গেইলকে ছাড়িয়ে বাবর আজমের বিশ্ব রেকর্ড
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কী ফর্মটাই না চলছে বাবর আজমের!
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফেরার পর পাকিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট ‘ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে’ খেলছেন বাবর। এ নিয়ে ছয়টি ম্যাচ খেলেছেন। পাকিস্তান জাতীয় দলে টি-টোয়েন্টিতে যে পজিশনে খেলেন, ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে সেন্ট্রাল পাঞ্জাবের হয়েও সেই ওপেনিংয়েই খেলছেন বাবর।
তাতে ছয় ম্যাচে এখন পর্যন্ত দুটি ফিফটি ও একটি সেঞ্চুরি পাকিস্তান জাতীয় দলের অধিনায়কের!
ব্যাটে ছন্দ নিয়েই কাল দারুণ এক বিশ্ব রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ক্রিস গেইলকে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ৭০০০ রানের রেকর্ড এখন বাবরের।
টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সাত হাজার রান
রাওয়ালপিন্ডিতে কাল সাউদার্ন পাঞ্জাবের বিপক্ষে সেন্ট্রাল পাঞ্জাব ৭ উইকেটে জিতেছে। সাউদার্নের ১১৯ রান তাড়া করতে নেমে বাবর ৪৯ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন বাবর। ব্যক্তিগত ৪ রানের সময়ই ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৭০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন বাবর। ছুঁয়েছেন রেকর্ড গড়েই। কালকের ইনিংসটি ছিল বাবরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৮৭তম, এর চেয়ে কম ইনিংস খেলে ৭০০০ রানের রেকর্ড আর কারও নেই।
এ রেকর্ডের পথে বাবর পেরিয়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি ওপেনার ক্রিস গেইলকে। ‘মি. টি-টোয়েন্টি’ ডাকনাম পেয়ে যাওয়া গেইল ৭ হাজার রানে পৌঁছেছিলেন ১৯২ ইনিংসে। তালিকার ৩ নম্বরে ভারতের বিরাট কোহলি। ৭ হাজার রান করতে কোহলির লেগেছিল ২১২ ইনিংস।
কোন মাইলফলকে রেকর্ড কার
বাবর এই বছরটাতেই কেমন দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন, সেটি বলবে তাঁর ৬০০০ থেকে ৭০০০ রানে পৌঁছানোর গল্পও। এই বছরের শুরুর দিকেই ৬ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন বাবর। সে সময়ে দ্রুততম ৬ হাজার রানের রেকর্ডে গেইলের (১৬২ ইনিংস) চেয়ে ৩ ইনিংস বেশি নিয়ে তালিকার ২ নম্বরে ছিলেন বাবর। সেখান থেকে মাত্র ২২ ইনিংসেই বাবর পরের ১০০০ রান করে ফেললেন!
গেইলের একটু আফসোস হতে পারে, একটা ‘ধারা’ থেকে তাঁর নাম মুছে গেল আরকি! হাজার রানের মাইলফলকের প্রথম তিনটি অর্থাৎ দ্রুততম এক হাজার, দুই হাজার ও তিন হাজারে গেইল সবার শীর্ষে নন। কিন্তু দ্রুততম ৪ হাজার রান থেকে ১০ হাজার রান পর্যন্ত প্রতিটি রেকর্ডই এত দিন ছিল গেইলের দখলে। এর মধ্যে সাত হাজার রানের রেকর্ডটা হাতছাড়া হয়ে গেল।
টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান
বাবরের এই ৭ হাজার রানের মধ্যে ২২০৪ রান এসেছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে। সেখানেও একটা রেকর্ড এ বছরের এপ্রিলেই গড়েছেন বাবর। কোহলিকে (৫৬ ইনিংস) ছাপিয়ে গড়েছিলেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম দুই হাজার রানের রেকর্ড, তাঁর ইনিংস লেগেছিল ৫২টি। এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০০০ রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন ১১ জন।
রেকর্ডের আলাপে পাকিস্তানের নিজস্ব একটা রেকর্ডেরও কথা হোক। গত সপ্তাহেই ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে সেঞ্চুরি করেছেন বাবর, তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এত সেঞ্চুরি আর কারও নেই।
সেঞ্চুরি থেকে একটু পিছিয়ে ফিফটিকেও যদি হিসাবে নেন, তাহলে আবার বৈশ্বিক আরেকটা রেকর্ড জ্বলজ্বলে হয়ে উঠবে বাবরের নামের পাশে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ম্যাচ মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ১৮৭ ইনিংসের ৬৫টিতে ফিফটি বা সেঞ্চুরি করেছেন বাবর। অর্থাৎ মোট ইনিংসের ৩৪.৭৬ শতাংশই ফিফটি-সেঞ্চুরি। এই হারে পুরো বিশ্বেই তাঁর চেয়ে এগিয়ে আর কেউ নেই!