জুয়েলের জোড়া গোলে পুলিশের হাসি

জোড়া গোল করেছেন জুয়েল।ছবি: প্রথম আলো

ম্যাচ শেষে সতীর্থদের অনেকে এগিয়ে এলেন মোহাম্মদ জুয়েলের দিকে। কেউ হাত বাড়িয়ে দিলেন। কেউ কাঁধে রাখলেন হাত। উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ড্র-ই যখন নিয়তি বলে ধরে নিয়েছে অনেকে, তখন জুয়েলের অসাধারণ গোলে পুরো ৩ পয়েন্ট পেয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ পুলিশ ২-১ গোলে হারিয়েছে উত্তর বারিধারাকে। জয়ী দলের দুটি গোলই করেছেন তরুণ ফরোয়ার্ড জুয়েল। পেনাল্টি থেকে বারিধারার একমাত্র গোলটি উজবেক ডিফেন্ডার সাইদস্তন ফজিলভের।

ভিন্ন ঘরানার চুলের স্টাইলের জন্য অনেক দূর থেকে সবার মধ্যে আলাদা করে চিনে নেওয়া যায় জুয়েলকে। ম্যাচেও আজ যেভাবে খেলেছেন, আলো কেড়েছেন সবার। লিগে প্রথম পর্বে একটিমাত্র গোল করেছেন জুয়েল। কিন্তু আজ পেয়েছেন দুটি গোল। আজ দল যখন গোলের খোঁজে হন্যে হয়ে ফিরছে, তখন ত্রাতা হয়ে এগিয়ে এলেন জুয়েল।

জুয়েলকে নিয়ে উল্লাস সতীর্থদের।
ছবি: প্রথম আলো

দ্বিতীয় লেগে পুলিশ প্রথম ম্যাচেই আবাহনীকে রুখে দিয়েছিল ২-২ গোলে ড্র করে। এরপর বসুন্ধরা কিংসের কাছে ২-০ গোলে হারলেও দারুণ লড়াই করেছিল। কিন্তু বারিধারার বিপক্ষে পুলিশের সেই আক্রমণের ধারটা শুরুতে যেন একটু কমই দেখা গেল।

গত ম্যাচের পর বারিধারার কোচ মাহবুব আলম মানিক একাদশে ৪টি পরিবর্তন আনেন। কিন্তু পুলিশের কোচ পাকির আলী শুধু ডিফেন্ডার জয়ন্ত কুমারের বদলে জালাল মিয়াকে একাদশে ঢোকান। পুলিশের আক্রমণভাগে আবাহনীর বিপক্ষে জোড়া গোল করে চমকে দেওয়া ক্রিস্টিয়ানো কোয়াকু, মোহাম্মদ স্বাধীন, জমির উদ্দিন ও জুয়েল।

ম্যাচের ১৪ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত পুলিশ। কিন্তু বারিধারার গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে একা পেয়েও বল মারলেন পোস্টে! গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যাওয়ার পর বারিধারাই বরং আক্রমণের ধার বাড়িয়েছে। আর ৬১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে বারিধারার এগিয়ে যাওয়াটা ছিল সেই আক্রমণেরই ফল।

শেষ মুহূর্তে গোল করে বারিধারাকে হারিয়ে দিলেন জুয়েল।
ছবি: প্রথম আলো

বারিধারার মিসরের ফরোয়ার্ড মোস্তফা আবদুল খালেকের থ্রু পাস ধরে বল নিয়ে বক্সে ঢোকেন সুমন রেজা। কিন্তু সুমনকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন পুলিশের ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল। এরপর পেনাল্টি থেকে গোল করেন ফজিলভ।

গোল খেয়ে হুঁশ ফেরে পুলিশের। এরপর ৭১ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরান জুয়েল। ডান প্রান্ত থেকে ক্রিস্টিয়ানো কোয়াকুর ক্রস, জুয়েল দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে করেন ১-১। বারিধারার আক্রমণের মূল অস্ত্র মোস্তফা এরপর স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচে আক্রমণের গতিও কমে যায় বারিধারার।

ম্যাচের ৭৯ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারত পুলিশ। কিন্তু তাদের আইভরিকোস্টের মিডফিল্ডার ফ্রেদরিক পুদার হেড দারুণ দক্ষতায় ফেরান বারিধারার গোলরক্ষক মিতুল। এরপর ৮৭ মিনিটে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ম্যাচে নাটকীয়ভাবে গোল করেন জুয়েল। বক্সের বাইরে থেকে মিডফিল্ডার মুরোলিমঝন আখমেদভের বাড়িয়ে দেওয়া বলটা ফ্লিকে যেভাবে জালে জড়ালেন জুয়েল, তা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলেন বারিধারার গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

লিগে এটি পুলিশের চতুর্থ জয়। ১৫ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে আটে উঠে এল পুলিশ। ১৪ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম স্থানে বারিধারা।