গোলপোস্ট কাঁপানোর দুঃখ রোনালদোর

স্পেনের বিপক্ষে গোলপোস্ট কাঁপানোর দুঃখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে রোনালদোকে।ছবি: রয়টার্স

সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছিল আগেই। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছিল তথ্যটি—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর তাঁর সঙ্গে নাকি আর কথা হয়নি সার্জিও রামোসের। কাল স্পেন-পর্তুগাল প্রীতি ম্যাচে তাই রোনালদো-রামোস পুনর্মিলনের আবহ ছিল। যদিও প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় তা আর পুনর্মিলন হয় না। তবে ম্যাচের ফল শেষ পর্যন্ত কাউকে হারতে দেয়নি। গোলশূন্য ড্র করেছে স্পেন-পর্তুগাল।

লিসবনের প্রীতি ম্যাচ অবশ্য হতাশ করবে রোনালদোকে। গোলপোস্ট কাঁপানোর দুঃখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পর্তুগাল তারকাকে। একই কষ্ট থাকবে রেনাতো সানচেজেরও। তিনিও গোলপোস্ট কাঁপান। কিন্তু কাজের কাজ গোলটা কেউ করতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ক্রসবারে বল মারেন রোনালদো। তাঁর দেওয়া পাস থেকে একইভাবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হন সানচেজ। পর্তুগাল সমর্থকেরা ভাবতেই পারেন, গোলপোস্টই বুঝি কাল হলো!

অথচ প্রথমার্ধে দাপট দেখিয়েছে স্পেন। খেলা শুরুর ১৭ মিনিটের মধ্যে তিনটি সেভ করেছেন পর্তুগাল গোলরক্ষক রুই প্যাত্রিসিও। এর মধ্যে দ্বিতীয় মিনিটে স্প্যানিশ স্ট্রাইকার জেরার্দ মোরেনোর গোলের প্রচেষ্টা নজরকাড়া দক্ষতায় রুখে দেন প্যাত্রিসিও। প্রথম ৪০ মিনিটের মধ্যে স্পেনের বক্সে মাত্র একবার বল পেয়েছেন রোনালদো। এ সময় গোটা পর্তুগাল দল মিলেও স্পেনের জাল তাক করে কোনো শট নিতে পারেনি। তবে যোগ করা সময়ে গোল পেতে পারত পর্তুগাল। রুবেন সেমেদোর হেড থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন হোয়াও ফেলিক্স। স্পেন-পর্তুগাল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল গত বিশ্বকাপে। সে ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছিল, হ্যাটট্রিক করেছিলেন রোনালদো।

স্পেন–পর্তুগাল কেউই কারও জাল ভেদ করতে পারেনি।
ছবি: রয়টার্স

স্পেন কোচ লুইস এনরিকের হাতে শুধু গোল করার জন্য প্রথাগত স্ট্রাইকার ছিল না। তবু ভালোই গোলের সুযোগ তৈরি করেছে এনরিকের দল। যদিও ২০১৬ ইউরোয় ইতালির কাছে হারের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হলো স্প্যানিশ আক্রমণভাগ। নেশনস কাপ সামনে রেখে পরীক্ষামূলক দল মাঠে নামিয়েছিলেন দুই দলের কোচ। ১৯ বছর বয়সী ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া, সার্জিও কানালেসকে খেলান তিনি। বেঞ্চ থেকে আদামা ত্রায়োরের অভিষেকও হয়েছে এ ম্যাচে স্পেনের জার্সিতে। পর্তুগিজ আক্রমণভাগে রোনালদো ও আন্দ্রে সিলভার সঙ্গে ছিলেন ২০ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ফ্রান্সিসকো ত্রিনকাও।

পুনর্মিলনের রাতে রোনালদোর কাছে হারেননি সার্জিও রামোস।
ছবি: রয়টার্স

প্রথমার্ধে পর্তুগিজ আক্রমণভাগের খেলা হতাশ করেছে সমর্থকদের। এ সময় স্প্যানিশ রক্ষণভাগের খোলসবন্দী হলেও ১৩বার বল পেয়েছিলেন সিলভা। কিন্তু তেমন কোনো সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেননি। প্রথমার্ধ শেষে তাঁকে তুলে নিয়ে বের্নার্দো সিলভাকে মাঠে নামান পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। এরপর ধার বাড়ে পর্তুগিজ আক্রমণভাগের। কিন্তু গোলটা আর হয়নি। ক্রসবার বাধা হয়ে দাঁড়ানোর দুঃখটা থাকবে রোনালদোর মনে।

ম্যাচ শেষে রোনালদো ও পেপেকে নিয়ে একটি ছবি টুইট করেন স্পেনের তারকা ডিফেন্ডার রামোস। রিয়াল মাদ্রিদে দুজন ছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের সাবেক সতীর্থ। টুইটে রামোস লেখেন, ‘আমরা যেখান থেকে ছেড়ে গিয়েছিলাম, এখনো সেখানেই আছি। বন্ধুরা, তোমাদের দেখে ভালো লাগছে।’