জেরার্ডের ঘরে ফেরা
‘মনে হচ্ছে যেন বৃত্তপূরণ হচ্ছে—যেখানে সবকিছু শুরু হয়েছিল, সেখানেই আবার ফিরে আসা!’
কথাগুলো বলার সময় ক্ষণিকের জন্য কি ফেলে আসা ২৭টি বছরের স্মৃতির ভেলায় ভাসছিলেন স্টিভেন জেরার্ড? নয় বছর বয়সে লিভারপুলে এসেছিলেন, সপ্তাহে দুই দিন অনুশীলন হতো রাতে। এরপর একে একে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, ক্লাবের জার্সিতে অভিষেক, অধিনায়কত্ব...সেই পথ ধরে ক্লাবের কিংবদন্তির মর্যাদা। উপহার দিলেন মন রাঙানো অনেক মুহূর্ত। ক্লাব তো নয়, বলতে গেলে তাঁর ‘ঘর’ হয়ে গিয়েছিল লিভারপুল!
বছর দুয়েকের বিরতির পর সেই ‘ঘরে’ আবার ফিরলেন জেরার্ড। তবে খেলোয়াড় নয়, ৩৫ বছর বয়সী সাবেক মিডফিল্ডার এবার লিভারপুলে ফিরেছেন একাডেমির কোচ হয়ে। দায়িত্ব—আগামী দিনের জেরার্ডদের খুঁজে বের করা।
গত নভেম্বরে ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পরই শুরু হয়ে যায় ‘স্টিভি জি’র লিভারপুলে ফেরার গুঞ্জন। মাঝে তৃতীয় বিভাগের দল মিলটন কেইনস ডনস থেকে কোচিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন, খেলা চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব এসেছে ইউরোপের কয়েকটি ক্লাব থেকে। কিন্তু জেরার্ডের মন বাঁধা ছিল লিভারপুলেই। গত পরশু ক্লাবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় পূরণ হলো তাঁর ইচ্ছা।
আপাতত লিভারপুলের একাডেমি কার্কবির পরিচালক অ্যালেক্স ইংলেথর্পের সঙ্গে কাজ করবেন জেরার্ড। অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-২৩ দল দুটির দিকেই দেবেন বেশি মনোযোগ। পাশাপাশি ‘পড়ালেখা’ও চালিয়ে যাবেন। একদিন তো লিভারপুলের মূল দলের কোচ হতে হবে! সেই লক্ষ্যে সাবেক ইংলিশ মিডফিল্ডার উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্স পেতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
একাডেমি পরিচালক ইংলেথর্প পরশু ঘোষণা দেওয়ার সময় বললেন, জেরার্ডের ‘হৃদয় ও মস্তিষ্কজুড়ে ছিল’ ফেরার ব্যাপারটি। জেরার্ড নিজেই তো জানিয়ে দিয়েছেন এটি, ‘এই ক্লাবটা আমার কাছে কতটা মূল্যবান, সেটি নতুন করে জানানোর কিছু নেই। যখন বুঝলাম এখানে ফেরা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তখন থেকে চাচ্ছিলাম কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে আসতে, যাতে ক্লাবকে সাহায্য করতে পারি।’
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এলএ গ্যালাক্সিতে যাওয়ার আগে ১৭ বছরে লিভারপুলে জিতেছেন ২০০৫ সালের সেই চ্যাম্পিয়নস লিগ, এফএ কাপ, লিগ কাপ, উয়েফা কাপও। জেতা হয়নি শুধু লিগটাই।
কোনো একদিন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে আক্ষেপটা ঘুচিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন নিশ্চয়ই দেখছেন লিভারপুলের কিংবদন্তি অধিনায়ক। সূত্র: ডেইলি মেইল।
লিভারপুলের জেরার্ড
ম্যাচ: ৭১০ গোল: ১৮৬
শিরোপা
চ্যাম্পিয়নস লিগ (২০০৫), উয়েফা কাপ (২০০১), উয়েফা সুপার কাপ (২০০১), এফএ কাপ (২০০১, ২০০৬), লিগ কাপ (২০০১, ২০০৩, ২০১২)