জয়েই ‘শিক্ষাসফর’ শুরু নেপালে

কিরগিজস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়েই নেপালে তিন জাতি টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ।ছবি: সংগৃহীত

নেপালের তিন জাতি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। আজ সন্ধ্যায় কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে কিরগিজস্তান অলিম্পিক দলকে ১–০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ গোলটি পেয়েছে আত্মঘাতী।
‘কোনো টুর্নামেন্ট নয়। কাঠমান্ডুতে আমরা দুটি ম্যাচ খেলতে এসেছি’—আজ সকালে টিম হোটেলেও এই প্রতিবেদককে কথাটি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন জেমি ডে। বাংলাদেশ কোচের কাছে এই টুর্নামেন্ট একটি শিক্ষাসফর। অর্জনের ভান্ডারে যা যোগ হবে, তা কাজে লাগাতে হবে জুনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের বাকি তিন ম্যাচে।

সেই শিক্ষাসফরের শুরুটা হলো জয় দিয়ে। এর সঙ্গে কোচ নিয়েছেন খেলোয়াড়দের পরীক্ষাও। তাই বলে দল নিয়ে এতটা পরীক্ষা করবেন জেমি, তা ভাবা যায়নি। একাদশে নতুন তিন মুখের দুজনই ডিফেন্ডার। একজন লেফটব্যাক রিমন হোসেন ও অন্যজন সেন্টারব্যাক হাবীবুর রহমান। আনকোরা এক প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ওপর ভরসা রেখেছিলেন তিনি। যতটুকু খেলেছেন, তাতে প্রথম ম্যাচে পাস মার্ক পেয়ে তাঁদের উতরে যাওয়ারই কথা। তবে অভিষিক্তদের মধ্যে স্ট্রাইকার মেহেদী হাসানের পারফরম্যান্স এগিয়ে রাখতে হবে। খেলা দেখে কে বলবে, এই ছেলেটা আজ জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম ম্যাচ খেলছেন!

নেপালে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে আত্মঘাতী গোলে।
ছবি: সংগৃহীত

৪–২–৩–১ ফরমেশনে ভবিষ্যতে জেমির তুরুপের তাস হতে পারেন মেহেদী। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হওয়ার আগপর্যন্ত জায়গা অদল–বদল করে খেললেন এই তরুণ। কখনো মূল স্ট্রাইকার, আবার কখনো মতিন মিয়াকে সামনে দিয়ে কিছুটা ‘১০ নাম্বার’ ভঙ্গিতে। জুটি হিসেবে যতক্ষণ খেলেছেন, কিরগিজ রক্ষণভাগে ত্রাস ছড়িয়েছেন তাঁরা।

বাংলাদেশের আত্মঘাতী গোলে এই জুটির অবদান। স্বভাবসুলভ নিচ থেকে আক্রমণ তৈরি করতে চেয়েছিল কিরগিজস্তান। নিজেদের অ্যাটাকিং থার্ডে প্রতিপক্ষকে মতিন মিয়া ট্যাকল করলে বল দখলমুক্ত হয়ে মেহেদীর পায়ে পড়ে। রাইটউইঙ্গার সাদ উদ্দিনকে পাস দিলে তিনি বক্সে প্রবেশ করে ক্রস করেন। স্লাইডিং ট্যাকলে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে জালে জড়িয়ে কিরগিজস্তানের রাইটব্যাক কুমারবাজ উলু।

নেপালে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ দল।
ছবি: সংগৃহীত

গোলটা না হলে বোঝা যেত না, নেপালের দর্শকেরা কাদের সমর্থন করছেন! হাজারখানেক দর্শক হাততালি দিয়েই বরণ করে নিল আত্মঘাতী গোলটি। কিন্তু এই আনন্দ মিলিয়ে যেতে সময় লাগত মাত্র এক মিনিট। দুর্দান্ত সেভ করে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান। তাপেয়েভ তেমির শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন তিনি।

শুধু গোল নয়, ততক্ষণে বাংলাদেশ কোচ বুঝে যান প্রতিপক্ষের চেয়ে শক্তিতে এগিয়ে তাঁর দল। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার খেলার কথা ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে জামালকে মাঠে পাঠিয়ে ম্যাচের লাগামটা ধরলেন শক্ত করে। অভিষিক্ত হাবীবুরকে তুলে নামানো হয় অভিজ্ঞ সেন্টারব্যাক রিয়াদুল হাসানকে। অহেতুক বল পায়ে রাখতে গিয়ে খাবি খাওয়া বিপলুকে তুলে নামানো হলো লিগের অন্যতম সেরা পারফরমার রাকিব হোসেনকে। মাঝমাঠের শক্তি বাড়াতে অভিষিক্ত স্ট্রাইকার মেহেদীর জায়গায় নামলেন মিডফিল্ডার মানিক মোল্লাও।

দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ জমাট রেখে ম্যাচটা বের করে নেওয়ার কৌশল নেন জেমি। তাতে দু–একবার গোলের সুযোগও তৈরি হয়েছিল। সেটি না পারলেও গোলপোস্ট অক্ষত রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারাটাই বড় কথা। ২৭ মার্চ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল জাতীয় দল।