দাদা, বাবা, ছেলের যে ‘রাজবংশে’র বয়স ১০০০...

এই তিন ‘মালদিনি’ মিলে এসি মিলানের হয়ে খেললেন ১০০০ ম্যাচ!
সংগৃহীত ছবি

সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশের আলোচনায় বেশ কিছু নাম উঠে আসে। মালদিনি পরিবার সেখানে জায়গা পাবে কি?

আবদার? তা বলাই যায়। কিসের মধ্যে কী, তা-ও বলতে পারেন। ফুটবল ও রাজবংশ এক হয় নাকি! তাহলে পরশু জুভেন্টাসের বিপক্ষে দানিয়েল মালদিনিকে দেখে কথাটা মনে হয়েছিল কেন! সবার-ই যে মনে হয়েছে, তা নয়, কিন্তু এই তো বংশের রক্ত, যা পথ ভোলেনি তাঁর দাদার আমল থেকে; দানিয়েলকে দেখে দু-একজনের এমন লাগা অস্বাভাবিক কিছু না!

১৯ বছর বয়সী দানিয়েল এসি মিলানের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। পরশু মিলানের হয়ে ৬ নম্বর ম্যাচটা খেললেন। এই মিলান মালদিনি পরিবারের রাজপাট। দানিয়েলের বাবা পাওলোর গোটা ক্যারিয়ার কেটেছে মিলানে। ২৫টি বছর। হ্যাঁ, পাওলো মালদিনি; ফুটবল ইতিহাসের-ই অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। তাঁর বাবা সিজার মালদিনি ১২ বছর মিলানে কাটানোয় পথটা চিনে নিয়েছিলেন পাওলো। এখন সেই পথে তাঁর ছেলেও। তা, দাদা, বাবা ও ছেলে মিলে কতটা পথ পেছনে ফেললেন?

১০০০!

ফুটবলের পথে তো মাইল, কিলোমিটার ও সময়ের হিসাব বেকার। মোটা দাগে হয় গোল, নয় তো ম্যাচসংখ্যা। ইতালির শীর্ষস্থানীয় লিগ সিরি আ-তে এসি মিলানের হয়ে ওই সংখ্যা মালদিনি পরিবারের অনন্য এক অর্জন। দাদা, বাবা ও ছেলে মিলে সিরি আ-তে মিলানের হয়ে ১০০০ ম্যাচ! ডিফেন্ডার সিজার মালদিনির পাশে ৩৪৭ ম্যাচ, পাওলোর ৬৪৭ এবং দানিয়েলের ৬ ; অন্তত ফুটবলীয় ‘রাজবংশে’র গল্পে মালদিনি পরিবারের কথা না ওঠাটা তাই একরকম অন্যায়।

নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট বাকি থাকতে ডেভিড কালাব্রিয়ার বদলি হয়ে মাঠে নেমেছিলেন দানিয়েল। খুব বিশেষ ভালো খেলেননি কিন্তু তাতে ইতিহাস তো আর থেমে থাকে না। সিজার পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে মিলানের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। মালদিনি আশি, নব্বই ও একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশক, এখন মিলানের টেকনিক্যাল পরিচালক।

দাদা, বাবার পথ ধরে দানিয়েল মালদিনিও এসি মিলানের হয়ে খেলছেন।
সংগৃহীত ছবি

আশ্চর্যের বিষয় হলো, ইতালিয়ান সিরি ‘আ’-য় নিজেদের ইতিহাসে মিলান এ পর্যন্ত ২৯৮১ অফিশিয়াল ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ক্লাবের ইতিহাসে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় ধরে মালদিনি পরিবারের কারও না কারও গায়ে মিলানের জার্সি ছিল। ত্রিয়েস্তিনা ছেড়ে ১৯৮৪ সালে মিলানে যোগ দেন ২০১৬ সালে প্রয়াত সিজার। সান সিরোর ক্লাবটির হয়ে লিগ ও ইউরোপিয়ান কাপ জেতেন ইতালির সাবেক এ কোচ। তবে মিলানকে সিজার নিজের সেরা উপহারটি দিয়েছিলেন পরম্পরার মধ্য দিয়ে, পাওলো! ৭ বার লিগ ও ৫ বার চ্যাম্পিয়নস লিগসহ মিলানে আরও কত সব সাফল্য মালদিনি পরিবারের সেরা সন্তানের।

এখন দানিয়েলের সময়। মিলানে মালদিনিদের রাজপাটের বয়স (ম্যাচসংখ্যা) কোথায় গিয়ে ঠেকে, কে জানে!