনি ক্রুসই লাগিয়েছিলেন। ম্যাসন মাউন্ট তার জবাব দিলেন দুভাবে—রিয়াল মাদ্রিদের জালে বল ঠেলে এবং জয়ের পর পাল্টা বাক্যবাণ হেনে। চ্যাম্পিয়নস লিগে কাল ফাইনালে ওঠার পর রিয়াল তারকা ক্রুসকে একহাত নিয়েছেন চেলসির এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে কাল সেমিফাইনাল ফিরতি লেগে রিয়ালকে ২-০ গোলে হারায় চেলসি। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানের জয়ে রিয়ালকে বিদায় করে ফাইনালে ওঠে চেলসি। ফিরতি লেগের আগে টনি ক্রুসকে চেলসির বিপক্ষে লড়াই নিয়ে প্রশ্ন করেছিল সংবাদমাধ্যম।

প্রতিপক্ষ হিসেবে চেলসির কোনো খেলোয়াড় সবচেয়ে শক্ত—এ প্রশ্নের জবাবে জার্মান তারকা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনো প্রতিপক্ষই তাঁর রাতের ঘুম হারাম করতে পারেন না, ‘আমার ১৫ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে কখনো ঘুম হারাম হয়নি। তারা (চেলসি) মাদ্রিদে দেখিয়েছে একটা দল হিসেবে খেলে থাকে। তাই নাম বলতে পারব না। তাদের জার্মান কোচ থাকাও অস্বাভাবিক কিছু না। রক্ষণে ভালো এবং আক্রমণভাগও গতিশীল, এই তো তাদের শক্তি।’

ফিরতি লেগে রিয়ালের ডান প্রান্ত দিয়ে মুহুর্মুহু আক্রমণ করেছেন মাউন্ট। প্রথমার্ধেই দুটি পরিষ্কার গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন চেলসির বয়সভিত্তিক প্রকল্প থেকে উঠে আসা ২২ বছর বয়সী তারকা। বিরতির পর ম্যাসনের গোলটা প্রাপ্যই ছিল।

দ্বিতীয়ার্ধেও কাইল হাভার্টজ, এনগোলো কান্তে ও বেন চিলওয়েলদের সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণ কিছু আক্রমণ করেন মাউন্ট। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে তাঁকে গোলের রাস্তা তৈরি করে দেন কান্তে। ফরাসি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের দারুণ পাস থেকে মাউন্টকে বল বাড়ার পুলিসিচ। সুবিধামতো জায়গায় দাঁড়িয়ে গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি তাঁর।

রিয়ালের জালে গোলে পর ম্যাসন মাউন্টের উল্লাস।
ছবি: টুইটার

চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ (২২ বছর ১৫ দিন) ইংলিশ ফুটবলার হিসেবে গোল পেলেন তিনি। ২১ বছর বয়সে গোল করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক স্ট্রাইকার ওয়েন রুনি।

জয়ের পর সিবিএস স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপচারিতায় ক্রুসকে পাল্টা খোঁচা মারেন মাউন্ট, ‘শুনলাম তাদের এক খেলোয়াড় নাকি বলেছে, কেউ তার ঘুম হারাম করতে পারে না। কিন্তু দল হিসেবে তাদের উচিত আমাদের জন্য ঘুম হারাম করা। আমাদের নিবেদন অসামান্য, জীবন দিয়ে রক্ষণ সামলাই। আমরা কিন্তু বেশি সুযোগ নষ্ট করিনি। নিখাদ খেলেছি এবং এটা ধরে রাখতে হবে।’

রিয়ালের মাঝমাঠে কাল সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি ক্রুস। মদরিচ-ক্রুস-কাসেমিরো, মাঝমাঠে রিয়ালের এই ‘ত্রয়ী’-র মধ্যে মদরিচই যা একটু দৌড়ে খেলেছেন।

মাঝমাঠ থেকে ক্রুসের ‘ট্রেডমার্ক’ বাতাসে ভাসানো নিখুঁত ক্রসও সেভাবে দিতে দেখা যায়নি। চেলসির কান্তে-মাউন্টরা মাঝমাঠে খেলার জায়গা দেননি ক্রুসকে। এভাবেই রিয়ালের আক্রমণভাগে বল জোগান কমে আসে।

রিয়ালের বিপক্ষে জয়কে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয় বলেই মনে করছেন মাউন্ট, ‘ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এটা অসাধারণ। অনেক কঠিন ম্যাচ ছিল। ওরা কেমন প্রতিপক্ষ, সেটা সবাই জানে। আমাদের সম্ভবত পাঁচ গোল করা উচিত ছিল।’

চেলসি যে পরিমাণ সুযোগ পেয়েছে গোলের, তাতে মাউন্টের শেষ কথাটা রিয়াল–সমর্থকদের জন্য নির্মম সত্যই।