নাটকও হলো, গোলও হলো

ম্যাচ শেষে আবেগাপ্লুত নেইমার। ছবি: রয়টার্স
ম্যাচ শেষে আবেগাপ্লুত নেইমার। ছবি: রয়টার্স
নেইমার গোল করেছেন, নাটকও করেছেন। পেনাল্টি আদায় করতে গিয়ে হাস্যকর দৃশ্যের জন্ম দিয়েছেন, আবার গোল করে সেটার প্রায়শ্চিত্ত করেছেন।


দুহাত দিয়ে মুখ ঢাকা। শরীরের কাঁপুনি দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কাঁদছেন। আবেগের যে রোলার কোস্টারে চড়েছেন, তাতে অমন কিছু অস্বাভাবিক নয়। পুরো ম্যাচে দৃষ্টি ছিল নেইমারের দিকে। কখনো তাকে ফাউল করা হচ্ছে, কখনো তিনি ডাইভ দিচ্ছেন। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে স্বস্তি এনে দেওয়া একটি গোলও করেছেন।

নেইমার বলেই কান্নাটা স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। ২০১৪ সালেই দেখা গেছে, এই ব্রাজিল দল কতটা আবেগী। জার্মানির কাছে ৭-১ ব্যবধানে হারে অতি আবেগই বড় ভূমিকা রেখেছিল। আর নেইমার তো চোট কাটিয়ে ফিরে আসার পর থেকেই শিরোনামে। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ফাউলের শিকার হয়ে, ডাইভ দিয়ে, মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে সময় কাটানোয় শিরোনামগুলোও হচ্ছিল নেতিবাচক।

আজ ম্যাচের ৯০ মিনিট পর্যন্তও শিরোনামগুলো পরিবর্তনের কোনো সুযোগ ছিল না। গত ম্যাচের চেয়ে অবশ্যই ভালো খেলেছেন। কিন্তু মাটিতে গড়াগড়ির দৃশ্য আজও ছিল। তবে গত ম্যাচে ১০ বার ফাউলের শিকার হলেও, এ ম্যাচে সে সংখ্যাটা কমে এসেছে চারে। নিজে চারবার ফাউল করেছেন, আবার ফাউল আদায় করতে ডাইভ দিয়েছেন চারবার। হলুদ কার্ডও দেখেছেন রেফারির সঙ্গে তর্ক করে।

ফাউলের শিকার হওয়ার ভান করছেন নেইমার। ছবি: রয়টার্স
ফাউলের শিকার হওয়ার ভান করছেন নেইমার। ছবি: রয়টার্স

ম্যাচে সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্তটি এসেছে ৭৮ মিনিটে, নেইমারের কল্যাণেই। ডি-বক্সে কোস্টারিকার ডিফেন্ডার গঞ্জালেজ তাঁকে ভালোভাবে স্পর্শও করেননি, অথচ ব্রাজিল তারকা এমনভাবে পড়ে গেলেন, যেন তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে! রেফারি সাদা চোখে ধরতে পারেননি এই অভিনয়। হল্যান্ডের রেফারি বিয়র্ন কাউপার্স পেনাল্টির বাঁশি বাজালেন। কোস্টারিকার খেলোয়াড়দের তীব্র প্রতিবাদে ভিএআরের সহায়তা নিলেন। রিপ্লেতে দেখা গেল, ভান করে পড়ে গেছেন নেইমার! অভিনয় আরকি! পেনাল্টিও সঙ্গে সঙ্গেই বাতিল।

ম্যাচটা যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে শেষ হলে নেইমারকে নিয়ে আজ হয়তো সমালোচনাই হতো শুধু। ৯৭ মিনিটে পেয়ে গেলেন স্বস্তির সেই গোল। ডগলাস কস্তার পাস থেকে অবশেষে কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করলেন। ম্যাচের ফলে হয়তো কোনো ভূমিকা রাখেনি এ গোল, কিন্তু নেইমারের জন্য এ গোল সত্যিই বিশেষ কিছু।