থ্রো-ইনের বদলে কিক-ইন দেখা যাবে ফুটবলে

থ্রো-ইন কি হারিয়ে যাবে?ছবি: রয়টার্স

আর্সেন ওয়েঙ্গারের ওপর রাগ হতেই পারে ফুটবলারদের। মাঝে দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের চেষ্টা করেছে ফিফা। এর পেছনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সাবেক আর্সেনাল কোচের। এবার ফুটবলারদের আরেকটি বিষয়ে বাগড়া দিতে যাচ্ছেন ওয়েঙ্গার। ফুটবল মাঠে গোলকিপার ছাড়া বাকিদের বৈধভাবে হাত দিয়ে বল ধরার উপায় নেই। শুধু থ্রো-ইনের সময়টায় একটু হাতে বলের স্পর্শ পেতেন ফুটবলাররা। এবার সেটাও কেড়ে নিচ্ছেন ওয়েঙ্গার।

থ্রো-ইনের বদলে ফুটবলে কিক-ইন চালু হতে পারে। অন্তত ফিফা সে পথেই এগোতে চাইছে। ফুটবলের আইনপ্রণেতারা এ প্রক্রিয়া পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার অনুমতি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন
থ্রো-ইনে সময় নষ্ট হয় বেশি
ছবি: টুইটার

সত্যি বলতে, ফুটবলারদের বল হাতে ধরা নিয়ে ওয়েঙ্গারের আপত্তি নেই। তাঁর আপত্তি থ্রো-ইন করতে গিয়ে ফুটবলারদের সময় নষ্ট করায়। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের (আইএফএবি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) থ্রো-ইনের বদলে কিক-ইনের মাধ্যমে খেলা দ্রুত শুরু করা আসলেই সম্ভব কি না, সেটা পরীক্ষামূলকভাবে দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নেদারল্যান্ডসের দ্বিতীয় বিভাগ আগ্রহ দেখিয়েছে। সেখানেই দেখা যাবে কিক-ইন।

ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার ফুটবল উন্নয়নের শীর্ষ পদে আছে ওয়েঙ্গার। বিশ্বজুড়ে ফুটবলকে আরও কীভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, খেলার উন্নয়ন কীভাবে করা যায়, এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করার দায়িত্ব তাঁর। সে উদ্দেশ্যেই গত বছর থ্রো-ইন নিয়ে প্রথমে আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। তখন বলেছিলেন থ্রো-ইনের মাধ্যমে খেলার সময় নষ্ট হয়। এবং কিছু ক্ষেত্রে থ্রো-ইন পাওয়া দলের খেলোয়াড় মাঠে কম থাকায় প্রতিপক্ষ সুবিধা পায়।

ওয়েঙ্গার
ফাইল ছবি রয়টার্স

গত বছর এ ব্যাপারে যুক্তি দেখাতে গিয়ে ওয়েঙ্গার বলেছিলেন তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ জাগাতেই এমন কিছুর চিন্তা মাথায় এসেছে তাঁর, ‘এই মুহূর্তে দুটি জিনিসে সবচেয়ে বেশি সময় নষ্ট হয়। সেগুলো হলো থ্রো-ইন এবং ফ্রি কিক। আর গোল কিকের সময়ও হচ্ছে, কারণ এখন বক্সের মধ্য থেকে খেলা শুরু করা হয়। আমাদের লক্ষ্য হলো খেলাটাকে আরও আকর্ষণীয় করা এবং দ্রুতগতির বানানো। আর হয়তো থ্রো-ইনটা পা দিয়েই করা যায়। উদাহরণস্বরূপ ৫ সেকেন্ডের মধ্যেই করতে হবে, এমন।’

ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে নতুন নতুন নিয়ম আনার পক্ষে ইনফান্তিনো
ফাইল ছবি: এএফপি

আইএফএবি কাল পরীক্ষামূলকভাবে কিক-ইন শুরু করতে বলেছে। সে সঙ্গে খেলার ‘সময় হিসাব করার আরও গ্রহণযোগ্য উপায়’ও খুঁজতে চাইছে। সে উদ্দেশ্যে ‘স্টপ ক্লক’ প্রযুক্তিও চালু করার চিন্তা চলছে। হকি, রাগবি ও বাস্কেটবলে যেমন বল খেলার বাইরে গেলে খেলার ঘড়ি বন্ধ থাকে, ফুটবলেও সেট করার চিন্তা চলছে। ২০২১-২২ মৌসুমের একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা গেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৯০ মিনিটের খেলায় গড়ে ৫৫ মিনিট ৩ সেকেন্ড বল নিয়ে খেলা হয়েছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে এর চেয়ে ১ মিনিট বেশি খেলা হয়েছে। লা লিগায় হয়েছে শীর্ষ লিগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম।

এক বিবৃতিতে আইএফএবি বলেছে, ‘এ ছাড়া খেলার মাঝে রেফারির সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করা, খেলার সময় হিসেবের গ্রহণযোগ্য উপায় এবং কিক-ইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এজিএম ভালোভাবেই জানে, এ ব্যাপারগুলোতে এবং অন্য ট্রায়ালের জন্য অনুমতি দরকার এবং আইএফএবি ও ফিফা মিলে এই ট্রায়ালগুলো পর্যবেক্ষণ করবে।’