জন্মদিনে মেসির বাঁ পা চাইলেন রিয়াল তারকা

মেসির বাঁ পায়ে নজর পড়েছে হ্যাজার্ডের।ছবি: রয়টার্স

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এ নাম দুটি পাশাপাশি বসা মানেই যেন একটা দা-কুমড়া সম্পর্কের আবির্ভাব হয়ে যায়। স্প্যানিশ দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে লড়াইয়ের ঝাঁজ বরাবরই ছিল। এই শতাব্দীতে পেপ গার্দিওলা-জোসে মরিনিও এবং মেসি-রোনালদো সেই ঝাঁজটা বাড়িয়ে দিয়েছেন বহু গুণ।

রোনালদো রিয়াল ছেড়ে গেছেন আড়াই বছর হয়ে গেছে, তবু এখনো তাঁর হয়ে বাগ্‌যুদ্ধে নামেন রিয়াল সমর্থকেরা। আর ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে নিয়ে গর্বিত বার্সাভক্তরাও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুদ্ধে নামেন।

ওদিকে খেলোয়াড়েরা কিন্তু বরাবরই মাঠের খেলাটা মাঠেই রেখে আসেন। একে অন্যের প্রতি সম্মান জানানোর সুযোগ পেলেই তা জানাতে কখনো কুণ্ঠিত হতে দেখা যায় না তাঁদের। বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের মধ্যে সম্পর্ক মরিনিও যুগের পরই আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। তাই প্রকাশ্যেই অন্য ক্লাবের কিংবদন্তির প্রশংসা করেন। তাঁদের প্রতিভায় মুগ্ধ হওয়ার কথা জানান। এডেন হ্যাজার্ড নতুন করেই যেমন মেসির প্রতি মুগ্ধতার কথা জানালেন এক সাক্ষাৎকারে। জন্মদিনের উপহার হিসেবে মেসির বাঁ পা চেয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের নাম্বার সেভেন।

দারুণ সব ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন হ্যাজার্ড।
ছবি: এএফপি

দুর্দান্ত এক বাঁ পা দিয়ে ফুটবল বিশ্বকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন লিওনেল মেসি। মুহূর্তের মধ্যে খেলা বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, ড্রিবলিং দিয়ে জমাট রক্ষণকে ঘোল খাওয়াতে জানেন। আর যখন কোনো কিছুতেই কাজ হয় না, তখন জাদুকরি বাঁ পায়ের আচমকা কোনো শটে গোল বের করে নেন। এমন এক পায়ের ফুটবলে মুগ্ধ না হয়ে পারা কঠিন। ফুটবল বিশ্বে সেরা ড্রিবলারদের একজন হ্যাজার্ডও তাই মেসিতে মুগ্ধ।
গতকাল ছিল রিয়াল মাদ্রিদের বেলজিয়ান ফরোয়ার্ডের ৩০তম জন্মদিন। বেলজিয়ান সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান আরটিবিএফ হ্যাজার্ডের কাছে জানতে চেয়েছিল জন্মদিনে মেসির খেলার কোন দিক উপহার পেতে চান। খুব সংক্ষেপেই হ্যাজার্ড বলেছেন, ‘মেসির বাঁ পা।’

মেসির বাঁ পা এর আগেও একজন চেয়েছিলেন। ২০১৫ সালে ব্যালন ডি’অরে গিয়ে নেইমার বলেছিলেন, তিনি মেসির বাঁ পা আর রোনালদোর ডান পা চান। তো, হ্যাজার্ডের কি রোনালদোর ডান পা পেতে ইচ্ছা জাগে না?

রোনালদোর কাছ থেকে জেতার তীব্র ইচ্ছা পেতে চান হ্যাজার্ড।
ছবি: রয়টার্স

হ্যাজার্ড রোনালদোর কাছ থেকে জন্মদিনের উপহার হিসেবে চেয়েছেন অন্য কিছু। যে ক্ষমতা প্রজন্মের সেরা খেলোয়াড়ের দৌড়ে মেসির সঙ্গে পাল্লা দেওয়াচ্ছে রোনালদোকে। ৩৬-এ পা রেখেও এখনো তরুণ ফুটবলারদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া রোনালদোর কাছে হ্যাজার্ডের চাওয়া, ‘তাঁর জেতার তৃষ্ণা, শিরোপা জেতার জন্য তাঁর যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা এবং সব সময় গোল করার ইচ্ছা।’

রিয়ালে দেড় মৌসুম কাটিয়ে দিলেও এখনো হ্যাজার্ডের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি তাঁর ক্লাব। চেলসিতে থাকার সময়ও তাঁর গোলক্ষুধা যে খুব বেশি ছিল এমন নয়। তবু রিয়ালের জার্সিতে একটু বেশিই যেন ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিয়েছে তাঁর। রোনালদোর গোল করার তীব্র ইচ্ছাটা হ্যাজার্ডের ওপর ভর করলে রিয়াল মাদ্রিদের সবাই খুশি হয়ে উঠবেন নিঃসন্দেহে।

কোচের কাছ থেকেও সম্ভব হলে কিছু নিতেন হ্যাজার্ড।
ছবি: রয়টার্স

জন্মদিনে হ্যাজার্ড আর একজনের কাছ থেকে কিছু চেয়েছেন। আর সেটা হলো তাঁর কোচ জিনেদিন জিদান। জিদানের কাছ থেকে কী চান, এমন প্রশ্নে বেশ দারুণ এক কথা বলেছেন, ‘তাঁর উঁচু মান। আমার মান ভালো, তাই না? কিন্তু উনি, ওনার মান অনেক বেশি।’

তিন তারকা থেকে তিনটি ক্ষমতা নেওয়া তো সম্ভব হবে না হ্যাজার্ডের পক্ষে, কিন্তু একটি সম্ভাব্য ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন। ফুটবল বিশ্বে কার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা, এটাও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এ প্রশ্নের উত্তরে আর্জেন্টিনার এক দীর্ঘশ্বাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন হ্যাজার্ড। এই বেলজিয়ান প্লেমেকারের উত্তর, ‘যদি জিদান বা থিয়েরি অঁরির সঙ্গে কাজ না করতাম, তাহলে তাঁদের কথা বলতাম। কিন্তু একজন খেলোয়াড় যার সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি, দেখা করতে চাই এমন একজন হলেন রিকেলমে (হুয়ান রোমান)। যখন ছোট ছিলাম, তখন আমি তাঁর ভিডিও দেখতাম। তাঁর সঙ্গে মাঠে কখনো দেখা হলে বা কখনো শুধু কথা বলতে পারলে খুশি হতাম। এটা দারুণ হতো।’