চাকরি পাকা করে বার্সেলোনা সভাপতিকে ধুয়ে দিলেন পিকে
চ্যাম্পিয়নস লিগে গত মৌসুমের বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে হারে বার্সেলোনা। জেরার্ড পিকে তখন দলের ভালোর জন্য ক্লাব থেকে চলে যাওয়ার মতো আত্মত্যাগের কথা বলেছিলেন। তারপর থেকেই মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। এর মধ্যে তো কত কিছু ঘটে গেল! লিওনেল মেসি বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, ক্লাব সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে কথা বললেন। নানা জটিলতায় মেসি আবার সিদ্ধান্তও পাল্টালেন। এদিকে বার্সা সমর্থকেরা বার্তোমেউকে হটাতে অনাস্থা ভোট নিয়ে প্রচারণা শুরু করল। আশ্চর্য! পিকে তখনো মুখে খিল এঁটে বসে ছিলেন!
বার্সা ডিফেন্ডার সাধারণত এমন নন। যে কোনো ঘটনায় কিংবা বড় ম্যাচের আগে পিকের মুখে কথার খই ফোটে। গত সপ্তাহে বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছেন। ওদিকে আগামীকাল এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। এমন মুহূর্তেই যে কথা বলতে ভালোবাসেন পিকে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘লা ভ্যানগার্দিয়া’তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিকে জানালেন, গত মৌসুম শেষে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেসব ‘হজম’ করতে তাঁর সময় লেগেছে। ছুটিতে নিজেকে মানসিকভাবে ধাতস্থ করেছেন আগে। এরপর কাল মর্যাদার ‘এল ক্লাসিকো’ লড়াইয়ের আগে পিকে মুখ খুললেন সেই চেনা সুরেই। বার্সা সভাপতিকে স্রেফ ধুয়ে দিয়েছেন, কথা বলেছেন মেসির বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ নিয়েও।
‘বার্সাগেট’ কেলেঙ্কারি নিয়ে কথা বলেছেন ৩৩ বছর বয়সী এ ডিফেন্ডার। সেই যে স্পেনের একটি রেডিও ফাঁস করেছিল, ক্লাবের ওপর একাধিপত্য জারি করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টাকা খরচ করে খেলোয়াড়দের নিন্দা করার দায়িত্ব কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্পণ করেছিল বার্সা। কাতালান ক্লাবটির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও পিকে ধুয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের সমালোচনা করতে ক্লাবের টাকা খরচ করাটা বর্বরোচিত।’
ক্লাব অফিশিয়াল হউমে মাসফেরে ছিলেন খেলোয়াড় এবং তাদের পরিবারবর্গের নিন্দা করার প্রজেক্টের দায়িত্বে। ভ্যানগার্দিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে পিকে বলেন, ‘বার্তোমেউয়ের কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি বলেছিলেন “জেরার্ড আমি জানি না”, কথাটা বিশ্বাস করেছিলাম। পরে দেখি এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি এখনো ক্লাবে আছেন, এটা ভীষণ কষ্টকর।’
গত আগস্টে বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেসি। বুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে তা জানিয়েছিলেন ক্লাবকে। এ নিয়ে নানা জটিলতার পর সিদ্ধান্ত পাল্টান মেসি। তখন বার্সা সভাপতির ভূমিকা নিয়ে ভীষণ সমালোচনা হয়েছিল। পিকে জানালেন, তিনি সভাপতি হলে ভূমিকাটা অন্যরকম হতো, ‘আমি সভাপতি হলে অন্যরকম ভূমিকা নিতাম। লিওকে বলেছিলাম, একটু অপেক্ষা করো। তখন এ নিয়ে তার সঙ্গে তেমন কথা হয়নি। ভেবেছিলাম এটা তাঁর সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। মনে আছে শুধু এটুকু বলেছিলাম; “মাত্র একটা বছরের ব্যাপার, এরপর তো নতুন কেউ (সভাপতি) আসবে”।’
২০২৪ সাল পর্যন্ত বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন পিকে। তবে চুক্তি নবায়ন করা মানেই যে ক্লাবের ভুল নিয়ে কথা বলা যাবে না, এ নীতিতে বিশ্বাসী নন পিকে। তাই ক্লাবের সমালোচনায় আরও যোগ করেছেন, ‘আমি নিজেকেই প্রশ্ন করেছি, ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়, যাকে পেয়ে আমরা ধন্য, সে কীভাবে হুট করে একদিন বুরোফ্যাক্স পাঠিয়ে ক্লাব ছাড়তে চায়, কারণ সে মনে করে ক্লাব তার কথা শুনছে না? এটা স্তম্ভিত করে দেয়। জানি না কী ঘটছে। লিও, সবকিছুর প্রাপ্য। স্টেডিয়ামে (ক্যাম্প ন্যু) যে কোনো স্পনসরের আগে তার নাম থাকা উচিত।’