জামাল উজ্জ্বল ল্যান্ডিংয়ে

একই ছবিতে শেখ জামালের তিন গোলদাতা। হ্যাটট্রিকের পথে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ল্যান্ডিং একটু বেশিই খুশি (বাঁয়ে)। ওয়েডসন আর এনামুলকে দেখেও অবশ্য মনে হচ্ছে গোলটি বুঝি তাঁদের কেউ একজন করেছেন। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l ছবি: জাহিদুল করিম
একই ছবিতে শেখ জামালের তিন গোলদাতা। হ্যাটট্রিকের পথে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ল্যান্ডিং একটু বেশিই খুশি (বাঁয়ে)। ওয়েডসন আর এনামুলকে দেখেও অবশ্য মনে হচ্ছে গোলটি বুঝি তাঁদের কেউ একজন করেছেন। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l ছবি: জাহিদুল করিম

উত্তর বারিধারার বিপক্ষে সহজ জয় ধরে নিয়েই মাঠে নেমেছিল শেখ জামাল। তবে স্কোরলাইন ৬-২ হবে এতটা হয়তো ভাবেনি ফেডারেশন কাপের গত দুবারের চ্যাম্পিয়নরা। একতরফা এ ম্যাচটির পর শেখ রাসেল ও চট্টগ্রাম আবাহনীর লড়াইটা হলো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঠাসা। ১-১ স্কোরলাইনই সেটির প্রমাণ।
স্বাধীনতা কাপে শেখ রাসেল-চট্টগ্রাম আবাহনী সেমিফাইনালটার নিষ্পত্তি হয়েছিল টাইব্রেকারে। ৪-২ গোলে ভাগ্যপরীক্ষায় উতরে যাওয়া চট্টগ্রাম আবাহনী শেষ পর্যন্ত ফাইনালও জিতে ঘরে তোলে প্রথম ট্রফি। সেই সাফল্যের দুই মাস পর খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই আবার চট্টগ্রাম আবাহনীর সামনে শেখ রাসেল। এবং যথারীতি ম্যাচটি ড্র।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর জার্সিতে মৌসুমে প্রথম মাঠে নামলেন মামুনুলরা। জামাল ভূঁইয়া প্রথম গায়ে তুললেন শেখ রাসেলের জার্সি। এই খেলোয়াড়েরা ফিরে আসায় দুই দলের রং বদলেছে কিছুটা হলেও। খেলায়ও এসেছে গতি। সেটিরই প্রভাবে পঞ্চম মিনিটেই বক্সের ওপর থেকে মাপা শটে ইব্রাহিম এগিয়ে নিলেন চট্টগ্রাম আবাহনীকে। মনে করিয়ে দিলেন আবাহনীর বিপক্ষে গত মৌসুমে মোহামেডানের জার্সিতে লিগে তাঁর দুর্দান্ত গোলটির কথা। তবে ৫৫ মিনিটে নাসিরের ক্রসে ইকাঙ্গার হেডে হলো ১-১। বাকি সময়ে গোলের জন্য দুই দলের মরিয়া চেষ্টা গেছে বিফলে।
দিনের প্রথম ম্যাচটি অবশ্য গোলে ভেসেছে। স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালে আবাহনীর কাছে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল শেখ জামাল। মাঠে ও মাঠের বাইরে নানা সংকটের মধ্যে সেই দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে উঠল ঠিক ৬ গোল করেই।
স্বাধীনতা কাপে শেখ জামালের ১২ গোলের মাত্র একটি করেছিলেন ল্যান্ডিং। ৩ গোল করে কাল দিনের সব আলোই কেড়ে নিলেন সেই ল্যান্ডিং। এ মৌসুমে শেখ জামালের জার্সিতে এটি দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। আগেরটি স্বাধীনতা কাপে করেছিলেন ওয়েডসন। ফেডারেশন কাপের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের স্বপ্ন দেখা দলটির আক্রমণের তিন বিদেশি অস্ত্রের কাছে হ্যাটট্রিকের স্বাদটা বেশ পরিচিতই। ল্যান্ডিং বাংলাদেশে তিন বছরের ক্যারিয়ারে চারটি হ্যাটট্রিক করেছেন। শেষটি শেখ জামালের জার্সিতেই, গত লিগে ব্রাদার্সের বিপক্ষে।
এ কারণেই কিনা কাল ম্যাচের পর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে ‘এ আর এমন কী’ গয়ংগচ্ছ ভাব দেখালেন ল্যান্ডিং। গত লিগে ১৭ গোল করে ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। এবার তাঁর চোখ নিশ্চয়ই শীর্ষস্থানে। তবে তাঁর চোখে দলের সমন্বয়ের ঘাটতি ধরা পড়ছে, ‘তিনটি গোল করলাম বটে, কিন্তু মাঝমাঠ আর ফরোয়ার্ডদের মধ্যে সমন্বয় ঠিকঠাক হচ্ছে না আমাদের।’
সমন্বয় হলে বারিধারার জালে আরও গোল ঢোকাত জামাল। তার ওপর তো তাদের আক্রমণের আরেক নেতা এমেকা ডার্লিংটন অসুস্থতার কারণে নেই। তাঁকে ছাড়াই বারিধারাকে গুঁড়িয়ে দিতে এতটুকু সমস্যা হয়নি। অথচ এই বারিধারার সঙ্গে স্বাধীনতা কাপে শেখ জামাল জিতেছে ঘাম ঝরিয়ে, আত্মঘাতী গোলে (১-০)।
শেখ জামালকে তৃপ্তির জয় এনে দিতে ল্যান্ডিং গোল তিনটি করলেন ২৪, ৪৭ ও ৬৩ মিনিটে। তৃতীয় গোলটি বেশি দৃষ্টিকাড়া। ওয়েডসনের বাড়ানো বল চকিতে গোলরক্ষককে দেখে জালে পাঠান। ৩০ মিনিটে দু-তিনজনকে কাটিয়ে দারুণ গোল করলেন ওয়েডসন। ৫৫ মিনিটে এনামুল ও ৯০ মিনিটে গোলের খাতায় নাম তোলেন ডিফেন্ডার ইয়াছিন। বারিধারার পক্ষে গোল করেছেন সবুজ (পেনাল্টি থেকে) ও রোহিত।
আজকের খেলা
রহমতগঞ্জ-বিজেএমসি বিকেল ৪টা, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম
আরামবাগ-ফেনী সকার সন্ধ্যা ৭-৩০ মি., বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম