গার্দিওলার সামনে নত হবেন না তাঁরা

ডান পায়ের ডিফেন্ডার খুঁজছেন গার্দিওলা।ছবি : এএফপি

গত মৌসুমে দুর্বল রক্ষণভাগের কারণে বেশ কয়েকটা ম্যাচ হেরেছিল ম্যানচেস্টার সিটি, লিগ হারিয়েছে লিভারপুলের কাছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ার্টার ফাইনালের ওপরে উঠতে পারেনি। এর আগে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে কাইল ওয়াকার, জোয়াও কানসেলো, বেঞ্জামিন মেন্দি, দানিলোকে কেনা হলেও কেউ কোচ পেপ গার্দিওলার পছন্দমতো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। জন স্টোনস, নিকোলাস ওতামেন্দিদের নিয়েও একই কথা বলা যায়। ফলে এই দলবদলে আবার টাকার থলি নিয়ে বাজারে নেমে পড়েছেন গার্দিওলা। এর মধ্যেই বোর্নমাউথ থেকে এনেছেন ডাচ ডিফেন্ডার নাথান আকেকে।

তবে রক্ষণভাগ বানানোর ক্ষেত্রে গার্দিওলার একটা অলিখিত নিয়ম আছে। সেন্টারব্যাক হিসেবে তিনি যে দুজনকে খেলান, ডান দিকে যে থাকেন, তাঁকে ডান পায়ের খেলোয়াড় হতে হয়। বাঁ দিকের খেলোয়াড়কে হতে হয় বাঁ পায়ের খেলোয়াড়। সে হিসাবে কখনোই একই পা দিয়ে খেলা দুই তারকাকে দিয়ে সেন্ট্রাল ডিফেন্সের জুটি বানান না তিনি। সিটিতে এখন যেসব সেন্টারব্যাক আছে, তাঁদের মধ্যে ফরাসি ডিফেন্ডার এমেরিক লাপোর্ত বাঁ পায়ের। ওতামেন্দি, স্টোনস, এরিক গার্সিয়া—সবাই ডান পায়ের। গত মৌসুমে মাঝেমধ্যে যে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে খেলাতেন, সে ফার্নান্দিনিও-ও ডান পায়ের। ফলে দেখা গেছে, বাঁ পায়ের লাপোর্তকে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই খেলতে হয়েছে। লাপোর্তের সঙ্গী হিসেবে কখনো ওতামেন্দি, কখনো স্টোনস, কখনো ফার্নান্দিনিও বা কখনো গার্সিয়াকে খেলিয়েছেন গার্দিওলা।

গত মৌসুমে বেশ আলো ছড়িয়েছেন কুন্দে।
ছবি : টুইটার

এই মৌসুমে লাপোর্তের ওপর চাপ কমানোর জন্য বোর্নমাউথ থেকে এসেছেন আকে। আকে বাঁ পায়ের ডিফেন্ডার। কিন্তু ওতামেন্দি, স্টোনস—কেউই ডান পায়ের ডিফেন্ডার হিসেবে এত দিন ধরে গার্দিওলাকে সন্তুষ্ট করতে পারেননি। ফার্নান্দিনিওর বয়স হয়ে যাচ্ছে অনেক, তার ওপর তিনি ডিফেন্ডারও নন ঠিক। ওদিকে গার্সিয়ার সঙ্গে চুক্তি প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে সিটির। সিটির সঙ্গে চুক্তি বাড়াতেও আগ্রহী নন তিনি, ফিরতে পারেন সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায়। গার্দিওলাও নিশ্চিত করেছেন এই কথা।

ফলে ডান পায়ের একজন সেন্টারব্যাক হন্যে হয়ে খুঁজছেন গার্দিওলা। সে লক্ষ্যে প্রথমে নাপোলির সেনেগালিজ তারকা ডিফেন্ডার কালিদু কুলিবালিকে চাইলেও আকাশছোঁয়া দাম দেখে একটু দমে গেছেন। নজর দিয়েছেন স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার তরুণ ফরাসি ডান পায়ের সেন্টারব্যাক জুল কুন্দের দিকে। কিছুদিন আগে খবর এসেছিল, এই ডিফেন্ডার সিটির সঙ্গে ব্যক্তিগত বেতনাদি নিয়ে মোটামুটি চুক্তি করে ফেলেছিলেন। তবে সম্প্রতি সেই খবর পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন সেভিয়ার ক্রীড়া পরিচালক মঞ্চি।

সেভিয়াকে ইউরোপা জেতাতে সাহায্য করেছেন কুন্দে।
ছবি : টুইটার

মঞ্চি আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিটির প্রস্তাবে সহজে গলে যাবেন না তাঁরা, ‘কুন্দে সিটির সঙ্গে ব্যক্তিগত চুক্তি করে ফেলেছে, এ ব্যাপারে আমি অনেক বেশি সন্দিহান। কারণ, সেভিয়ার সঙ্গে ওর একটা চুক্তি আছে। আমি এর আগেও বলেছি, সিটির সঙ্গে ওর কোনো ধরনের চুক্তি হয়নি। এটা সত্যি যে জুল গত কয়েক দিনে একটা বিশেষ ক্লাবকে আগ্রহী করেছে নিজের ব্যাপারে। তারা আমাদের একটা প্রস্তাবও পাঠিয়েছে। সে প্রস্তাব আমাদের ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যালোচনা করেছে, পরে বাতিল করে দিয়েছে। তারা যদি আবার কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসে, আমরা শুনব। ও সেই অনুযায়ী তাদের জবাব দেব। আমরা এ ব্যাপারে মোটেও চিন্তিত নই। কারণ, আমরা জানি, জুলের মাথায় এখন লিরয় সানে, রবার্ট লেভানডফস্কি, সার্জ নাবরি, টমাস মুলার—এসব নাম ঘুরছে।’

সেভিয়ার ক্রীড়া পরিচালক মঞ্চি।
ছবি : এএফপি

এর আগে শোনা গিয়েছিল, পাঁচ কোটি ইউরোর বিনিময়ে কুন্দে আসবেন সিটিতে। আপাতত মঞ্চির কথায় সে গুঞ্জন একটু হলেও থামবে হয়তো।

আগামী বৃহস্পতিবার রাতে উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপা লিগজয়ী সেভিয়া।