দ্বিতীয় বা তৃতীয় হতে বার্সেলোনায় খেলছেন না পিকে

দলের পারফরম্যান্সে হতাশ হলেও হাল ছাড়ছেন না পিকেছবি: রয়টার্স

এ মৌসুমে বার্সেলোনাকে পরীক্ষা দিতে হবে, সেটা জানা ছিল। ক্লাবের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়কে হারিয়েছে তারা, এমনটাই হওয়ার কথা। কিন্তু তাই বলে এমন বাজে শুরুর কথা হয়তো কেউই ভাবতেও পারেননি। লিগে সেভিয়ার সঙ্গে বড় এক পরীক্ষা সূচির জটিলতায় দেওয়া হয়নি তাদের। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেছে তারা। তবু লিগ শুরু হতে না হতেই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে যথাক্রমে ৭ ও ৫ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকাটা বেমানান দলটির জন্য।

টানা তিন ম্যাচে জয়হীন বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হারের পর লিগে গ্রানাদা ও কাদিজের সঙ্গে ড্র করেছে বার্সেলোনা। ৫ ম্যাচ শেষে ৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগে এখন সপ্তম বার্সেলোনা। অবশ্য রোনাল্ড কোমান ম্যাচের আগেই বলেছেন, এবার আর শিরোপা জেতার আশা নেই তাঁর। বরং লিগে ওপরের দিকে থাকতে পারাটাই বড় সাফল্য বলে বিবেচ্য হওয়া উচিত। যদিও জেরার্ড পিকে এভাবে হাল ছাড়তে রাজি নন। সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, বার্সেলোনা শিরোপার জন্য লড়াই করবে না, এটা মেনে নেওয়া যায় না।

বিপাকে আছেন কোমান
ছবি: রয়টার্স

গতকাল বার্সেলোনা আরও একবার হতাশ করেছে সমর্থকদের। যে পাসিং ফুটবলের জন্য বিখ্যাত এই ক্লাব, সে দলই এখন নিজেদের ডিএনএ ভুলে ক্রসনির্ভর খেলার চেষ্টা করছে। একের পর এক ক্রস করে গোল বের করার চেষ্টা করছে। ফল অবশ্য মিলছে না। ৫ ম্যাচে মাত্র ৮ গোল করেছে বার্সা। গত এক যুগে প্রথম ৫ ম্যাচে এত কম গোল করেনি তারা। এর মধ্যেই গতকাল ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং লাল কার্ড দেখেছেন। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে কোচ কোমানও দেখেছেন লাল কার্ড।

সবই হতাশার গল্প। কিন্তু পিকে হাল ছাড়ছেন না। কিংবা কোচের মতো এরই মধ্যে শিরোপা জেতার আশা ছেড়ে দিচ্ছেন না, ‘আমি দ্বিতীয় বা তৃতীয় হতে বার্সেলোনার জার্সি গায়ে দিই না। আমি এখানে শিরোপা জেতার জন্যই খেলি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এমন শুরুর পরও আমরা লিগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এই দল মানসিকভাবে ভালো অবস্থানে আছে, সবার মধ্যে উৎসাহ আছে। মাঝেমধ্যে এমন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমার মনে হচ্ছে, সমর্থকেরা আমাদের সঙ্গেই আছে। সবার জন্যই পরিস্থিতিটা জটিল হয়ে পড়েছে।’

লাল কার্ড দেখেছেন ডি ইয়ং
ছবি: রয়টার্স

মেসির সুবাদে গত এক যুগে ইতিহাসের সেরা সময় কাটিয়েছে বার্সেলোনা। তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ আর সাতটি লিগ জিতেছে দলটি। সাফল্যের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা সমর্থকদের বর্তমান পরিস্থিতিতে একটু ধৈর্য ধরতে বলছেন পিকে, ‘১২ বছর ধরে সেরাদের কাতারে ছিলাম, এখন আমাদের এক থাকতে হবে। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। এ ব্যাপারে কারও মনে সন্দেহ থাকা ঠিক নয়। এ অবস্থায় সমর্থকদের সাহায্য দরকার আমাদের। আমরা যদি বাজেভাবে শুরুও করি, সমর্থকদের আমাদের সাহায্য করতে দিন...সমর্থকেরা আমাদের সঙ্গে থাকাটা কত কাজে দেয়, কল্পনাও করতে পারবেন না।’

দলের সবাইকে এক হতে বলছেন পিকে
ছবি: রয়টার্স

সমর্থকদের সাহায্য তো গ্যালারি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপার। বার্সেলোনার সমস্যা যে অন্দরেও চলছে। ক্লাব সভাপতি ও কোচের মধ্যে দ্বন্দ্ব দিন দিন প্রকাশ্যে চলে আসছে। বার্সেলোনার দ্বিতীয় অধিনায়কের ধারণা, এখনই সময় একত্র হওয়ার, ‘এ ক্লাব বহুদিন ঢেউয়ের (সাফল্যের) চূড়ায় ছিল। এখন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যার সঙ্গে আমরা পরিচিত নই। অশান্ত এক সময় চলছে, সভাপতি বদলেছে, কোচের পরিবর্তন হয়েছে...মনের শান্তির জন্য আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চটাই দিতে হবে। সবাই জিততে চায়।’

এদিকে স্কোয়াড ভালো নেই বলে দলকে দিয়ে পাসিং ফুটবল খেলাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন কোমান। পিকে দলের সবাইকে ভালো খেলার আহ্বান জানাতে গিয়ে কোচকেও হালকা খোঁচা দিলেন, ‘নানাভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করা যায়। আমরা চাইলে অভিযোগ করতে পারি কিংবা সবাই একত্র হয়ে দলকে টানতে পারি। খেলোয়াড়েরা দলকে টানার জন্যই আছি। এখানে দুই পক্ষ খোঁজা ঠিক হবে না। আমরা সভাপতির সঙ্গে আছি, কোচের সঙ্গেও আছি। আমরা বাইরের আওয়াজ (সমালোচনা) থামাতে পারব না। এ নিয়ে ভাবতেও চাই না।’