ট্রিপল সেঞ্চুরি করবেন নয়্যার

এখনো বায়ার্ন মিউনিখের এক নম্বর গোলকিপার ম্যানুয়েল নয়্যার।ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি একটি ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ করেছেন ম্যানুয়েল নয়্যার। সেই ডাবল সেঞ্চুরিতে ভেঙে দিয়েছেন সেপ মায়ারের একটি রেকর্ডও। যাঁর রেকর্ড ভেঙেছেন, বায়ার্ন মিউনিখের কিংবদন্তি সেই গোলকিপার মায়ারের বিশ্বাস ডাবল সেঞ্চুরিটা নয়্যার ট্রিপলে রূপ দিতে পারবেন!

নয়্যার ক্রিকেট খেলেন না, তাঁর যে ডাবল বা ট্রিপল সেঞ্চুরি নিয়ে কথা হচ্ছে তা ক্রিকেটেরও নয়। নয়্যার সম্প্রতি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন ফুটবলেই! আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে অক্ষত রেখেছিলেন বায়ার্ন মিউনিখের জাল। এ নিয়ে বায়ার্নের হয়ে ২০০ ম্যাচে গোল না খাওয়ার কীর্তি গড়েছেন নয়্যার। এর আগে বায়ার্নের কোনো গোলকিপারের এত বেশি ম্যাচে গোল না খাওয়ার কীর্তি নেই। নয়্যারের আগে রেকর্ডটি ছিল মায়ারের। ১৯৯টি ম্যাচে বায়ার্নের জাল অক্ষত রেখেছিলেন তিনি।

বায়ার্নের গোলবারের নিচে অতন্দ্র প্রহরী ম্যানুয়েল নয়্যার।
ছবি: রয়টার্স

১৯৬২ থেকে ১৯৮০—১৮ বছরে ১৯৯টি ম্যাচে বায়ার্নের জাল অক্ষত রাখার পথে ৬৫১টি ম্যাচ খেলেছেন মায়ার। নয়্যার তাঁকে ছাড়িয়ে যেতে খেলেছেন মাত্র ৩৯৪ ম্যাচ। মায়ার তাঁর ক্যারিয়ারের পুরোটা সময়ই শুধু বায়ার্নের হয়ে খেলেছেন। আর নয়্যার বায়ার্নের হয়ে খেলছেন ১০ বছর ধরে। বায়ার্নের আগে ৩৪ বছর বয়সী গোলকিপার খেলেছেন শালকে জিরো ফোরের হয়ে।

বায়ার্নে শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছেন নয়্যার। মাঝে অবশ্য কিছুদিনের জন্য ছন্দটা হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু এখন আবার নিজের সেরা রূপেই দেখা দিয়েছেন জার্মান গোলকিপার। এসব বিবেচনা করেই হয়তো মায়ার বলেছেন—একদিন বায়ার্নের হয়ে ৩০০ ম্যাচে গোল না খাওয়ার কীর্তি গড়বেন গত মৌসুমে উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতা নয়্যার। স্পোর্ট ওয়ানে মায়ার বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত যে সে ৩০০ ম্যাচেও গোল না খাওয়ার কীর্তি গড়তে পারবে।’

এটা কি সত্যি সম্ভব? ২০০ ম্যাচ বায়ার্নের জাল অক্ষত রাখতে নয়্যারকে খেলতে হয়েছে ৩৯৪ ম্যাচ। হিসাব অনুযায়ী প্রতি ১০০ ম্যাচ জাল অক্ষত রাখতে তিনি খেলেছেন ১৯৭টি করে ম্যাচ! বায়ার্নের কোনো খেলোয়াড় গড়ে প্রতি মৌসুমে ৫০ থেকে ৫৫টি করে ম্যাচ খেলেন। এ হিসাবে ২০০টির মতো ম্যাচ খেলতে আরও কমপক্ষে চার মৌসুম খেলতে হবে নয়্যারকে। কিন্তু ৩৪ বছর বয়সী গোলকিপার কি তত দিন এ রকম ছন্দে থাকবেন?

মায়ার বলেছেন, ‘আমি মনে করি সে ৩৯ বছর বয়সেও এ রকমই ছন্দে থাকবে আর অসাধারণ খেলতে পারবে।’ মায়ার তো বিশ্বাস থেকে একটা কথা বললেন। এটা ঠিক হবে কি না তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ফুটবলপ্রেমীদের। তবে আপাতত নয়্যারের এত ক্লিন শিটের পুরো কৃতিত্ব তাঁকে একা দিতে রাজি নন মায়ার, ‘এত ম্যাচে বায়ার্নের জাল অক্ষত রাখার ক্ষেত্রে ধন্যবাদ একা নয়্যারই পাবে না। রক্ষণভাগকে এর ৫০ শতাংশ কৃতিত্ব দিতে হবে।’

গত মৌসুমে অসাধারণ খেলে উয়েফার বর্ষসেরা পুরস্কার জিতেছেন ম্যানুয়েল নয়্যার।
ফাইল ছবি রয়টার্স

তবে রক্ষণের প্রশংসা করতে গিয়ে মায়ার যা বলেছেন সেটা আবার নয়্যারেরই পক্ষে যায়। স্পোর্ট ওয়ানকে তিনি বলেছেন, ‘ডিফেন্ডাররা যখন জানে যে তাদের গোলবারে একজন ভালো গোলকিপার আছে, তারা এমনিতেই ভালো খেলে। আর গোলবারের নিচে বোঝার মতো কেউ যদি থাকে তাহলে ডিফেন্ডারদের ওপরেও চাপ তৈরি হয়। নয়্যারের ক্ষেত্রে তার দলের ডিফেন্ডাররা জানে সে বিশ্ব মানের। রক্ষণের ফাঁক গলে বল তার দিকে গেলে অসুবিধা নেই।’

তবে নয়্যারের একটু ছন্দপতন ঘটলেই এখন থেকে দলের বাইরে ছিটকে পড়বেন। কারণ এরই মধ্যে বায়ার্ন যে এই মুহূর্তে গোলবারের নিচে জার্মানির সবচেয়ে ভালো তরুণ প্রতিভা আলেক্সান্ডার নুবেলকে দলে টেনেছে।