চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে চেয়ে দলবদলের ইঙ্গিত কেইনের

চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে চান কেইন।ছবি: রয়টার্স

হ্যারি কেইন দল বদল করতে চান। হ্যারি কেইন দল বদল করতে পারেন—এমন কথা চার-পাঁচ বছর ধরে বহুবার শোনা গেছে। শীর্ষস্থানীয় এক ফরোয়ার্ড যিনি খেলা তৈরিতেও অংশ নেন, এমন একজনকে পরাশক্তিরা পেতে চাইতেই পারে। কিন্তু শৈশবের ক্লাব কোনোভাবেই ছাড়তে চাননি কেইন। নিজের ক্লাবের হয়েই কিছু জেতার আনন্দ অন্য ক্লাবে গিয়ে পাবেন না।

ইংলিশ অধিনায়কের ধৈর্য অবশেষে শেষ হয়ে এসেছে। জোসে মরিনিও ক্লাবের কোচ হয়ে আসার পর ভেবেছিলেন এবার যদি ট্রফি–ভাগ্য ফেরে। কিন্তু মরিনিও টটেনহামকে কিছু জেতাতে ব্যর্থ হয়ে চাকরি খুইয়েছেন। ওদিকে আগামী মৌসুমেও চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলা হবে না কেইনের। তাঁর দল যে শীর্ষ চারে জায়গা পাচ্ছে না এবারও। কেইন তাই দল ছাড়ার ব্যাপারে নিজের মত জানিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে চান, খেলতে চান বড় বড় ম্যাচ।

কেইন আর থাকবেন না টটেনহামে?
ছবি: রয়টার্স

হ্যারি কেইনকে ঘিরে দলবদলের গুঞ্জন নতুন নয়। রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নাম তো বরাবরই ছিল। গত কিছুদিনে সে তালিকায় যোগ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসির নামও। এমনকি পিএসজির দায়িত্বে সাবেক কোচ মরিসিও পচেত্তিনো থাকায়, ফ্রান্সেও তাঁকে দেখার সম্ভাবনা বাড়ছে। এর মাঝেই গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢাললেন কেইন। স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘আমি বড় বড় ম্যাচ খেলতে চাই। এ মৌসুমে আমি চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলা দেখছিলাম, ইংলিশ দলগুলো অসাধারণ করছে এবং এ ম্যাচগুলোতে আমি খেলতে চাই।’ ইংল্যান্ডে জোর গুঞ্জন, দল বদলালে ইংল্যান্ডেরই কোনো ক্লাবকেই বেছে নেবেন কেইন। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অধিনায়কও তেমনটাই বলে দিলেন।

২৭ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু নামের পাশে এখনো কোনো বড় বা ছোট—কোনো ধরনের শিরোপা জেতা হয়নি। এর আগেও সাবেক ফুটবলাররা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন দল বদলানোর। ক্যারিয়ার শেষে কোনো সাফল্য না পাওয়ার আক্ষেপে পোড়ার ব্যাপারে তাঁকে সতর্ক করেছেন অনেকে। অবশেষে কেইন বাস্তবতা টের পাচ্ছেন, ‘ক্যারিয়ারে এমন এক সময়ে এসেছি, যেখানে কোথায় আছি, সেটা ভেবে দেখা দরকার। শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হবে। আমার কেমন লাগছে, আমার জন্য, আমার ক্যারিয়ারের জন্য কোনটা ভালো।’

সন-কেইন জুটি এবার জমে উঠেছিল।
ছবি: রয়টার্স

কেইনকে কেউ নিতে চাইলে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে। টটেনহাম সভাপতি ডেনিয়েল লেভি বরাবরই দর-কষাকষির জন্য বিখ্যাত। রিয়াল মাদ্রিদ লুকা মদরিচ ও গ্যারেথ বেলের ক্ষেত্রে সেটা টের পেয়েছিল। নিশ্চিত হয়ে যাওয়া দলবদলেও সর্বোচ্চ আদায় করে নেওয়ার চেষ্টায় শেষ দিন পর্যন্ত টেনেছিলেন সেই দলবদলগুলো। কেইনের ক্ষেত্রেও এমনটাই হবে। তবে লেভির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দলবদলের পথটা একটু সহজ করে নিতে চাইলেন কেইন, ‘উনি আমার সঙ্গে দারুণ আচরণ করেছেন। সব সময় আমাকে ভালো চুক্তি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। যখন ২১ বছর বয়স ছিল চার-পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু আমি ভালো করায় চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছেন। উনি আমার প্রতি উদার ছিলেন, আমাদের মধ্যে সব সময় ভালো সম্পর্ক ছিল।’

এরপরই সম্ভাব্য আগ্রহী ক্লাবগুলোকে নিজের সম্ভাব্য দামটা জানিয়ে দিয়েছেন কেইন, বলে দিয়েছেন কেমন প্রস্তাব নিয়ে লেভির কাছে যাওয়া উচিত আগ্রহীদের, ‘আপনি কখনো বলতে পারবেন না সভাপতি কী ভাবছেন। হয়তো তিনি আমাকে বিক্রি করতে চান। তাঁর মনে হতে পারে, “যদি তোমাকে বিক্রি করে ১০ কোটি পাউন্ড পাই, তাহলে কেন নয়?” আর আমার দাম তো দুই বা তিন বছর পর এত থাকবে না। আমি এই ক্লাবকে জীবনের ১৬ বছর দিয়েছি, তাই আশা করি আমরা একটা ভালো, সৎ আলোচনায় বসতে পারব এবং দেখব কী অবস্থা হয়।’

টটেনহামের হয়ে ৩৫৫ ম্যাচে ২২০ গোল করা কেইন সতীর্থদের দিয়ে ৪৬টি গোলও করিয়েছেন। ১০ কোটি পাউন্ডে তাঁকে পেতে যেকোনো ক্লাবেরই আগ্রহ থাকার কথা!