দোষ চাপানোর ‘নন্দ ঘোষ’কে খুঁজে পেয়েছে বার্সা

বার্সেলোনার ফরাসি সেন্টারব্যাক ক্লেমঁ লংলেছবি: টুইটার

ভিডিওটা প্রকাশিত হয়েছে গতকাল। দেখা গেল, কাদিজের বিপক্ষে ম্যাচটার পর মাঠ ছাড়ছেন বার্সেলোনার ফরাসি সেন্টারব্যাক ক্লেমঁ লংলে, তাঁর দুই চোখ ছলছল করছে। কান্না যাতে কেউ না দেখতে পারে, এ জন্য হাত দিয়ে চোখমুখ ঢাকার একটা চেষ্টাও দেখা গেল তাঁর মধ্যে।

কারণ আর কিছুই নয়। সেদিন কাদিজের বিপক্ষে নিজেদের মাঠেই ১-১ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা। লিওনেল মেসির পেনাল্টি গোলে বার্সেলোনা প্রথমে এগিয়ে গেলেও একদম শেষ মূহূর্তে পাল্টা পেনাল্টিতে গোল খেয়ে ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বার্সেলোনাকে।

আর শেষ মুহূর্তে বার্সা যে পেনাল্টিটা হজম করল, সেটা এই লংলের ভুলেই। কাদিজ স্ট্রাইকার সোবরিনোকে বক্সে ফাউল করেন ক্লেমঁ লংলে। সেটিতে পাওয়া পেনাল্টি থেকে বলটাকে দারুণভাবে জালে জড়ান অ্যালেক্স ফার্নান্দেজ।

ব্যস, আর যায় কোথায়! তখন থেকেই লংলেকে নিয়ে এন্তার সমালোচনা চলছে বার্সেলোনা সমর্থকদের মধ্যে। সমালোচনা ছুঁয়ে গেছে লংলেকেও। বুঝছেন, বার্সার হয়ে খেলাটা কত কঠিন।

যে সমালোচনা সহ্য না করতে পেরে একে একে ক্লাব থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ভালভার্দে-সেতিয়েনের মতো কোচকে, সুয়ারেজ-ভিদাল-সেমেদো কিংবা ম্যাথিউদের মতো খেলোয়াড়দের।

বার্সা-ব্যর্থতার বলি যে ঘুরেফিরে লংলেকে বানানো হচ্ছে এখন, সেটা বেশ বুঝতে পেরেছেন জেরেমি ম্যাথিউ। হ্যাঁ, সেই ম্যাথিউ, যিনি একদিন ঠিক এভাবেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন কাতালান ক্লাবটি থেকে।

নিজের অবস্থার সঙ্গে স্বদেশি লংলের অবস্থার বেশ মিল খুঁজে পাচ্ছেন ম্যাথিউ।
ম্যাথিউর মনে হচ্ছে, ব্যর্থতার দায় দিতে দিতে লংলেকে মেরেই ফেলবে বার্সেলোনা! আরএসিওয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বার্সার সাবেক এই ফরাসি ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘বার্সেলোনায় আমার শেষ বছরটা অনেক কষ্টে কেটেছে।’

২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টারে জুভেন্টাসের সঙ্গে হেরেছিল বার্সেলোনা, প্রথম লেগে জুভেন্টাসের মাঠ তুরিনের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনা থেকে হেরে এসেছিল ৩-০ গোলে।

সে ম্যাচের পর ঠিক এভাবেই ম্যাথিউকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি, ‘আমাকে মনে করানো হয়েছিল, তুরিনে যে ম্যাচটা আমরা হেরে বসলাম, সেটা আমার দোষ। কিন্তু আমি বুঝতে পারি না, ফুটবল ১১ জনের খেলা, ম্যাচ হারলে শুধু একজনকে দোষ কেন দেওয়া হবে?’

বার্সেলোনায় সময়টা ভালো যাচ্ছে না লংলের
ছবি: টুইটার

নিজের শেষ দিনগুলোতে সতীর্থদের কাছ থেকে কোনো সমর্থনই পাননি ম্যাথিউ, ‘ড্রেসিংরুমে আমি একা হয়ে পড়েছিলাম। কেউ এসে একটু সহমর্মিতা জানায়নি। আমার কাছে এটা ফুটবল নয়। সবাই এখন লংলের পেছনে লেগেছে। ওকে মেরে ফেলছে। আমি জানি ওর এখন কেমন লাগছে। ওকে ইতিবাচক থাকতে হবে, এই অবস্থা কাটিয়ে ফিরতে হবে। ওকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।’