জিদানদের কাজ জেতা, সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা নয়

বার্সেলোনার বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান।ছবি: রয়টার্স

এল ক্লাসিকোর আগে কত সমালোচনাই না হয়েছে জিনেদিন জিদানের। খেলোয়াড়দের তো রীতিমতো ধুয়ে দিচ্ছিলেন সমালোচকেরা। ক্লাবের সমর্থক থেকে শুরু করে সাবেক ফুটবলার, ফুটবল পণ্ডিতেরা চারদিক থেকে ছুড়ে মেরেছেন তীক্ষ্ণ কথার বাণ। কেউ কেউ তো সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে জিদানের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন! লিগে কাদিজের কাছে হার; চ্যাম্পিয়নস লিগে শাখতার দোনেৎস্কের কাছে অপদস্থ হওয়া—রিয়াল ছিল আত্মবিশ্বাসের তলানিতে। কিন্তু কাল বার্সেলোনাকে তাদের মাঠেই ৩-১ গোলে হারিয়ে পাল্টে গেছে সবকিছুই।

ম্যাচের আগে সমালোচকদের কিছু কথার জবাব দিয়েছিলেন জিদান। সেটা অবশ্য কঠিন কিছু ছিল না। শুধু বলেছিলেন, যে যতই সমালোচনা করুক না কেন তিনি তাঁর খেলোয়াড়দের পাশেই আছেন। মাঠের লড়াইটা তো খেলোয়াড়েরাই করেন! সবাই ভেবেছিল, এমন চাপের মুখে থেকেও ক্লাসিকোর মতো একটি ম্যাচ জয়ের পর নিশ্চয়ই সমালোচকের ধুয়ে দেবেন জিদান। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রসঙ্গ উঠেওছিল।

কিন্তু জিদান ছিলেন খুব শান্ত। সমালোচকদের উদ্দেশ করে কিছু না বলেও অনেক কিছু বলে দিয়েছেন ফরাসি কোচ। রিয়ালের সাবেক তারকা আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, এই সব সমালোচকদের তিনি কোনো পাত্তাই দেন না। একটা-দুইটা ম্যাচে দল খারাপ করলেই যাঁরা কোচ আর খেলোয়াড়দের সমালোচনা করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তাঁদের সমালোচনা কিছু আসে-যায় না! ন্যু ক্যাম্পে ৩-১ গোলে জয়ের পর জিদান বলেছেন, ‘সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা আমাদের কাজ নয়। আমরা এর জন্য মাঠে নামি না।’

লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ—টানা দুটি ম্যাচ হারলেও চলতি মৌসুমের শুরুতে দলের পারফরম্যান্স খুশিই জিদান। লিগে ছয় ম্যাচের দুটিতে জিতেছে তাঁর দল। গতকাল বার্সার বিপক্ষে জয়ের পর সেই সন্তুষ্টি তিনি লুকাননি, ‘আমরা আমাদের কাজ করি। নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখি। দলের কঠিন সময়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েই সবকিছু করি। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে সন্তুষ্ট।’ বার্সার বিপক্ষে জয় নিয়ে জিদান বলেছেন, ‘রক্ষণটা আমরা খুব ভালোভাবে করতে পেরেছি। বার্সেলোনার মতো একটি দলের বিপক্ষে আমরা দু-তিনবার ফাঁক খুঁজে পেয়েছি। আর শেষ দিকে দল হিসেবে ভালো একটি ম্যাচ খেলতে চেয়েছি।’

জিদান সমালোচনার জবাব দিতে চান না।
ছবি: রয়টার্স

ফেদেরিকো ভালভার্দের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। নিজেদের মাঠে বার্সেলোনা সমতায় ফেরে আনসু ফাতির গোলে। তবে পেনাল্টি থেকে গোল করে রিয়ালকে আবার এগিয়ে দেন অধিনায়ক সের্হিও রামোস। শেষ দিকে বার্সার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন বদলি হিসেবে নামা লুকা মদরিচ। পেনাল্টিটি রামোস নিজেই আদায় করে নিয়েছিলেন। এটা ঠিক যে বার্সার ক্লেমো লংলে বক্সের মধ্যে রামোসের জার্সি ধরে হালকা টান দিয়েছিলেন, তবে এর জন্য রামোস যেভাবে মাঠে পড়ে গেছেন সেটাকে অভিনয় বলছেন অনেকেই।

টানা দুই ম্যাচ হেরে আসলেও ক্লাসিকোতে অসাধারণ খেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
ছবি: রয়টার্স

ভিএআর এটিকে পেনাল্টি দিয়েছে। তবে এটা নিয়ে বিতর্ক তুলেছে অনেকেই। তা উঠতে পারে, রামোস পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি। এ নিয়ে রিয়াল ও স্পেনের হয়ে সর্বশেষ ২৫টি পেনাল্টির সব কটিতেই গোল করলেন। পেনাল্টির বিতর্ক নিয়ে কিছু বলেননি জিদানও। ক্লাসিকো জয়ের আনন্দে ভাসছেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ, ‘খুব ভালো খেলেছি আমরা। খেলোয়াড়দের নিয়ে আমি খুশি। গত কয়েক দিন সমালোচকেরা এত কিছু বলার পরও আমরা ভালো খেলেছি। আমি দলের খেলায় সন্তুষ্ট।’