জিততে ঘাম ছুটে গেল আবাহনীর

বারিধারাকে হতাশ করে জয় আবাহনীর।ছবি: প্রথম আলো

ডিফেন্ডার না হয়ে ফরোয়ার্ড হলেই বুঝি ভালো করতেন মাহমুদ সায়েদ! আজ যেভাবে বাইসাইকেল কিকটি নিয়েছিলেন, তা দেখে এ কথা মনে হতে বাধ্য। এতেও যদি ভাবনাটি পোক্ত না হয়, তাতে দক্ষ স্ট্রাইকারের মতো গোল করার দৃশ্যটিও বারবার মনে করা যেতে পারে। এ ছাড়া আবাহনী লিমিটেডের দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে থেকে বুটের সোলের কাজ দেখিয়ে বল বের করে নিয়ে দূরপাল্লার যে শটটি নিয়েছিলেন উত্তর বারিধারার এই সেন্টারব্যাক, তা এককথায় অসাধারণ।

মাহমুদ সায়েদের কল্যাণেই ম্যাচের শেষের দিকে আবাহনীকে চেপে ধরেছিল উত্তর বারিধারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২–১ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ৪–১ গোলের বড় ব্যবধানে হারের ক্ষত এখনো শুকানোর কথা নয় মারিও লেমোসের দলের। এর মধ্যে আজ তুলনামূলক দুর্বল বারিধারার বিপক্ষে জিততে কষ্ট করতে হলো আবাহনীকে। ২–১ গোলের জয়ের ম্যাচে আকাশি–নীলরা দুটি গোলই উপহার পেয়েছে। একটি গোল আত্মঘাতী ও অন্যটি পেনাল্টি।

আজ প্রতি মুহূর্তে ধুলা উড়েছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।
ছবি: প্রথম আলো

২৬ মিনিটে স্পটকিক থেকে আবাহনীকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান ফ্রান্সিসকো তোরেস। বক্সের মধ্যে উইঙ্গার জুয়েল রানাকে বারিধারা লেফটব্যাক মোহাম্মদ সোহেল ফাউল করলে পেনাল্টি পায় আবাহনী। স্পটকিক থেকে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি তোরেস। এরপর আরও দুটি গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন ব্রাজিলিয়ান এই স্ট্রাইকার।

৫৫ মিনিটে আত্মঘাতী গোলটি পায় আবাহনী। বক্সের মধ্যে জুয়েল রানার উদ্দেশে বাড়ানো কেরভিন্স বেলফোর্টের পাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে পোস্টে ঢুকিয়ে দেন বারিধারার উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার সাইদোস্তন ফজিলভ। দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে গোল ধরে রাখার লক্ষ্য মিডফিল্ডার সোহেল রানার বদলি হিসেবে নামানো হয় ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরীকে।

আজও গোল করেছেন তোরেস (বাঁয়ে)।
ছবি: প্রথম আলো

অন্যদিকে এ সুযোগে মাঝমাঠ চলে আসে বারিধারার দখলে। ম্যাচে ফেরার জন্য ভয়ডরহীন ফুটবল খেলতে শুরু করে তারা। তাদের মিসরীয় সেন্টারব্যাক মাহমুদ রক্ষণভাগ ছেড়ে ওপরে উঠে আসেন। ৮৩ মিনিটে দুর্দান্ত একটি বাইসাইকেল কিকও নিয়েছিলেন। আবাহনী অধিনায়ক ও গোলরক্ষক শহিদুল ডান দিকে ঝাঁপিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা করেছেন দলকে।

সেই যাত্রায় গোল না পেলেও ৯০ মিনিটে ব্যবধান কমিয়েছেন সে মাহমুদই। জিটু মিয়ার ক্রসে গোলমুখ থেকে টোকা দিয়ে ঠান্ডা মাথায় দক্ষ স্ট্রাইকারের মতো গোলটি করেন এই ডিফেন্ডার। শেষ দিকে আবাহনীর ড্রয়ের শঙ্কা পেয়ে বসলে ফরোয়ার্ড কেরভিন্স বেলফোর্টকে উঠিয়ে নামানো হয় ডিফেন্ডার মামুন মিয়াকে। শেষ পর্যন্ত জিতেই প্রথম পর্ব শেষ করেছে আবাহনী।

এই জয়ে ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম পর্ব শেষ করল বর্তমান লিগ রানার্সআপরা। এখন পর্যন্ত টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে তাদের অবস্থান। শীর্ষে থাকা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরার পয়েন্ট ৩৪। অর্থাৎ বসুন্ধরার চেয়ে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে লিগের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করতে হবে আবাহনীকে। ৯ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে বারিধারা।