চেহারা দেখিয়েই পাবেন ৪৫০ কোটি টাকা!

বেকহাম এখনো স্টাইল আইকন।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ডেভিড বেকহাম কেমন খেলতেন? তাঁর সময়ের সেরা ফুটবলারদের একজন ছিলেন, এটা নিশ্চিত। তবে কখনো কিংবদন্তি পর্যায়ে যাওয়ার মতো খেলোয়াড় ছিলেন না। কিন্তু নিজের সময়ের সেরা তারকা ফুটবলার মানা হতো তাঁকেই। কারণ, শুধু পায়ের স্কিল থাকলেই চলে না, নিজেকে অন্যের সামনে ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরার ব্যাপারটাও প্রয়োজন হয় তারকাদের। আর সে ক্ষেত্রে ইংলিশ মিডফিল্ডারের ধারেকাছেও ছিলেন না কেউ।

জনহিতকর কাজেও অংশ নেন বেকহাম।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ইংলিশ খেলোয়াড় হিসেবে এমনিতেই মিডিয়ার আদিখ্যেতা তাঁর পক্ষে পেয়েছিলেন। সুদর্শন ফুটবলার, যৌন আবেদনে অনেক মডেলকেও হার মানাতেন। জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিখ্যাত স্পাইস গার্লের ‘পশ’—ভিক্টোরিয়াকে। বেকহাম নামটা এখনো তাই অনেক বড় এক ব্র্যান্ড। এ কারণেই তাঁর সময়ের অন্য ফুটবলাররা যেখানে আড়ালে চলে গেছেন বহু আগেই, সেখানে এখনো বর্তমান তারার মতোই জ্বলজ্বল করেন বেকহাম। এখনো বর্তমান তারকা ফুটবলারদের মতোই তাঁকে গণনায় রাখে স্পনসররা। সেটা আরও একবার টের পাওয়া গেল ফিফা ২১-এর সুবাদে। জনপ্রিয় ভিডিও গেম ফিফার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইএ স্পোর্টস ২০২১ সালের জন্য বিশেষ এক এডিশন বা সংস্করণ আনছে। ‘ফিফা ২১ বেকহাম এডিশন’ নামে এই গেমের অংশ হতে রাজি হওয়ায় বেকহামকে ৪ কোটি পাউন্ড (৪৫০ কোটি টাকার বেশি) দিয়েছে ইএ স্পোর্টস।

নিজের ব্র্যান্ড মূল্য ভালো জানা আছে বেকহামের।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ইমেজ স্বত্বের মূল্যই ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে বেকহামকে রিয়াল মাদ্রিদে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলেছিল। ফুটবলীয় দিক থেকে নিজের শেষ মৌসুমের আগে সে সিদ্ধান্তকে কখনো সঠিক প্রমাণ করতে পারেননি বেকহাম। কিন্তু আর্থিক দিক থেকে রিয়ালকে বলশালী করে তুলেছিল শুধু বেকহাম নামের ব্র্যান্ড। নিজের ব্র্যান্ডকে নিজের কাজেও লাগাতে জানেন বেকহাম। এ কারণেই রিয়াল থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ইউরোপের কোনো ক্লাব নয়, বেছে নিয়েছিলেন লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাক্সিতে। তাঁকে পেয়ে মেজর লিগ সকারের খুব লাভ হয়েছিল, এ দাবি করা কঠিন। কিন্তু ‘পশ স্পাইস গার্লে’র জীবনসঙ্গীর পরিচয়টা হলিউডে ঠিকই কাজে লেগেছিল বেকহামের।

২০১৯ সালে মিরর জানিয়েছে, ডেভিড ও ভিক্টোরিয়ার সম্পত্তির পরিমাণ ৯০ কোটি ইউরো ছাড়িয়েছে। সেটা আরও বাড়ানোর পথে আছেন। ইন্টার মিয়ামি নামের একটি ফুটবল ক্লাব বানিয়েছেন। এখনো বিশ্বের বড় সব ব্র্যান্ড ৪৫ বছর বয়সী বেকহামকে নিজেদের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে পেতে চায়। সেটা আরও একবার বোঝা গেল। ২০১৩ সালেই অবসরে চলে যাওয়া বেকহামকে নিজেদের ২০২১ সংস্করণের কভারের তারকা হিসেবে ব্যবহার করবে ইএ স্পোর্টস। ফিফার কিংবদন্তি সিরিজে পাওয়া যাবে বেকহামকে। ফুট (ফিফা আলটিমেট টিম) ও ভোল্টা (স্ট্রিট ফুটবল) ছাড়াও ফিফাতেও বেকহামকে নিয়ে খেলার সুযোগ পাবেন ফুটবলপ্রেমীরা। ২৩ বছর পর ফিফার কভারে নিজেকে আবিষ্কার করবেন বেকহাম। আর সে সুবাদে তাঁর ব্যাংক ব্যালান্সটাও এক লাফে বেড়ে যাচ্ছে অনেক।

এ ব্যাপারে কদিন আগেই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন বেকহাম নিজেই। নতুন গেমে তাঁর পা থেকে কেমন জাদু দেখা যাবে, তার একটি নমুনা ভিডিও দিয়ে লিখেছেন, ‘ফিফা ২১...নিজের পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার মাঠে নামতে দেখার জন্য তর সইছে না! কে জানে এবার হয়তো রোমিও আর ক্রুজ (মেজ ও ছোট ছেলে) ভাববে তাদের বাবাও জোশ!’

পন্যদূত হিসেবে বেকহামের আবেদন কমেনি।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ডেইলি মেইলের দাবি, তিন বছরের চুক্তিতে ইএ স্পোর্টস থেকে চার কোটি পাউন্ড নিচ্ছেন বেকহাম। বেকহামের কাছের এক সূত্র মেইলকে বলেছে, ‘বেকহাম ব্র্যান্ডের জন্য দারুণ এক সংযুক্তি এটা। আর জীবনে এত আরামে কখনো অর্থ আয় করেনি সে।’

কথাটায় ভুল নেই। গেমে নিজের চেহারা দেখানোর জন্য বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড পাচ্ছেন বেকহাম। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকার সময় বছরে ৫০ লাখ পাউন্ড পেতেন বেকহাম। আর ২০০৭ সালে অবিশ্বাস্য অঙ্কের বিনিময়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে গিয়েছিলেন বেকহাম, যে অঙ্ক তখন ইউরোপে পেতে অনেকেরই কষ্ট হতো। সেখানেও ৫ বছরে ২ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড পেয়েছিলেন বেকহাম।
এখন তো মাঠে না নেমেই তার দ্বিগুণের বেশি আয় করবেন বেকহাম!